সিডনী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১


৫ টি দেশে প্রবাসী কর্মীদের নেয়া শুরু ১২ এয়ারলাইন্সের


প্রকাশিত:
১৭ এপ্রিল ২০২১ ২২:০১

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪৭

 

প্রভাত ফেরী:  প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরা নিশ্চিত করতে শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে পাঁচটি দেশে ফ্লাইট শুরু হয়েছে। এই পাঁচটি দেশ হচ্ছে— সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর। শুধু মাত্র প্রবাসী কর্মীরা এসব ফ্লাইটে যেতে পারবেন। আর বিদেশ থেকে আসলে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিইনে থাকতে হবে প্রবাসী কর্মীদের।

এদিকে পাঁচ দেশে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ১২টি এয়ারলাইন্সকে অনুমতি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এই ১২টি এয়ারলাইন্স হলো— বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স, ওমান এয়ার, সালাম এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, ইতিহাদ, এয়ার অ্যারাবিয়া, এয়ার অ্যারাবিয়া আবুধাবি, ফ্লাই দুবাই।

বেবিচক সূত্র জানায়, শনিবার থেকে এই পাঁচ দেশে অনুমতিপ্রাপ্ত ১২টি এয়ারলাইন্স প্রতিদিন ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এরইমধ্যে এসব এয়ারলাইন্সকে অনুমতি দিয়ে ইমেইল করেছে বেবিচক। এয়ারলাইন্সগুলো পয়েন্ট টু পয়েন্ট যাত্রী পরিবহন করবে। যাত্রার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যেক যাত্রীর আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে।  ঢাকা থেকে যাত্রী নেওয়ার ক্ষেত্রে ছোট উড়োজাহাজে ফ্লাইট পরিচালনায় কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু  বড় উড়োজাহাজে ২৮০ জন করে যাত্রী নেওয়া যাবে। তবে বোয়িং ৭৭৭ এবং বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজের ক্ষেত্রে ৩২০ জন যাত্রী নেওয়া যাবে।  অপরদিকে দেশে আসার ক্ষেত্রে ছোট উড়োজাহাজে সর্বোচ্চ ১০০ জন এবং বড় উড়োজাহাজে ১৫০ জনের বেশি যাত্রী আনা যাবে না।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, ‘নিয়মিত যে ফ্লাইট শিডিউল ছিল, আমরা  বিশেষ বিবেচনায় এটা চলাচলের অনুমতি দিচ্ছি। ১৭ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ফ্লাইট শুরু হবে।’

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স রিয়াদ, দাম্মাম, জেদ্দা, দুবাই, আবুধাবি, মাস্কাট, দোহা ও  সিঙ্গাপুর গন্তব্যে  ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে। এয়ারলাইন্সটির উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার জানান, যাত্রীদের করোনার নেগেটিভ সনদসহ যাত্রার ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে উপস্থিত  হওয়ার জন‍্য বিনীত অনুরোধ জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লকডাউনে আটকে পড়া প্রবাসী কর্মীদের জন্য বিশেষ ফ্লাইট চালু হচ্ছে ১৭ এপ্রিল। বৃহস্পতিবার সন্ধায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে মন্ত্রী পর্যায়ের জরুরি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার এ সিন্তান্ত গৃহীত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এই পাঁচটি দেশে গমনেচ্ছু প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে যাদের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ইস্যু করা বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স রয়েছে, তাদেরকে বিদেশ গমনে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে এসব দেশের ক্ষেত্রে যাদের ভিজিট ভিসা আছে, কিন্তু বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স নেই, তারা বিদেশ গমনে অগ্রাধিকার পাবেন না। ভিজিট ভিসা নিয়ে যেসব বাংলাদেশি কাজের উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাবেন, তারা বিএমইটি’র ছাড়পত্র নিয়ে যেতে পারবেন।’

তবে চলমান লকডাউনের মধ্যে কীভাবে ‘বিএমইটির ছাড়পত্র’ সংগ্রহ করা যাবে তা জানানো হয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ‘বিগত তিন দিন ধরে যেসব যাত্রী টিকিট কেনা সত্ত্বেও লকডাউনের কারণে বিদেশ গমন করতে পারেননি, তাদেরকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ন্যাশনাল ক্যারিয়ারের অতিরিক্ত বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। যেসব যাত্রী ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম হতে ভ্রমণ করার জন্য টিকিট কিনেছেন, তাদেরকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কানেক্টিং ফ্লাইটের মাধ্যমে ঢাকায় আনা যাবে।’

কিন্তু এই যাত্রীদের বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা কোন মন্ত্রণালয় বা সংস্থা করবে, তা পরিষ্কার করে জানানো হয়নি। এমনকি এসব যাত্রী কোথায়, কার সঙ্গে, কীভাবে যোগাযোগ করবেন, তাও পরিষ্কার করা হয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ‘স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য অধিদফতর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিদেশগামী যাত্রীদের পিসিআর টেস্ট নির্বিঘ্নে এবং স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে ফলাফল প্রদান করবে। লকডাউন চলাকালে উল্লিখিত পাঁচটি দেশ ব্যতীত অন্যান্য দেশে যারা জরুরি প্রয়োজনে যেতে চান, তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র সাপেক্ষে ট্রানজিট-প্যাসেঞ্জার হিসেবে বিশেষ ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে পারবেন।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘প্রবাসী কর্মী যারা বিমানবন্দরে যাবেন, তারা সঙ্গে পাসপোর্ট, ভিসা, বিমানের টিকিট, বিএমইটি কার্ড সঙ্গে রাখবেন। লকডাউনের মধ্যে পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এসব দেখালে তাদের চলাচলে সহযোগিতা করবে।’

কিন্তু যাত্রীরা কীভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র সংগ্রহ করবেন, তারও কোনও সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি জানানো হয়নি।

দেশে আসলে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন

প্রবাসী কর্মীদের লকডাউন চলাকালে দেশে আসার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায়। সিদ্ধান্ত হয়, দেশে আসার সময় প্রত্যেক যাত্রীর বাধ্যতামূলকভাবে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকতে হবে। করোনার জন্য ভ্যাকসিন নিলেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে আসলে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে  হবে। বিদেশ ফেরত যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ (দিয়াবাড়ি), চট্টগ্রাম ও সিলেটে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে।

সূত্র জানায়, দেশে আসার আগে বিদেশের বিমানবন্দরে বোডিং কার্ড নেওয়ার সময় কোয়ারেন্টিনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে প্রবাসীকে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ পরিচালিত কোয়ারেন্টিন সেন্টারে বিনামূল্যে থাকতে পারবেন প্রবাসীরা। তবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের কোয়ারেন্টিন সেন্টার খালি না থাকলে হোটেলে নিজ খরচে কোয়ারেন্টিনের জন্য বুকিং করতে হবে।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top