সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৪ই চৈত্র ১৪৩০


গ্রাম ও শহরে সমানভাবে উন্নয়ন হবে: প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত:
২৭ জানুয়ারী ২০২০ ২২:৩৫

আপডেট:
২৮ জানুয়ারী ২০২০ ০৫:০৭

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু রাজধানী নয়, গ্রাম পর্যন্ত উন্নয়ন না করলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই গ্রাম ও শহরকে সমানভাবে উন্নয়ন করা হবে। রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড উদ্বোধন শেষে সাধারণ জনগণের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার দুটি পানি শোধন প্রকল্প, দুটি সেতু এবং কয়েকটি ট্রেন সার্ভিসসহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে তৃণমূলে সাধারণ জনগণের উন্নতিকে দেশের সার্বিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূলের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ছাড়া কখনও একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, একটা দেশের সার্বিক উন্নয়ন করতে হলে শুধু রাজধানীভিত্তিক উন্নয়ন করলেই হবে না, একেবারে গ্রামের মানুষ, তৃণমূলের মানুষদের উন্নতি করতে হবে।

প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু ও পূর্ব-তারাকান্দি-জামালপুর-ঢাকা রুটে একজোড়া নতুন আন্তঃনগর ট্রেন ‘জামালপুর এক্সপ্রেস’, ঢালারচর-পাবনা-রাজশাহী রুটে ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ ও ফরিদপুর রুটে ‘রাজবাড়ী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের রুট বর্ধিতকরণ এবং চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে উদয়ন ও পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের র‌্যাক পরিবর্তন কার্যক্রম।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ডিজিটাল আর্থিক সেবা প্রদানের জন্য মোবাইল অ্যাপসভিত্তিক ‘পল্লী লেনদেন’ কার্যক্রম, এলজিইডি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘গুরুত্বপূর্ণ ৯টি ব্রিজ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় ১৫ হাজার মিটার চেইনেজে তিতাস নদীর ওপর ৫৭৫ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু এবং মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলাধীন মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর আরএইচডি রাস্তায় কালীগঙ্গা নদীর ওপর ৪৫৬ মিটার পিসি গার্ডার সেতু উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ছাড়াও চট্টগ্রাম ওয়াসার চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) আওতায় নির্মিত ‘শেখ রাসেল পানি শোধনাগার’ এবং খুলনা ওয়াসার ‘খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প’-এর আওতায় নবনির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ ও বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ১২ ঘণ্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই হলো বর্তমান সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য। এ কারণে সারা দেশে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। শহর ও গ্রামের মানুষকে সমান সুযোগ তৈরি করে দিতে সরকার কাজ করছে।

অর্থমন্ত্রী এএইচএম মুস্তাফা কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং সাবেক কৃষিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মজিবুর রহমান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম এবং তথ্য সচিব কামরুন্নাহার তাদের মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।

সূচনা বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের উপকারভোগী, চট্টগ্রামের পানি শোধনাগারের উপকারভোগী, খুলনা পানি শোধনাগারের উপকারভোগী, চট্টগ্রামে টেলিভিশনের উপকারভোগী ও জামালপুরের রেল ব্যবহারকারী উপকারভোগীদের সঙ্গে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমরা দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করছি। অথচ পঁচাত্তরের পরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা রেললাইন বন্ধ করে দিয়েছে। মিলিটারি ডিক্টেটররা যখন ক্ষমতায় আসে তখন মুষ্টিমেয় মানুষ বড়লোক হয়। কিন্তু দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য খোলে না। বিগত দিনে তাই হয়েছে। দেশের উন্নয়নও থমকে গিয়েছিল।

তিনি বলেন, আজ যে অ্যাপসের উদ্বোধন করা হলো তা ব্যবহার করে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের একজন মহিলা মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারবে। গ্রামের একজন নিঃস্ব মহিলা যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে সে জন্য আমরা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প চালু করেছি। এর মাধ্যমে আজ বাংলাদেশের অনেক অবহেলিত নারী উপকৃত হয়েছে। তারা স্বাবলম্বী হয়েছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যোগাযোগের জন্য যে ব্রিজগুলো উদ্বোধন করছি, এই ব্রিজগুলো একটি উপজেলা এবং রাজধানীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজধানী এবং জেলা পর্যায়ে যোগাযোগ অত্যন্ত সহজ হয়ে যাচ্ছে।
পুরনো রেলসেতু মেরামতের নির্দেশ : অনুষ্ঠানে সারা দেশের সব পুরনো রেলসেতু দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবন থেকে সবুজ পতাকা উড়িয়ে জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফরিদপুর-ভাঙ্গা ও পাবনা-ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেলপথ, পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে নতুন কোচ প্রতিস্থাপন কার্যক্রমও উদ্বোধন করা হয়। সেই সঙ্গে চট্টগ্রামে শেখ রাসেল পানি শোধনাগার এবং খুলনায় বঙ্গবন্ধু ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পানি শোধনে অনেক অর্থ খরচ হয়। তাই জনসাধারণকে পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দেশের জরাজীর্ণ সব রেল সেতু ভালোভাবে মেরামতের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ডিজিটাল আর্থিক সেবা লেনদেন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top