সিডনী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

অরন্ধন পুজোর সেকাল- একাল : ডঃ সুবীর মণ্ডল


প্রকাশিত:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২০:১০

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৩:৫৭

 

শরতের মেঘলা আকাশ, শিউলি ফুলের গন্ধ। ধান খেতের আল জুড়ে কাশ ফুলের সমারোহ। জানান দিচ্ছে "মা" আসছে। সেই মত শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি পর্বও। যার সূচনা হয় এই বিশ্বকর্মা পুজো থেকে। সারা দেশ জুড়ে মহা ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয় এই পুজো। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে নয়, রাজ্যের বাইরেও এই উৎসব ততটাই জনপ্রিয়। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কলকাতা, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ সহ আরও বিভিন্ন রাজ্যে ধুমধামের সঙ্গে এই পুজো হয়ে থাকে। উৎসব প্রিয় বাঙালি অতীত কাল থেকে মেতে উঠেছে বিশ্বকর্মা পুজোয়।
আর কয়েক দিন বাদে বাঙালির শ্রেষ্ঠ শারদীয়া উৎসবের বর্ণময় অনুষ্ঠান। এ-বছর বাঙলা জুড়ে উৎসাহ ও উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো। গত বছর সেই ভাবে মানুষ মেতে উঠতে পারে নি। করোনার আবহে স্বাস্থ্য বিধি মেনে অনুষ্ঠিত হবে বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপূজা। আসলে বাঙালির বারো মাসে যেমন তেরো পার্বন, তেমনই তেরো পার্বণের মধ্যে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন নাম। ভিন্ন পার্বণকে বাঙালি আলাদা আলাদা নামে অভিহিত করেছে। তেমনই এক পার্বণ রান্না পুজো। ভাদ্র মাসের সংক্রান্তির দিন পালিত হয় এই পুজো। অন্যদিকে, সেই দিনই বিশ্বকর্মা পুজো অনুষ্ঠিত হয়।
ইতিমধ্যেই ১০ সেপ্টেম্বর গণেশ চতুর্থী সমাপ্ত হয়েছে। তারপর রয়েছে বিশ্বকর্মা পুজো। ভাদ্র মাসে যে সমস্ত পুজো ও পার্বনের উৎসব রয়েছে, গণেশ চতুর্থী তার মধ্যে অন্যতম। এরপর রয়েছে বিশ্বকর্মা পুজো। বাগ্র মাসের সংক্রান্তির দিন পালিত হয় বিশ্বকর্মা পুজো। ২০২১ সালে বিশ্বকর্মা পুজোর তিথি ১৭ সেপ্টেম্বর রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রতিবারের মতো এবারেও ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো। সেদিনই রয়েছে প্রদোশ একাদশী।

পুরাণের আলোয় বিশ্বকর্মা:

বিশ্বকর্মা (সংস্কৃত: विश्वकर्मान्, Viśvakarmān; আক্ষরিক অর্থে: "সর্বস্রষ্টা") হলেন একজন হিন্দু দেবতা। ঋগ্বেদ অনুযায়ী, তিনি পরম সত্যের প্রতিরূপ এবং সৃষ্টিশক্তির দেবতা। উক্ত গ্রন্থে তাকে সময়ের সূত্রপাতের প্রাক্‌-অবস্থা থেকে অস্তিত্বমান স্থপতি তথা ব্রহ্মাণ্ডের দিব্য স্রষ্টা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রামায়ণে একাধিক স্থলে বিশ্বকর্মার উল্লেখ পাওয়া যায়। আদিকাণ্ডে উল্লিখিত হয়েছে, বিশ্বকর্মা দুটি ধনুক নির্মাণ করেছিলেন। তিনি তার মধ্যে একটি ত্রিপুরাসুর বধের জন্য শিবকে এবং অপরটি বিষ্ণুকে প্রদান করেন। বিষ্ণু তার ধনুকটি প্রদান করেন পরশুরামকে। রাম শিবের ধনুকটি ভঙ্গ করে সীতাকে বিবাহ করেন এবং অপর ধনুটিতে জ্যা আরোপ করে পরশুরামের দর্প চূর্ণ করেন। বিশ্বকর্মার পুত্র বিশ্বরূপকে ইন্দ্র বধ করেছিলেন। রামায়ণ, কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড।
রামায়ণে উল্লিখিত বিশ্বকর্মার স্থাপত্যকীর্তিগুলি হল: কুঞ্জর পর্বতের ঋষি অগস্ত্যের ভবন, রামায়ণ, কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড। কৈলাস পর্বতে অবস্থিত কুবেরের অলকাপুরী, রামায়ণ কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড। রাবণের লঙ্কা নগরী রামায়ণ, কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড। এছাড়া বিশ্বকর্মা ব্রহ্মার জন্য নানা অলংকারে সজ্জিত পুষ্পক বিমান/রথ নির্মাণ করেছিলেন। এই বিমান/রথ ব্রহ্মা কুবেরকে দান করেন এবং লঙ্কেশ্বর দশানন রাবণ কুবেরের থেকে সেটি অধিকার করেন। বিশ্বকর্মা বৈদিক দেবতা, ঋগবেদের ১০ম মণ্ডলে ৮১ এবং ৮২ সূক্তদ্বয়ে বিশ্বকর্মার উল্লেখ আছে। ঋগবেদ অনুসারে তিনি সর্বদর্শী এবং সর্বজ্ঞ। তার চক্ষু, মুখমণ্ডল, বাহু ও পদ সবদিকে পরিব্যাপ্ত। তিনি বাচস্পতি, মনোজব, বদান্য, কল্যাণকর্মা ও বিধাতা অভিধায় ভূষিত। তিনি ধাতা, বিশ্বদ্রষ্টা ও প্রজাপতি।

