সিডনী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


মরদেহের বেশিই এসেছে সৌদি ও মালয়েশিয়া থেকে


প্রকাশিত:
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:৫৮

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৯:৪১

 

প্রভাত ফেরী: বিভিন্ন কারণে প্রবাসে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে অনেকেরই মৃত্যু হচ্ছে । এর বেশির ভাগ প্রবাসী কর্মীর মৃত্যুর কারণ স্ট্রোক ও হৃদরোগ। গত বছর বিভিন্ন দেশে মারা যাওয়া প্রবাসীদের মধ্যে ফেরত এসেছে ২ হাজার ৮৮৪ জনের মরদেহ। এর অর্ধেকের বেশিই এসেছে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া থেকে।
এ দুটি দেশের বাইরে কুয়েত থেকে ২৭২ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২৪৭, বাহরাইন থেকে ৮২, কাতার থেকে ১৬৪, ওমান থেকে ২৮০, সিঙ্গাপুর থেকে ২৭, জর্ডান থেকে ২৫, যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুই, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১২, ইতালি থেকে ৩৪, লেবানন থেকে ৫৫, গ্রিস থেকে পাঁচ, মালদ্বীপ থেকে ২৩, মরিশাস থেকে ১৮, স্পেন থেকে চার, ইরাক থেকে ৩০, লিবিয়া থেকে ১৩ জন প্রবাসীর মরদেহ ফেরত এসেছে। এছাড়া বাকি মরদেহগুলো এসেছে অন্যান্য দেশ থেকে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩২টিরও বেশি দেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ২ হাজার ৮৮৪ জন কর্মীর মরদেহ। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৭৬২ জন প্রবাসীর মরদেহ। সৌদি আরবের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী কর্মীর মরদেহ ফিরিয়ে আনা হয়েছে মালয়েশিয়া থেকে। গত বছর দেশটি থেকে ফেরত এসেছে মোট ৬৯৬ জন প্রবাসীর মরদেহ।
প্রবাসে বৈধভাবে কর্মরত অবস্থায় যেসব শ্রমিক মারা যান, তাদের মরদেহই মূলত পরিবহনের ব্যবস্থা করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এজন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে লিখিতভাবে আবেদন করতে হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। অন্যদিকে বিদেশ থেকে প্রতিনিয়ত যেসব বৈধ প্রবাসী কর্মীর মরদেহ পৌঁছায়, তাদের দাফন ও পরিবহনের জন্য বিমানবন্দর থেকেই স্বজনদের হাতে ৩৫ হাজার টাকার চেক দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের এক কর্মকর্তা বলেন, ফেরত আসা অধিকাংশ মরদেহে মৃত্যুর কারণ হিসেবে হূদরোগ ও স্ট্রোকের তথ্য দেখা গেছে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা ও অন্যান্য কারণেও প্রবাসীরা মারা যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশি ব্যয়ে বিদেশে গিয়ে প্রত্যাশিত আয় না করতে পারার কারণেও মানসিক চাপে থাকছেন অনেকে। অধিকাংশ প্রবাসী শ্রমিকই দালালের প্রলোভনে বেশি ব্যয়ে বিদেশে যাচ্ছেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে বেশির ভাগ সময়ই তারা প্রত্যাশা অনুযায়ী বেতন পাচ্ছেন না, যা তাদের সব সময় মানসিক চাপের মধ্যে রাখছে। আকস্মিক মৃত্যুর অন্যতম কারণ এটি।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মোট ৩ হাজার ৬৫৮ জন বাংলাদেশী কর্মীর মরদেহ দেশে আনা হয়েছে।
এর আগে ২০১৮ সালে মোট ৩ হাজার ৭৯৩ বাংলাদেশী কর্মীর মরদেহ দেশে আনা হয়েছে। ২০১৭ সালে এ সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৩৮৭। এছাড়া ২০১৬ সালে এসেছিল ৩ হাজার ৪৮১, ২০১৫ সালে ৩ হাজার ৩০৭ ও ২০১৪ সালে ৩ হাজার ৩৩৫ জন বৈধ কর্মীর মরদেহ। অধিকাংশের ক্ষেত্রেই স্ট্রোক ও হূদরোগকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top