সিডনী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১

আত্মিক বন্ধনে আগমনের আনন্দ আর বিসর্জনের বিষাদে গড়া শারদীয় দূর্গা উৎসব : শাহান আরা জাকির পারুল


প্রকাশিত:
১৪ অক্টোবর ২০২১ ২০:৫৭

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৪৩

 

দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হল হিন্দু দেবী দুর্গার পূজাকে কেন্দ্র করে প্রচলিত একটি উৎসব।
দুর্গাপূজা সমগ্র হিন্দুসমাজেই প্রচলিত। তবে এটি বাঙালি হিন্দু সমাজে এটি অন্যতম বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। আশ্বিন বা চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে দুর্গাপূজা করা হয়। আশ্বিন মাসের দুর্গাপূজা শারদীয়া দুর্গাপূজা এবং চৈত্র মাসের দুর্গাপূজা বাসন্তী দুর্গাপূজা নামে পরিচিত। তবে,শারদীয়া দুর্গাপূজার জনপ্রিয়তা বেশি। বাসন্তী দুর্গাপূজা মূলত কয়েকটি পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে "দুর্গাষষ্ঠী", "মহাসপ্তমী", "মহাষ্টমী", "মহানবমী" ও "বিজয়াদশমী" নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় "দেবীপক্ষ"। দেবীপক্ষের সূচনার অমাবস্যাটির নাম মহালয়া; এই দিন হিন্দুরা তর্পণ করে তাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধানিবেদন করে। দেবীপক্ষের শেষ দিনটি হল কোজাগরী পূর্ণিমা। এই দিন হিন্দু দেবী লক্ষ্মীর পূজা করা হয়। কোথাও কোথাও পনেরো দিন ধরে দুর্গাপূজা পালিত হয়। সেক্ষেত্রে মহালয়ার আগের নবমী তিথিতে পূজা শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুর শহরের মৃন্ময়ী মন্দির এবং অনেক পরিবারে এই রীতি প্রচলিত আছে।
পৌরাণিক কাহিনি থেকে দুর্গা পূজার শুরু। কিন্তু ক্রমে দুর্গা যেন বাঙালির ঘরের মেয়ে হয়ে উঠেছে। সাধারণ মেয়ে, তবে দাপুটে। এই দাপুটে মেয়ের কত নাম! এক অঙ্গে বহুরূপ। এক রূপে বহুনামে চিহ্নিত বলেই বুঝি সে মা দুর্গা। শরৎঋতুতে আবাহন হয় বলে দেবীর আরেক নাম শারদীয়া। এছাড়া মহিষাসুরমর্দিণী, কাত্যায়নী, শিবানী, ভবানী, আদ্যাশক্তি, চণ্ডী, শতাক্ষী, দুর্গা, ঊমা, গৌরী, সতী, রুদ্রাণী, কল্যাণী, অম্বিকা, অদ্রিজা এমন কত নাম আছে মায়ের। ঠিক নানী-দাদীরা যেমন আদর করে একটা নামে ডাকে, মামারবাড়িতে আদিখ্যেতা করে অন্য নামে ডাকা হয়। আবার বাবার দেওয়া একটা নাম, মায়ের দেওয়া একটা নাম, স্কুলের জন্য একটা ভালো নাম । মা দুর্গারও তেমনি অনেক নাম। সে তো ঘরেরই মেয়ে!
আবার যদি চণ্ডীর দেবীনির্মাণের ব্যাখ্যা ধরা যায়, নানা শক্তি সমন্বয়ে আজকের ভাষায় তিনি একটি বিশেষ কার্যসিদ্ধির উদ্দেশ্যে বানানো যন্ত্র, একজন নারীবেশী যুদ্ধাস্ত্র ছাড়া কিছু নন। অসুরের মধ্যে পুরুষের তথাকথিত নারীশরীরের লোভ সঞ্জাত করেছিলেন পৌরাণিকরা। তাই দুর্গা নামের যুদ্ধাস্ত্রটি স্ত্রী রূপে শোভিত, এক পুরুষকে প্রলোভন দেখাবে বলেই। যদিও ঘরের মেয়ে বা লৌকিক দুর্গার সঙ্গে পৌরাণিক কাহিনির তেমন কোনও মিল নেই। লৌকিক দুর্গা বাঙালির ঘরের মেয়ে, চলতি তথাকথিত মেয়েলি সব বৈশিষ্ট্য তাঁর অধিকার।
মা’কে যেমন একাহাতে অনেক কাজ করতে হয়, ঠিক যেমন মাদুর্গাকে দশহাতে যুদ্ধ করতে হয়েছিল মহিষাসুর বধের সময়। সব দেবতা অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল মাদুর্গাকে। অনেকগুলো দৈত্য, দানব, অসুরকে তিনি মেরেছিলেন।কিন্তু শুধু মহিষাসুরের নামটাই বেশি জানা যায়।

