সিডনী শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া ঝুলে আছে তিন ইস্যুতে


প্রকাশিত:
১ মার্চ ২০২২ ০১:৫১

আপডেট:
৩ মে ২০২৪ ১৭:১১

 

প্রভাত ফেরী: সম্ভবানাময় মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মী যাওয়া ঝুলে আছে তিনটি ইস্যুতে। এর মধ্যে বাংলাদেশের একটি আপত্তি, একটি প্রস্তাব বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই দুটি বিষয়ের সমাধান করতে শিগরিরই যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক ডাকার অনুরোধ বাংলাদেশের।

১৮ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে দেশটির পররাষ্ট্র ও মানসম্পদ মন্ত্রী বরাবর চিঠি দেয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

চিঠিতে মূলত, রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা নিয়ে মালয়েশিয়া যেই প্রস্তাব দিয়েছিল, তা সমঝোতা স্মারকের সাথে সংঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে উল্লেখ করা হয়।

দ্বিতীয়ত, বিদেশি কর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়া সরকারের কেন্দ্রীয় অনলাইন পদ্ধতির সাথে বাংলাদেশের অনলাইন পদ্ধতি যুক্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়।

আর এই দুটি ইস্যুর সমাধানে দ্রুত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের একটি বৈঠক আয়োজন করতে মালয়েশিয়া সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

১৮ ফেব্রুয়ারির সেই চিঠির পর ১০ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কোন জবাব দেয়নি মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

এর আগে গেল ১৪ জানুয়ারি মালয়শিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানান বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদকে একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে মালয়শিয়া প্রস্তাব দেয়, বাংলাদেশের ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির সাথে আরো ২৫০ টি রিক্রুটিং এজেন্সি সহযোগী হিসেবে কর্মী পাঠাতে পারবে।

মালয়েশিয়ার এই প্রস্তাবে তখনই আপত্তি জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। ১৮ জানুয়ারি ফিরতি চিঠিতে আপত্তির পাশাপাশি সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে রিক্রুটিং এজেন্সি বাছাইয়ের প্রস্তাব দেন ইমরান আহমদ। সেই চিঠির জবাবে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী কিছু কারণ ও ব্যাখ্যাসহ আরেকটি চিঠি দেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীকে। মালয়েশিয়ার ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে নিজেদের কিছু প্রস্তাবনা দিয়ে হাইকমিশনারের মাধ্যমে আবারো চিঠি দেয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের এই প্রস্তাবের জবাব না দিলেও, ভারত, নেপাল ও ইন্দোনেশিয়া থেকে কর্মী নিতে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে মালয়েশিয়া সরকার। এরইমধ্যে ভারতের সাথে প্ল্যান্টেশন খাতে কর্মী নেয়ার সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শ্রমবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দ্রুত বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া মধ্যে চলমান মতভিন্নতা দূর না হলে, চাহিদা পূরণে বিকল্প দেশ থেকে কর্মী নেয়া শুরু করতে পারে মালয়েশিয়া।

২০১৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর বন্ধ হওয়ার ৪০ মাস পর, গেলো বছরের ১৯ ডিসেম্বর সমঝোতা স্মারক সইয়ের মাধ্য দিয়ে আবারো বাংলাদেশের জন্য কর্মী পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু দুই মাস পার হলেও চিঠি চালাচালিতেই ঝুলে আছে কর্মীদের ভাগ্য।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের কর্মী পাঠানোর বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ সবশেষ জানিয়েছেন, দেশ ও কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করে শ্রমবাজারটি চালু করা হবে। এজন্য বিভিন্ন দিক যাচাই-বাছাই ও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কর্মীদের স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন কোনো পদক্ষেপ তিনি নেবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দেন। সময় লাগলেও কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করেই মালয়েশিয়া শ্রমবাজার চালু হবে বলে আশা করেন তিনি। এজন্য কর্মীদের ধৈর্য ধরার আহবান জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top