সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৪ই চৈত্র ১৪৩০


করোনা: ইউরোপের দেশগুলোতে কমেছে মৃত্যুর সংখ্যা, শিথিল হচ্ছে লকডাউন


প্রকাশিত:
৫ মে ২০২০ ১৯:৫৪

আপডেট:
৫ মে ২০২০ ১৯:৫৫

ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেনে শিথিল হচ্ছে লকডাউন

 

প্রভাত ফেরী: করোনার প্রকোপ কমে আসায় লকডাউন শিথিল হতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশে। এরই মধ্যে পাওয়া গেল ভালো কিছু সংবাদও। ইউরোপের দেশ ফ্রান্স, স্পেন ও ইতালিতে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একদিনে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে কম মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্সে ১৩৫ ও স্পেনে ১৬৪ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। যা মধ্য মার্চের পর সবচেয়ে কম। ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১৭৪ জন। যা দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এদিকে ফ্রান্সের এক চিকিৎসক দাবি করেছেন, রোগীদের থেকে নেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছরই দেশটিতে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ছিল। ফ্রান্সে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ারও কয়েক সপ্তাহ আগের ঘটনা সেটি।

ইউরোপের আরেক দেশ যুক্তরাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে। সবমিলিয়ে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ২৮ হাজার ৪৪৬। যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালির পর যুক্তরাজ্যেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে, প্রায় আড়াই লাখ মানুষের।

ফ্রান্স: প্রথমদিকে দেশটিতে শুধু হাসপাতালে মৃত্যুবরণকারীদের তথ্য রাখা হতো। পরে বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে মারা যাওয়া রোগীদেরও সে তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। কয়েকদিন ধরেই ফ্রান্সে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা হৃাস পাচ্ছে।

রাজধানী প্যারিসে একজন নিবিড় পরিচর্যা প্রধান স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ফ্রান্সে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ছিল। এর এক মাস পর দেশটিতে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হন।

ইউভেস কোহেন নামে ওই চিকিৎসক জানান, তার নেতৃত্বাধীন একটি দল গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে শ্বাসকষ্টের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২৪ জন রোগীর নমুনা ফের পরীক্ষা করেছে। তার মধ্যে একজন ২৭ ডিসেম্বরেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত ছিলেন বলে চিহ্নিত করা হয়। ওই সময় কোহেনের দলের সঙ্গে রোগী হাসপাতালেই ছিলেন। ফলাফল নিশ্চিত হতে কয়েকবার পরীক্ষাটি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বিষয়টি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

আগামী ১১ মে লকডাউন তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে ফ্রান্স। এ দিন থেকেই শিশুরা পর্যায়ক্রমে ক্লাসে ফিরতে শুরু করবে। কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। জনগণকে বাড়ি থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে ভ্রমণে অনুমতি দেওয়া হবে।

তবে গতকাল রোববার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভিয়ার ভারান বলেছেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমছে কিনা তার দিকে নজর রাখা হবে। রাজধানী প্যারিস ও উত্তরপূর্ব ফ্রান্সের মতো সবচেয়ে দুর্গত এলাকাগুলোর দিকে বিশেষ নজর রাখা হবে।

 

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশ, শেনঝেন অঞ্চল ও ব্রিটেন থেকে কেউ ফ্রান্সে এলে তাকে আর দুই সপ্তাহ আইসোলেশনে থাকতে হবে না। ফ্রান্সে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজার ৮৯৫ জনের।

স্পেন: গত শনিবার থেকেই প্রাপ্ত বয়স্কদের শরীরর চর্চার জন্য বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য এক সপ্তাহ আগেই লকডাউন শিথিল করা হয়েছিল।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, লকডাউনের সময় যে ত্যাগ সবাই স্বীকার করেছিল এখন তার পুরষ্কার পাওয়া যাচ্ছে। ইউরোপে কঠোরভাবে লকডাউন মেনে চলা দেশগুলোর একটি ছিল স্পেন। গতকাল সোমবার থেকে দেশটিতে গণপরিবহনে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। স্পেনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৫ হাজার ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ইতালি: গতকাল সোমবার থেকে লকডাউন শিথিল করেছে ইতালি। ইউরোপে এই দেশটিই করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শরীর চর্চা করতে বাইরে যেতে পারবেন ইতালির মানুষ। একই অঞ্চলে বসবাস করলে আত্মীয়-স্বজনদের দেখতে যেতে পারবেন। কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

তবে দেশটিতে স্কুল, সিনেমা হল ও বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধই থাকছে। বার ও রেঁস্তোরা খুলবে জুন মাসে। ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৮ হাজার ৮৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।


বিষয়: করোনা


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top