বাংলাদেশে দেবী দুর্গা
ঢাকায় ঠিক কবে বারোয়ারী মণ্ডপে এসেছিলেন, তা নিয়ে অবশ্য নানা মুনির নানা মত পাওয়া যায় । কেউ বলেন- বল্লাল সেন চতুর্দশ শতাব্দীতে তৈরি করেন ঢাকেশ্বরী মন্দির। অর্থাৎ দেবী দূর্গা সে আমলে ঢাকায় অপরিচিত ছিলেন না। আবার ফাঁক রয়ে যায়, বল্লাল সেনের ঢাকেশ্বরী মন্দির তৈরির ঘটনা এখনো প্রমাণিত নয়। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রাচীন যে কাঠামো এখনো দাঁড়িয়ে তা কোনোভাবেই কোম্পানি আমলের আগেকার নয়। ঢাকার দুর্গাপূজার সবচেয়ে পুরোনো তথ্য পাওয়া যায় অর্থনীতিবিদ ভবতোষ দত্তের আত্মজীবনী থেকে। ১৮৩০ সালের সূত্রাপুরের একটি পূজার উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রায় দোতলা উঁচু ছিল দুর্গা প্রতিমাটি। সে সময়ে নন্দলাল বাবুর মৈসুন্ডির বাড়িতে পূজাটি হয়েছিল। তবে এরপর আর কোনো বিস্তারিত বর্ণনা নেই সে পূজার। এছাড়াও ইতিহাস বলে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের পূজাও এক সময় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। সে সময় গোটা বাংলাতেই ব্রাক্ষ্মণদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যেত। তবে কিছুকাল পরেই অন্যান্য শ্রেণীর মানুষের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে ব্রাক্ষ্মণদের আধিপত্য। অনেকে পুরোহিত ছাড়াই শুরু করেন পূজা। তবে সেটাও যে খুব একটা প্রচলিত রীতি ছিল তা নয়।
কাজেই,ঢাকায় দুর্গাপূজা সাধারণ্যে আসতে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন পড়ে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় ঢাকায় সময় কাটানো বিভিন্ন মানুষের আত্মজীবনী থেকে। হৃদয়নাথ, গণিউর রাজা, বুদ্ধদেব বসুসহ গত শতকের শুরুর দিকে যারা ঢাকায় সময় কাটিয়েছেন, তাদের কারো লেখাতেই আসেনি দুর্গাপূজার প্রসঙ্গ। এমনকী ঢাকাবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের ‘পুরোনো ঢাকার উৎসব ও ঘরবাড়ি’ বইটিতে ঢাকার উৎসব হিসেবে ঈদ, মুহররম, জন্মাষ্টমী, হোলি ও ঝুলনের উল্লেখ রয়েছে। এর অর্থ এই দাঁড়ায় দুর্গাপূজা বিংশ শতকের শুরুতেও ছিল পারিবারিক, অভিজাতদের মাঝে। অভিজাতদের বাইরে কেবল এর সার্বজনীনতা অর্থাৎ এখন যে ধরণের পূজা প্রচলিত, তা শুরু হতে গত শতকের তিরিশের দশক লেগে যায়। তবে সার্বজনীন পূজা ব্যাপক আকারে শুরু হয় ১৯৪৭-এর দেশ বিভাগের পর। তখন এককভাবে পূজা করাটা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে ওঠে। ফলে ব্রাক্ষ্মণ-অব্রাক্ষ্মণ নির্বিশেষে মিলেমিশে পূজা করার চল শুরু হয়। তবে এখনো পারিবারিক পূজার চল রয়ে গেছে পুরোনো ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়। ৭১-এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কিংবদন্তীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শুরু হয় দেশের কেন্দ্রীয় দুর্গাপূজা।
প্রথমদিকে যেহেতু কেবল বাবুগিরি আর ইংরেজদের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখার জন্যই পালিত হতো এই উৎসব, সে কারণেই ধর্মীয়ভাবের চেয়ে সেখানে বেশি প্রাধান্য পেত আমোদ-প্রমোদ। কিন্তু বিত্তবান বাবুরা দুর্গোৎসবের যে জোয়ার আনতে চেষ্টা করেছিলেন তাতে পাঁক ও আবর্জনা ছিল বেশি। বাবুদের অর্থকৌলিন্য প্রকাশের পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদা লাভের উপায়ও ছিল এই উৎসব। কালীপ্রসন্ন সিংহের ‘হুতোম প্যাঁচার নক্সা’য় ঢাকায় দুর্গাপূজার বর্ণনায় এসেছে বাঈজি নাচ, খেমটা নাচ, কবিগান, কীর্তনের। পূজায় ইংরেজদের আপ্যায়নের জন্য প্রস্তুত থাকত ব্র্যান্ডি, শেরি, শ্যাম্পেন। হাকিম হাবিবুর রহমানের ‘ঢাকা পচাস বারাস পেহলে’ বইতে উল্লেখ আছে যেকোন হিন্দু উৎসবে বাঈজি, খেমটা, সং আর গাঁজার আসর বসতই। আর নেশার চল এমনই ছিল যে, চুরুট তামাক ও চরসের ধোঁয়ায় প্রতিমাই ঢাকা পড়ে যেত।

