সিডনী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১


করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশ্ব নেতৃত্বের এক থাকা প্রয়োজন: জাতিসংঘ মহাসচিব


প্রকাশিত:
২ মে ২০২০ ২০:৪৭

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৪৮

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস

 

প্রভাত ফেরী: মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশ্ব নেতৃত্বের ঘাটতির সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি করোনা মোকাবিলায় বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোরে দরিদ্র দেশগুলোকে সহযোগিতা না করা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে গুতেরেস বলেছেন, যে কোনও সময়ের চেয়ে যখন ঐক্যের প্রয়োজন ছিল বেশি তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, এখানে নেতৃত্ব ও ক্ষমতার মধ্যে বিচ্ছিন্নতা বিরাজ করছে। আমরা তাৎপর্যপূর্ণ নেতৃত্ব দেখছি কিন্তু তা ক্ষমতার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। আর মাঝে মাঝে ক্ষমতা দেখছি যেখানে প্রয়োজনীয় নেতৃত্ব নেই। আমি আশা করি এই পরিস্থিতি কেটে যাবে।

গুতেরেস বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ দুটি দেশ। আমার মতে, কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে তাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নয়ন অত্যাবশ্যক। আমি আশাকরি অদূর ভবিষ্যতে এটি অতিক্রম করা সম্ভব হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয় দেশের ভূমিকা রয়েছে কিন্তু বৈশ্বিক সম্পর্ক জোরদারের মতো আরও যে বিষয়গুলো রয়েছে, আমার মতে এটা খুবই জরুরি। আমি আশা করবো অদূর ভবিষ্যতে এটা সম্ভব হবে।

এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ট্রাম্পের করা মন্তব্য নিয়ে নিন্দা জানিয়ে বলা হচ্ছে, মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কোনো ইচ্ছা চীনে নেই। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। ট্রাম্প আরও বলেছেন, করোনাভাইরাসের উৎস উহানের ল্যাব। তিনি এর প্রমাণ দেখেছেন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে মরণঘাতী করোনাভাইরাস। পরে তা বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বিশ্বে প্রায় ৩২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন ২ লাখ ৩০ হাজার ৬১৫ জন। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এর পরই ইতালির অবস্থান।

করোনা নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের প্রতিবেদন: উহানের ল্যাবেই কি তৈরি বিশ্বজুড়ে প্রলয় সৃষ্টিকারী নভেল করোনাভাইরাস? গোটা বিশ্বে এখন এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, উহানের ভাইরোলজি ল্যাবরেটরি থেকেই লিক হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। চীনের কাছ থেকে এ জন্য বড় অংকের ক্ষতিপুরণ আদায় করে ছাড়বেন বলেও হুমকি দিয়েছেন তিনি। তবে এবার সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছে খোদ মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ। বৃহস্পতিবার তারা জানিয়ে দিল, মানুষের তৈরি নয় এই ভাইরাস।

এক বিবৃতিতে আমেরিকার ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে, দেশের পুরো গোয়েন্দা বিভাগ পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছে। বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ভাইরাসটি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার পর জানা গেছে কভিড-১৯ মানুষের তৈরি নয় বা জিনগত ভাবে কোনো পরিবর্তন ঘটানো হয়নি।

করোনা ভাইরাস দ্বিতীয়বার হতে পারে না: ফেব্রুয়ারি মাসে মূল চীনা ভূখণ্ডের বাইরে সবচেয়ে গুরুতরভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ায়। এরপর থেকে দেশটি উঠেপড়ে লাগে এই ভাইরাস দমনে এবং সর্বশক্তি দিয়ে সফলভাবে লড়াই চালায় এর বিরুদ্ধে। একটা সময়ে গিয়ে করোনার বিরুদ্ধে জয় লাভও করে। কিন্তু হটাৎ করেই কয়েক জনের শরীরে দ্বিতীয়বার করোনার সংক্রমণ ধরা পরে দেশটিতে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার চিকিৎসাবিষয়ক গবেষকরা বলছেন, কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়া কয়েকজনের শরীরে ফের করোনা পাওয়া যায়। এটা হয়েছিল টেস্টিংয়ের ভুলে।

দক্ষিণ কোরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধবিষয়ক কেন্দ্র সিডিসির গবেষকরা বলেছেন, করোনাভাইরাসের পক্ষে মানবদেহে দ্বিতীয়বার হানা দেওয়া অসম্ভব। দক্ষিণ কোরিয়ার সিডিসির গবেষকরা দেখেছেন, সন্দেহজনক পুনরায় সংক্রমিত করোনা রোগীদের টেস্টের ফলাফলগুলো ভুল ছিল। নিষ্ক্রিয় ভাইরাস ও জীবন্ত ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারেনি ওই টেস্টগুলো। তাই এমনটা হয়েছে।

সিডিসি জানিয়েছে, এইচআইভি ও চিকেনপক্সের মতো অন্যান্য ভাইরাসগুলো মানব কোষের নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করতে পারে এবং পুনরায় সক্রিয় হওয়ার আগে বছরে পর বছর ধরে সুপ্ত থাকতে পারে। কিন্তু করোনাভাইরাস হোস্ট সেলের নিউক্লিয়াসের বাইরে থাকে। এর মানে এই ভাইরাসটি দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ বা পুনরাবৃত্তি ঘটায় না। দক্ষিণ কোরিয়ার সিডিসি কমিটির প্রধান ড. ওহ মায়ং ডন এমনটাই জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একবার আক্রান্ত হলে পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।


বিষয়: করোনা


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top