"ধ্যানমন্ত্রসম্পাদনা
দংশপালঃ মহাবীরঃ সুচিত্রঃ কর্মকারকঃ।
বিশ্বকৃৎ বিশ্বধৃকতঞ্চ বাসনামানো দণ্ডধৃক।।
ওঁ বিশ্বকর্মণে নমঃ।"
বিশ্বকর্মা লঙ্কা নগরীর নির্মাতা। তিনি বিশ্বভুবন নির্মাণ করেন। বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র, শিব এর ত্রিশূল, কুবের এর অস্ত্র, ইন্দ্রের বজ্র, কার্তিকেয়র শক্তি প্রভৃতি তিনি তৈরি করেছেন। শ্রীক্ষেত্রর প্রসিদ্ধ জগন্নাথ মূর্তিও তিনি নির্মাণ করেছেন।
ভাদ্রমাসের সংক্রান্তির দিন বিশ্বকর্মার পূজা করা হয়। সূতার-মিস্ত্রিদের মধ্যে এঁর পূজার প্রচলন সর্বাধিক। তবে বাংলাদেশে স্বর্ণকার, কর্মকার এবং দারুশিল্প, স্থাপত্যশিল্প, মৃৎশিল্প প্রভৃতি শিল্পকর্মে নিযুক্ত ব্যক্তিগণও নিজ নিজ কর্মে দক্ষতা অর্জনের জন্য বিশ্বকর্মার পূজা করে থাকেন।
প্রতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর তারিখে বিশ্বকর্মার পূজা হয়ে থাকে। প্রতিবছর একইদিনে এই পূজা হয়, এর কোনো পরিবর্তন হয় না বিশেষ।
বিশ্বকর্মা পূজা হয় ভাদ্র সংক্রান্তিতে অর্থাৎ ভাদ্র মাসের শেষ দিনে। আর এই দিনেই হয় রান্নাপুজো বা অরন্ধন যা কিনা মনসাপূজার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ভাদ্রের আগে বাংলায় শ্রাবণ মাস চলে - এই মাস শিবের মাস, এই মাস মনসার মাস। পুরো শ্রাবণ মাস জুড়ে বর্ষা-প্লাবিত বাংলায় প্রাচীন কাল থেকেই সাপের প্রকোপ দেখা দেয় আর সেই সাপের দংশন থেকে রক্ষা পেতে সহায় হন দেবী মনসা। তাই বর্ষার শেষে ভাদ্র সংক্রান্তিতে তাঁরই উদ্দেশে করা হয় মনসা পূজা। তাহলে দেখা গেল, ভাদ্র সংক্রান্তির এই একটি মাত্র দিনেই একইসঙ্গে অরন্ধন, মনসাপূজা এবং বিশ্বকর্মা পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিকে কন্যা সংক্রান্তি বলা হয়। এই বছর কন্যা সংক্রান্তি ১৭ সেপ্টেম্বর রাত ১ টা ২৯ মিনিটে শুরু হবে। এই দিনে রাহুকাল শুরু হবে সকাল ১০ টা ৪৩ মিনিটে। শেষ হবে ১২ টা ১৫ মিনিটে। জ্যোতিষবিদদের মতে রাহুকালকে ছেড়ে ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো করতে হবে। এরপর বিশ্ব কর্মাপুজোর সর্বার্থ সিদ্ধি যোগ প্রাত শুরু হয় ৬ টা ০৭ মিনিটে। উল্লেখ্য, প্রযুক্তি থেকে যন্ত্রপাতির দেবতা হলেন বিশ্বকর্মা। এই দেবতার হাত ধরেই ধরিত্রীতে পুষ্পক বিমান, দ্বারিকা নগর, যমপুরী, কুবেরপুরী নির্মিত হয়েছে।
