সিডনী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১


গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’  - মু: মাহবুবুর রহমান 


প্রকাশিত:
২০ মার্চ ২০২১ ২১:২৪

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৩৭

 

গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বিকেলে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ওয়েবসাইটে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘ক্রপ ফিল্ড মোজাইক’ হিসেবে যুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে চীনের রেকর্ড ভাঙল বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে চীনের ফসলের মাঠে তৈরি একটি চিত্রকর্মের আয়তন ছিল আট লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট। আর ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ চিত্রকর্মটির আয়তন ১০০ বিঘা অথবা ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট। 

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ ফুটিয়ে তুলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখানোর উদ্যোগটি নিয়েছিল শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদ। এই পরিষদের আহ্বায়ক ও পৃষ্ঠপোষক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। আর এটি বাস্তবায়ন করেছে ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। 

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ শিল্পকর্মটি বানানো হয়। ১০০ বিঘা ধানক্ষেতে পুরো আয়তনজুড়ে অবস্থান করছে এই ক্যানভাস। আয়োজকরা জানান, শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান দিতে গত বছর থেকে কাজ শুরু হয়।  

চীন থেকে আমদানি করা হয় বেগুনি রঙের (এফ-১) ও দেশি সবুজ হাইব্রিড ধানের চারা। ড্রোন ব্যবহার করে ম্যাপ করে স্কেচ তৈরির পর টানা দেড় মাস ধরে চলছে এই বিশাল কর্মযজ্ঞ। আশপাশের অর্ধশতাধিক কিষান-কিষাণি, ১০০ রোভার স্কাউট সদস্য এই কর্মযজ্ঞে যোগ দেন। যাদের নেতৃত্ব দেন আটজন কৃষি প্রকৌশলী ও কৃষি কর্মকর্তা। এছাড়া এতে কাজ করেছে শস্যে কীটতত্ত্ব-রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ আরও অনেকে। 

জানা গেছে,  বেগুনি ও সবুজ রঙের দুই ধরনের হাইব্রিড ধানের চারা রোপনের পর থেকে ধান পাকার আগ পর্যন্ত নানা রূপ ধারণ করবে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’। ১৪৫ দিনে এই ধান ঘরে উঠবে। ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ যে ১০০ বিঘা জমিতে তৈরি করা হয়েছে তাতে প্রায় তিন হাজার মণ ধান মিলবে বলে জানা গেছে। একটি সবুজাভ সোনালি আর অন্যটি বেগুনি রঙের ধান। ধান উৎপাদনের সাথে সাথে রচিত হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি নিয়ে এক নতুন ইতিহাস। 

ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বগুড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম বালেন্দা। এই গ্রামের মানুষের উৎসাহে মাটির ক্যানভাসে ধানের চারা দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে, আঁকা হয়েছে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ শিল্পকর্ম। শিল্প-সমালোচক মঈনুদ্দীন খালেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এটি একটি বিশাল ইন্সটলেশন আর্ট, বাংলায় যাকে বলা হয় স্থাপনা শিল্প। এভাবে ধানের চারা দিয়ে শিল্পসৃষ্টি একেবারেই নতুন ভাবনা। এটিকে নিউ মিডিয়া বলা যেতে পারে। এই স্থাপনা শিল্পে দেশের প্রধান শস্য ধানের সঙ্গে জাতির পিতার সম্পর্ক সৃষ্টি করেছে। মাটি আমাদের সম্পদ আর এই মাটি থেকেই যে মানুষটি উঠে এসেছেন তিনি বাংলাদেশের স্থপতি।’ 

‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে স্থান পাওয়ায় এর মূল উদ্যোক্তা আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে এটা আমাদের বড় অর্জন।  দেশের জন্য বড় অর্জন। বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে এটিও তার একটি মাইলফলক। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মর্যাদার জায়গাটা আরও প্রশস্ত হলো।’’ 

 

মু: মাহবুবুর রহমান  
নিউজিল্যান্ডের মেসি ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top