এবার সবখানেই অনেক উতসাহ,আনন্দ,উল্ললাসের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গা উৎসব!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে, জগন্নাথ হলের দুর্গা মণ্ডপ থেকে জানা যায় - এই পূজার সূচনা ১৯৭৭ সালে, এবং এখানকার মূর্তি ও পূজা মণ্ডপ কোনো কুমোর এবং ডেকরেটার দিয়ে করানো হয় না। দুটি কাজই সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাত্ররা।এই পুজতে প্রচুর ছাত্র এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ভিড় করে থাকেন, যেখানে কোনো ধর্মের ছোঁয়া নেই; হিন্দু মুসলমান সবাই একসাথে মজে থাকেন শারদীয়া আড্ডায়। এখানে দেখা যায় ছাত্ররা রীতিমত হিমসিম খায় দর্শকদের সামলাতে। এর পর রমনা কালীবাড়ির পূজা। এটিও ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপূজা।

আর ও আছে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পূজা। এ ছাড়া পুরোনো ঢাকার দুর্গা পূজার জাঁকজমক দেখবার মত!শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, সূত্রাপুর এলাকায় অগুন্তি ছোট এবং বড় সার্বজনীন দুর্গা মণ্ডপ দেখা যায়!;কয়েক হাত দূরে দূরে এক একটি মণ্ডপ তৈরি হয়।
বাংলাদেশের দুর্গাপূজা সকলের কাছেই এখন সার্বজনীন হয়ে উঠেছে। দুর্গাপূজার মণ্ডপ ঘিরে আলোর রোশনাই এবং প্রায় প্রতিটি দুর্গাপূজা মণ্ডপ প্রাঙ্গণে মেলার আয়োজন থাকে, যেখানে রকমারি দোকানের সঙ্গে রয়েছে নাগরদোলা, যেটি যে কোনো মেলার প্রাথমিক অনুষঙ্গ, আর প্রবেশ পথেই থাকে বেশ কিছু গজা, মুরালি, সন্দেশের মত মিষ্টান্নের দোকান। জেমস ওয়াইজ তার ‘নোটস অন দ্য রেইজ কাটস এন্ড ট্রেড অব ইস্টার্ন বেঙ্গল’ বইয়ে উল্লেখ করেছেন,একসময় হিন্দু জমিদাররা যেমন মুহররম পালনে অর্থ সাহায্য করে থাকতেন, মুসলমান জমিদাররাও তেমনি সাহায্য করতেন দুর্গা পূজার। এই ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এখনো মুসলমানরা পূজায় অর্থ সাহায্য করেন। জানা যায় --- পুরোনো ঢাকার শাঁখারী বাজারের সবচেয়ে প্রাচীন ও বড় পূজা মণ্ডপ 'প্রতিদ্বন্দ্বী'র সভাপতির কাছ থেকে এক্সময় জানা যায়, বহুবছর যাবত এখানে সার্বিক আয়োজনে ব্যাক্তিগতভাবে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন এলাকার একজন বাসিন্দা। তাই হয়তো আজ বাংলাদেশের দুর্গাপূজা ধর্মীয় রীতি ছাপিয়ে এক অন্যতম মিলনোৎসবে রূপ নিয়েছে।