অরন্ধন হলো এক ধরনের লোকাচার। ভাদ্রের রান্না আশ্বিনে খাওয়া। এদিকে, বিশ্বকর্মা পুজো ছাড়াও ভাদ্রমাসের সংক্রান্তিতে অরন্ধন বা রান্না পুজো সম্পন্ন হয়। এই বিশেষ পুজোর বিভিন্ন নামকরণ রয়েছে বাঙালির নিজের মতো করে। কোথাও একে বলা হয়, ইচ্ছা রান্না, কোথাও ধরাটে বা আটাশে রান্না বলা হয়। আর বিশ্বকর্মা পুজোর দিন যদি এই রান্না পজো সম্পন্ন হয়, তাহলে তার নাম হয় 'বুড়ো রান্না'। অরন্ধনকে অনেকেই মনসা পুজোর অংশ হিসাবে মনে করেন। ফলে যেখানে এই অরন্ধন পালিত হয়, সেখানে মনসা পুজোর ঘট বসিয়ে ফণিমনসা গাছের ডাল ঘটে রাখা হয়। এরপর শুরু হয় রান্নার কাজ। এই অরন্ধনের হাত ধরে ভাদ্র মাসে রান্না করে তা আশ্বিন মাসে খাওয়ার রীতি রয়েছে। একে সংসারে শান্তি আসে ও সমৃদ্ধি আসে বলে জানা যায়।
ইলিশ থেকে কচুর শাক পড়ে পাতে!
যে মরশুমে যে ফল বা সবজি ও মাছ পাওয়া যায়, সেই মরশুমে সেই সবজি কেনা হয়। কেনা হয় মরশুমি মাছ। যেমন ভাদ্র মাসে ইলিশ পাওয়া যায়। ফলে ভাদ্র মাসে কেনা হয় ইলিশ। বলা হয়, সংক্রান্তিতে মা মানসাকে তুষ্ট করতেই এমন আয়োজন করা হয়। অরন্ধনের দিন সারা রাত ধরে রান্না চলে। এরপর ভাদ্রমাসের সংক্রান্তিতে মা মনসাকে সেই রান্না উৎসর্গ করে খাওয়া হয়। উল্লেখ্য, শোনা যায়, বাংলার বুকে এককালে মা মনসাকে দুর্গার রূপ ভেবে পুজো করার রীতি প্রচলিত ছিল।
বিশ্বকর্মা পুজোর অন্যতম অনুষঙ্গ হলো ঘুড়ি ওড়ানো। আট থেকে আশির মানুষের স্বপ্নপূরণের ঠিকানা বিশ্বকর্মা পুজোর দিন। গত বছর করোনার আবহে নমো নমো করে দায়সারা গোছের পুজো অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে করোনার আবহে মানুষ দিশেহারা ও কাজ হারিয়ে গেছে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের। অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের কাছে অর্থ উপার্জনের কোন বিকল্প রাস্তা নেই । একটা দুঃসময়ে মুখোমুখি আমরা সবাই। তবু বিনম্র চিত্তে বিশ্বকর্মা পুজোয় মেতে উঠেছে বাঙালি।
কেউ ঘুড়ির উপরে লিখেছে, সে শিক্ষিকা হতে চায়। কারও ঘুড়িতে আবার লেখা, সে চায় পুলিশ হতে। কেউ আবার নিজের ঘুড়িতে লিখেছে তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নের কথা। লকডাউনে স্কুল বন্ধ। পল্লী অঞ্চলের খুদেদের অনেকেরই মা-বাবার উপার্জন তলানিতে এসে ঠেকেছে। কিন্তু বড় হওয়ার স্বপ্নে দাঁড়ি পড়েনি। নিজেদের নাম, বাড়ির ঠিকানা আর ভবিষ্যতের স্বপ্নকে ঘুড়ির গায়ে লিখে ওরা আকাশে উড়িয়ে দেবে বিশ্বকর্মা পুজোর সকালে। তাই প্রস্ততি চলছে বিভিন্ন জেলা জুড়ে এলাকায়-এলাকায় ।
মাথার উপরে শরতের নীল আকাশ। ওই এক টুকরো আকাশেই ওরা খুঁজতে চাইছে মুক্তির স্বাদ। হাতে পাওয়া ঘুড়ি আকাশে ভাসিয়ে দেওয়ার আগে ওরা তাতে লিখে দিতে চাইছে নিজেদের স্বপ্নের কথা। সঙ্গে নাম-ঠিকানাও।


