সিডনী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


পরীক্ষায়ও ধরা পড়ছে না করোনাভাইরাস সংক্রমণ, চীনে মৃত ৭২২


প্রকাশিত:
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:২৪

আপডেট:
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:২৬

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মোট ৭২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নতুন করে ৩ হাজার ৩৯৯ জন আক্রান্ত হওয়ায় দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩৪ হাজার ৫৪৬ জনে। চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত নতুন করে ৮৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যাদের ৮১ জনেই হুবেই প্রদেশের।

এদিকে, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের অনেককে পরীক্ষার পরেও সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। চীনের চিকিৎসকরা এমনটিই জানিয়েছেন। চীনের একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সের প্রধান ওয়াং চেনকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স বলছে, অনেকের পরীক্ষার ফল ‘ফলস নেগেটিভ’ এসেছে।

তিনি চীনের টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, অসুস্থদের যারা নতুন ধরনের করোনাভাইরাসে সত্যিই আক্রান্ত, টেস্ট করে তাদের মধ্যে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশের পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে।

এই বিজ্ঞানী আরও জানান, এখনও অনেকের লালা পরীক্ষা করে ফলস নেগেটিভ রেজাল্ট পাওয়া যাচ্ছে। যার মানে সত্যিকার অর্থেই যতজন এন করোনাভাইরাস আক্রান্ত, তার অর্ধেকের ক্ষেত্রে পরীক্ষায় ধরা পড়েনি।

প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মত সমস্যা দেখা দেয়। ভাইরাসটি যাতে ছড়িয়ে না যায়, সেজন্য হুবেই প্রদেশকে পুরো দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে চীন। ওই অঞ্চলের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে চীনসহ বাইরের বিশ্ব থেকে।

হুবেই প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হুবেইতে নতুন করে ২ হাজার ৮৪১ জন আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ নিয়ে প্রদেশটিতে নিহত হয়েছে ৬৯৯ জন, আক্রান্ত হয়েছে ২৪ হাজার ৯৫৩ জন। এছাড়া এই প্রদেশের রাজধানী উহানে নতুন করে একদিনে ১ হাজার ৯৪৫ আক্রান্ত হয়েছে।

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ৬৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাডহানম গেব্রিয়াসাস। বহু দেশেই করোনা ভাইরাস শনাক্তের পদ্ধতি না থাকাই বড় দুশ্চিন্তার কারণ বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাইরাসে আক্রান্তদের শনাক্ত, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং তাদের সেবা নিশ্চিতে দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানো ঠেকাতে সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন।’

থাইল্যান্ডে নতুন করে আক্রান্ত সাতজন: থাইল্যান্ডে নতুন করে আরও সাতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। শনিবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। মৃতদের মধ্যে তিনজন থাই নাগরিক এবং চারজন চীনা নাগরিক।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে ৩২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। চীনের বাইরে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা। ডিজেজ কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, নতুন করে আক্রান্ত হওয়া সাতজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এদিকে, জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টাইনে রাখা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের আরও তিন যাত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে জাহাজটিতে এই ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪তে দাঁড়িয়েছে।

এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ২১ জন জাপানি নাগরিক। বাকিরা অন্যান্য দেশের নাগরিক। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের টোকিও, সাইতামা, চিবা, কানাগাওয়া ও শিজুকোর বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চীনে আরও একটি হাসপাতাল চালু: চীনের প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র হুবেই প্রদেশের উহানে আরও একটি অস্থায়ী হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। শনিবার প্রায় দেড় হাজার শয্যার এ হাসপাতালে প্রথম দফায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী ভর্তি করা হয়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।

দেশটির সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সিসিটিভি বলছে, শনিবার উহানে তৈরি অস্থায়ী লেইশেনশানে হাসপাতাল খুলে দেয়া হয়েছে। এ হাসপাতালে প্রথম একটি মেডিকেল টিম পৌঁছেছে। নতুন এ হাসপাতালে ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা শুরু হয়েছে।

হাসপাতালটিতে ৩২টি ওয়ার্ড এবং একটি সার্জিক্যাল কক্ষ রয়েছে বলে জানিয়েছে সিসিটিভি। চীনের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ হুবেইয়ের রাজধানী উহান। করোনাভাইরাসের প্রকোপ সামলাতে এ শহরে জরুরিভিত্তিতে অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ করছে দেশটির সরকার।

এর আগে গত সোমবার করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় মাত্র ১০ দিনে তৈরি অস্থায়ী একটি হাসপাতালে প্রথম ধাপে রোগীদের চিকিৎসাসেবা শুরু হয়। উহানের হুওশেনশানে এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে প্রথম করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসা শুরু করে কর্তৃপক্ষ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top