এখন শহর বন্দর গ্রামে গঞ্জে সবখানেই হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে জাঁকজমকভাবে যার যার সাধ্যমত এই পূজো পালিত হয়!
পূজো উৎসবের কথা লিখতে লিখতে মনে পড়ে গেলো কিশোরবেলার কথা!পাবনা শহরে আমার পৈতৃক বাড়ীটির চারপাশেই তখন অনেক হিন্দু পরিবার ছিল! আমার বাগান থেকে মাসীমা'রা পূজোর ফূল নিতেন! খুব আত্মিক বন্ধন ছিল আমাদের সাথে!
হিন্দু মুসলিম ভেদাভেদ দেখিনি!
মনে পড়ে, পূজোর সময় আমার বান্ধবী আমায় ড্রেস গীফট করতো!
আবার ঈদের সময় আমার বান্ধবীকে আমি ড্রেস গীফট করতাম!
কতো যে মুড়ি মুড়কী, নাড়ু পাঠিয়েছেন মাসীমা'রা! এসবই আমাদের উভয়পক্ষের মা ও মাসীমাদের আন্তরিক ভালবাসার স্বাক্ষর!
হৈচৈ হাসি আনন্দে আমরা থাকতাম! বিয়ের শানাই বা পূজোর ঘণ্টা শুনলে আমায় আর কেউ সহজে খুঁজে পেতনা! সোজা মন্দির বা পূজা মণ্ডপে! ধূপের মৌ মৌ গন্ধ মনকে নাড়া দিতো!
সবচে বেশী আনন্দ যেমন পেতাম দুর্গা পূজোয়, ঠিক তেমনি কষ্ট পেতাম দেবী বিসর্জনের সময়! আমাদের বাড়ীর পাশেই ছিল বিশাল একটি দীঘি! বিজয়া দশমীতে সেখানে দেখতাম সবাই দেবী ডুবাচ্ছে আর উলু ধ্বনির মধ্য দিয়ে কেঁদে আকুল হচ্ছে!কেউ বা নীরবে চোখ মুচ্ছে!
প্রথমে বুঝতাম না! একদিন একজনকে জিজ্ঞেস করতেই বলেছিল-- এক বছরের জন্য মা বিদায় নিলো! তাই কাঁদছে! মাটি দিয়ে গড়া একটি প্রতিমার মধ্য দিয়ে মায়ের প্রতি তাদের এতো ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা,মমত্ববোধ থাকতে পারে! আমার ও দুচোখ ফেটে জল পড়েছিল সেদিন! এরপর বান্ধবীর গলা চেপে ধরে কত যে কেঁদেছি প্রতিবছর দেবী বিসর্জনের সময়!

যা স্মৃতি আমার কাছে, তা আজ সার্বজনীন বাঙালির ঐতিহ্যও বটে!
দেবীর আলোকোজ্জল, বর্ণচ্ছটা আগমন যেমন আনন্দ ও স্বপ্নের মহিমায় উজ্জ্বল, ঠিক তেমনি তার বিসর্জন ও কষ্ট এবং বিস্বাদে ভরা!
তারপর ও দেবীর এই আগমন ও বিসর্জনকে ঘিরে থাকে ভক্তদের আত্মিক বন্ধন,প্রেম, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা! এখানে ধর্মের কোন বিভেদ থাকেনা!
সর্বশেষে তাই বলতে হয় ‘ধর্ম যার যার, আনন্দ সবার।

 

শাহান আরা জাকির পারুল 
নাট্যকার, লেখক ও গবেষক

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top