সিডনী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১

লুব্ধ দুখী রে : ডঃ ময়ূরী মিত্র


প্রকাশিত:
৪ জানুয়ারী ২০২২ ০১:২০

আপডেট:
৪ জানুয়ারী ২০২২ ০১:২২

ছবিঃ ডঃ ময়ূরী মিত্র

 

রিহার্সাল সেরে বাড়ি ফিরছিলাম। সন্ধে হয় হয়। দেখি, ফুটপথের ওপর এক রুটিওয়ালা তোলা উনুনে আঁচ দিয়েছে। আগুনপানা কয়লায় পাখা দিয়ে হাওয়া চালাচ্ছে। ধোঁয়া বেরোচ্ছে খুব। বড় রাস্তায় এসে ছড়িয়ে যাচ্ছে চারদিকে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম।
বহুদিন বাদে সন্ধেকালে তোলা উনুনের আঁচ জিভে রস এনেছিল আমার। তপ্ত লোহার চাটু বসিয়ে রুটি শুরু করল রুটিওয়ালা। অন্যমনস্ক হাতটা বাড়ালাম হেংলুর মতো।

সেই কতকাল আগের কথা। বিকেল গড়ালেই পেট ভর্তি খিদে। তোলা উনুনে আঁচটি কেবল ধরিয়েছেন ঠাকুমা। কোক কয়লার ধোঁয়ায় চোখে জল গড়াত। তার মধ্যেই ছোট ছোট হাতে বেলে চলেছি হাতি ঘোড়া রুটি। ঘোড়ার শেপ হলেই তাতে লাগিয়ে দিতাম একতাল ময়দা চামর। আর হাতি হলেই তাতে লাগত দুটো ময়দার দাঁত। তারপর "ঝোল বেশি আলু কমের" আলুর দম দিয়ে পশুপক্ষী রুটি খেয়ে যাওয়া। হাতি ঘোড়া পাখির পাখা সব পেটে।- মনে আসছে।

ওগো আমার সব যে মনে আসছে !

হাঁ করে দেখছে আমায়, নতুন জামা না হওয়া শিশু।
পথের শিশু কিংবা পথের ধারে ঘর।
আমার কাণ্ড দেখে হা হা করে হাসছে আবার।
গাছের তলায় দুচারটে ফুল ওদের সিঁথিকাটা মাথায় বসিয়ে বললাম - হাসবিও না নড়বিও না। তাহলে কিন্তু ফুলগুলো ফের মাটিতে চলে যাবে।
ব্যাস। কলহীন পুতুলের মতো fixed হয়ে গেল ওরা। শুধু চোখ ঘুরিয়ে দেখছে নিজেদের চারপাশ।

পুজোর বাদ্য ও দৌলতের মাঝে নিজেকে ও ওদের আরো দীন দেখতে ইচ্ছে জেগেছিল।

মনের ইচ্ছে টের পেয়ে বৈকাল স্তম্ভিত।

 

ড. ময়ূরী মিত্র 
পশ্চিম বঙ্গ, ভারত

 

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top