কোথাও গিয়ে পড়লে সেই লেখা দেখে কেউ যদি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন, তা হলে খুব উপকার হয়। তবে খুদেরা অবশ্য অতশত জানে না। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন একটু ঘুড়ি ওড়াতে পারলেই ওরা খুশি। সবাই যে খুব ভাল ঘুড়ি ওড়াতে পারে, তা-ও নয়। ঘুড়ি ওড়াতে সাহায্য করার জন্য পাড়ার বড় দাদা-দিদিদেরও ডেকে এনেছিল ওরা।
ঘুড়ির কাগজে ওই খুদেরা নিজেদের যে সব স্বপ্নের কথা লিখছে, তা বাস্তবে পরিণত করা যে কত কঠিন, তা তারা খুব ভাল ভাবেই জানে। ওদের কারও বাবা ঘুরে ঘুরে শাড়ি বিক্রি করেন, কারও বাবা কারখানার শ্রমিক, কারও বাবার ছোট দোকান আছে ফুটপাতে। এই করোনা আবহে বাড়িতে রোজ দু’বেলা খাবারও জোটেনি অনেকের। তার মধ্যে স্কুল বন্ধ বলে মিড-ডে মিলটাও পাচ্ছে না ওরা। তাই শুধু পড়াশোনা নয়, ওদের জন্য পেট ভরাতেও স্কুল খোলাটা জরুরি।
আগে মূলত ব্যবসায়ীরা বিশ্বকর্মা পুজো করতেন। তবে বর্তমানে বেশিরভাগ বাড়িতেও আয়োজন করা হচ্ছে এই বিশ্বকর্মা পুজো। বিশ্বাস করা হয় যে, নিষ্ঠা সহকারে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে পুজো করলে, সুখ -শান্তি বজায় থাকে, সমৃদ্ধি হয় এবং সমস্ত বাধা দূর হয়। নিজের ব্যবহৃত যানবাহনের ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। প্রাণঘাতী ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এই সমস্ত বিশ্বাস ব্যক্তিগত ভাবনা ও উপলব্ধি থেকে উদ্ভুত হয়েছে। আবহমান কাল থেকে চলে আসছে বংশপরম্পরায়। বিশ্বকর্মা যন্ত্রের দেবতা। সেই কারণেই সমস্ত কলকারখানায় এই বিশ্বকর্মা পুজো অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, দুর্গাপুর, দুই চব্বিশ পরগনা জেলার শিল্পাঞ্চলে, খড়গপুর, আসানসোল, শিলিগুড়ি, সহ প্রতিটি জেলায় এ বছর যথেষ্ট উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হবে বিশ্বকর্মা পুজো।
এদিকে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই রাজ্যজুড়ে সাজো সাজো রব। তবে এ-বছরও করোনা পরিস্থিতির জেরে মণ্ডপে বেশি মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এবার গোটা রাজ্যেই এ নির্দেশ কার্যকর করল রাজ্য সরকার। বিশেষ করে শিল্পাঞ্চলে বিধিনিষেধে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে কলকাতা ও জেলা জুড়ে উদ্দীপনা খুব বেশি। সুসজ্জিত প্যাণ্ডেলে শোভা পাচ্ছে বিশ্বকর্মা ঠাকুর। আলোর মালায় সেজে উঠেছে শহরতলির বিভিন্ন জায়গা। পিছিয়ে নেই গ্রাম। কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফে। এই নির্দেশ কার্যকর হতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে বাংলার বাসিন্দারা। শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বকর্মা পুজো। সমগ্র রাজ্য জুড়ে সাড়ম্বরে পালিত হবে এই উৎসব।
করোনা কালে গতবছর কার্যত দায়সাড়া ভাবে পুজো হয়েছিল। এবার করোনা পরিস্থিতি অনেকটা ভাল। তাই পাড়ায়-পাড়ায় পুজোর অনুমতি মিলেছে। তবে বেশকিছু নিয়মবিধি আগে থেকেই কার্যকর করা হয়েছে। গত সপ্তাহেই এই পুজো নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছিল পশ্চিমবঙ্গের সরকার।
তাতে বলা হয়েছিল, বিশ্ববকর্মা মূর্তি মণ্ডপে আনা বা নিরঞ্জনের সময় কোনও রকম শোভাযাত্রা করা চলবে না। পাড়ার পুজোতে মণ্ডপের উচ্চতা হতে পারে সর্বোচ্চ ৪ ফুট। বাড়িতে পুজো হলে সেই মণ্ডপের উচ্চতা হতে পারে মাত্র ২ ফুট। এর মাঝেই বিধিবাম। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ আয়োজনে খামতি নেই বলে মনে হয়। দুঃসময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি আমরা সবাই,, তবু ভক্তিনম্র চিত্তে বিশ্বকর্মা বন্দনায় কোন খামতি নেই।

 

ডঃসুবীর মণ্ডল
প্রাবন্ধিক, অণুগল্প ও ছোটগল্প
এবং ভ্রমণকাহিনী লেখক , পশ্চিম বঙ্গ, ভারত

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top