সিডনী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১


ডা. মুরাদের ফোনালাপ বিষয়ে ইমনকে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদ


প্রকাশিত:
৭ ডিসেম্বর ২০২১ ২২:০৭

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩৩

 

প্রভাত ফেরী: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির ফাঁস হওয়া ফোনালাপের বিষয়ে চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল তাকে। সেখানে তার সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট কথা বলেন ডিবি কর্মকর্তারা। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ডিবির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মাহি এই মুহূর্তে ওমরাহর জন্য সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। তাই প্রাথমিকভাবে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ কারণে ইমনকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। উনি ফোনালাপের বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তবে প্রাথমিকভাবে তার কোনো ইল মোটিভ (খারাপ উদ্দেশ্য) পাওয়া যায়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, মাহি দেশে ফিরলে বিষয়টি নিয়ে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাহি ও মুরাদ হাসানের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। সেই ফোনে অশ্লীল-আপত্তিকর ভাষায় মাহির সঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। এসময় তিনি মাহিকে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। নিজের অনৈতিক ইচ্ছার কথা জানান। এমনকি চিত্রনায়িকাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেন।
সেদিন মাহির সঙ্গে ছিলেন চিত্রনায়ক ইমন। তিনি বলেন, ‘একজন মন্ত্রী বারবার ফোন দিচ্ছেন আমি না ধরে তো থাকতে পারি না। তাই অনুষ্ঠানের মধ্যেই ধরেছি। বাকি আলাপ তো সবাই শুনেছেন। উনার আলাপ শুনেই কিন্তু আমি বাধ্য হয়ে বলেছি, হ্যাঁ, ভাই আসতেছি। দেখছি ভাই। খারাপ কিছু বলিনি।’
‘উনি কল দেওয়ার অনেক সময় পার হয়ে গেছে। আমি কিন্তু বারবার বলছি, দুই মিনিট ভাইয়া, নামছি। আমি চাইছিলাম যেন উনি ফোনটা রাখেন। মাহির সঙ্গে কি আলাপ হয়েছে সেটা কিন্তু আমি জানতে পারিনি। কারণ আমি মাহির হাতে ফোন দিয়ে ডিরেক্টরের সঙ্গে আলাপ করছিলাম। মাহি কিন্তু আমাকে কিছুই বলেনি এ ব্যাপারে। এখন অডিওটা শুনে আমি জানতে পারলাম সেদিন মাহি কতোটা বিব্রত ছিল।’
এদিকে ঘটনার বিষয়ে সৌদি আরব থেকে মাহি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমি এখন পবিত্র হারাম শরিফে আছি। ওমরাহ পালন করছি। আমি যেটা বলার জন্য ভিডিওটা করছি। আমি সেদিনও বলেছিলাম। বিকৃত এবং কুরুচিপূর্ণ ব্যবহার ও ভাষার প্রতি-উত্তরের ভাষা আমার জানা ছিল না। এটা দুই বছর আগের ঘটনা। তখন আমি শুধু আল্লাহর কাছে বলেছিলাম।’
মাহি আরও বলেন, ‘আমি আরও একবার দেশবাসীর কাছে ছোট হলাম। কিন্তু আপনারা নিজের থেকে একটু চিন্তা করে দেখবেন, এই ভাষার প্রতিত্তোর কী দেওয়া উচিত ছিল? সেদিন আমার আসলে কিছু বলার ভাষা ছিল না। তাই সেদিন কিছু বলিনি। আমি সেদিন চুপ থেকেছি পাশ কাটিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘এটা (প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথন) ঠিক দুই বছর আগের ঘটনা। আমি বরাবরের মতোই সব সময় আল্লাহর কাছে বলি যে, আল্লাহ আমি কষ্ট পেয়েছি। যার মাধ্যমে কষ্ট পেয়েছি। কোনো না কোনোভাবে তিনি তার রেজাল্ট (ফল) পেয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ।’
মাহিয়া মাহি বলেন, ‘আমি সাংবাদিক ভাইদের বলছি, দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার জায়গা থেকে আপনারা বিষয়টি চিন্তা করেন। আমি আসলে এখন কারও ফোন রিসিভ করছি না। আমি যেখানে আছি, এখানে আসলে এ বিষয়ে কথা বলার মতো না। সবাইকে ধন্যবাদ।’
সম্প্রতি তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান এবং তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে অসৌজন্যমূলক কথা বলেন। এর আগেও তিনি বিভিন্ন সময়ে আপত্তিকর কথা বলেছেন। যা নিয়ে বেশ সমালোচনা-আলোচনা হয়।
সবশেষ সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top