সিডনী শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


ভিসা সংক্রান্ত প্রচলিত কিছু জালিয়াতি


প্রকাশিত:
১২ জুন ২০১৯ ০০:৩৭

আপডেট:
১৭ মে ২০২৪ ১৪:৪৩

ভিসা সংক্রান্ত প্রচলিত কিছু জালিয়াতি

প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পৃথিবীজুড়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করছেন। প্রত্যেকেরই জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি নিতে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড় করতে তারা সময় ও অর্থ ব্যয় করছেন। অন্যদিকে এ সুযোগটিই নিচ্ছে অনেকগুলো প্রতারকচক্র। অস্ট্রেলিয়ার ভিসাকে কেন্দ্র করে নানা দেশে নানারকম জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে।



অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করতে গিয়ে যারা এ ধরণের নানা জালিয়াতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন, তাদের কাছ থেকে ঘটনাগুলো জানতে পারে সেসব দেশে কর্মরত দেশটির হাইকমিশন কিংবা দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এসব ঘটনার মাঝে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত কয়েকটি ধরণের উদাহরণ নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশ করেছে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্স। প্রভাতফেরীর পাঠকদের উপকার ও সচেতনতা সৃষ্টির জন্য জন্য ভিসা জালিয়াতির সর্বাধিক প্রচলিত এ পদ্ধতিগুলো তুলে ধরা হলো।



ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভিসার পেতে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে অনেক স্থানে। সম্প্রতি ফাতেমা নামের একজন ভিসাপ্রত্যাশী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটের খোঁজ পায়। সে ওয়েবসাইটের যোগাযোগ ঠিকানা ছিলো অস্ট্রেলিয়ার, তাই সে এটিকে নির্ভরযোগ্য মনে করে। প্রাথমিকভাবে রেজিস্ট্রেশন করে ব্যক্তিগত তথ্য দেয়ার পর সে একটি ফোন পায়, তাকে বলা হয় প্রাথমিক বিবেচনায় ফাতেমার সব যোগ্যতা আছে সুতরাং তার ভিসা হয়ে যাবে খুব দ্রুতই। তবে এর খরচ হিসেবে তাকে ছয়শ ডলার ফি দিতে হবে। এ টাকা পরিশোধ করার পর সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে যখন ফাতেমা তার ভিসার জন্য আবেদন করে তখন এ বিষয়টি উল্লেখ করে তথ্য যোগাড়ের চেষ্টা করলে দেখা যায় ওয়েবসাইটে দেয়া ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার সবই প্রকৃতপক্ষে ভুয়া।



এছাড়াও ভিসাসংক্রান্ত প্রতারণার আরেকটি মাধ্যম হলো আনরেজিস্টার্ড এজেন্ট। ইউলিয়াম একজন ছাত্র এবং সে একটি এডুকেশন এজেন্ট কোম্পানীর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করে। অথচ সেই এজেন্টের অস্ট্রেলিয়াতে কোন রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ছিলো না। তারা বিভিন্ন ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে গোঁজামিল করে উইলিয়ামের কাছ থেকে প্রচুর টাকা আদায় করেছে কিন্তু শেষপর্যন্ত ভিসা করে দিতে ব্যর্থ হয়েছে।



খারাপ কিংবা অসৎ উপদেশের কারণেও এক্ষেত্রে অনেকে বিপদে পড়ে। পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির জন্য আবেদন করার সময় এমি তার এক বন্ধুর উপদেশ শুনে এমন কিছু কাগজ জমা দেয় যাতে ভুল তথ্য ছিলো। কিন্তু ডিপার্টমেন্টের তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়ে যাওয়ার পর এমির ভিসা বাতিল করে তাকে অস্ট্রেলিয়া থেকে বের করে দেয়া হয়।



ভিসা জালিয়াতির প্রচলিত আরেকটি পদ্ধতি হলো অনলাইন রোমান্স বা প্রেমের ফাঁদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাশেদ এশিয়ার একটি দেশের একজনের প্রেমে পড়ে এবং সম্পর্ক তৈরি হয়। এক সময় মেয়েটি অস্ট্রেলিয়ায় এসে রাশেদকে বিয়ের কথা জানালে তার বিমান টিকেট সহ বিভিন্ন খরচের টাকা পাঠিয়ে দেয় রাশেদ। ভ্রমণের নির্ধারিত দিনে মেয়েটি তাকে জানায়, সে সাথে করে অনেক দামী অলংকার ও জিনিসপত্র আনার সময় কাস্টমস তাকে আটকে দিয়েছে। এখন রাশেদ যদি নিজে সেদেশে যায় তাহলে তাকে ছাড়িয়ে আনতে পারবে। সেখানকার স্থানীয় হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করার তারা রাশেদকে জানায় একই ধরণের বানোয়াট ঘটনায় বিশ্বাস করে ভ্রমণ করে যাওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে অন্তত কয়েকডজন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক সেখানে অপহরণ ও ছিনতাইয়ের ঘটনার শিকার হয়ে স্বর্বস্ব হারিয়েছে।



উপরের প্রতিটি ঘটনাতেই অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ তাদের আইনী আওতার ভেতরে তদন্ত এবং অপরাধীদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্য কাজ করছে। কিন্তু এমন ঘটনার শিকার হওয়া থেকে বাঁচার জন্য সচেতনতা এবং স্বাভাবিক বিষয়বুদ্ধি কাজে লাগানো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।



 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top