সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৪ই চৈত্র ১৪৩০


শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় ইসলাম : মোঃ শামছুল আলম


প্রকাশিত:
১ মে ২০২১ ১৯:০৫

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৯:২৫

 

ইসলাম কালজয়ী ও শাশ্বত এক জীবন-ব্যবস্থার নাম। মানুষের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষার পুরো নিশ্চয়তা বিধান করেছে ইসলাম। আরবের তথা গোটা বিশ্বেই যখন অরাজকতার অন্ধকার বিরাজিত ছিল, তখনই সত্য, ন্যায় ও সাম্যের আলোকবর্তিকা নিয়ে বিশ্বমানবতার পরম সুহৃদ হিসেবে প্রবর্তিত হয়েছিল এই কালজয়ী ইসলাম। যেখানে প্রতিটি মানুষের শুধু নয় বরং প্রতিটি সৃষ্টির অধিকার স্বীকৃত হয়ে আছে। পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান উন্নয়নে যে উপকরণটি সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক সেটি হচ্ছে শ্রম আর নিরলস শ্রমের পরাকাষ্ঠা যারা বহন করেন তারাই শ্রমিক।

ইসলামে শ্রম ও শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা যথাযথভাবে স্বীকৃত। অধীনদের সম্মানের চোখে দেখার পাশাপাশি ইসলাম তাদের খাদ্য, পোশাক, বাসস্থান, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা লাভের অধিকার দিয়েছে। ইসলামের বিধান হলো, বাড়ির অন্য সদস্যের মতো অধীনরাও অভিন্নভাবে জীবন যাপন করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন, তোমরা অধীনস্থ ভৃত্য ও মজুরদের সম্পর্কে সাবধান থাকবে! তোমরা যা খাবে তাদেরও তা-ই খেতে দেবে, আর তোমরা যেমন পোশাক পরিধান করবে, তাদেরও তেমন পোশাক পরতে দেবে। (সহিহ বুখারি)

মানুষের ইহকালীন জীবনের উন্নতির উচ্চশিখরে আরোহণ করার মূল হচ্ছে তার পেশা ও কর্মদক্ষতা। মানব জাতির অস্তিত্ব, প্রগতি, সভ্যতা ও উন্নয়ন-সবকিছুর মূলে রয়েছে শ্রম। তাই বলা হয়, "পরিশ্রমই সৌভাগ্যের প্রসূতি"। কাজেই পরিশ্রম করা ছোট কাজ নয়, তা মানুষের মর্যাদাসম্পন্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ক্ষুদ্র-বৃহৎ সব পেশা বা কার্যসম্পাদনের জন্যই মানুষকে অল্প-বিস্তর পরিশ্রমী হতে হয়। পার্থিব জগতে কোনো উন্নতি শ্রম ব্যতিরেকে সম্ভব হয়নি। তাই ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমের গুরুত্ব ও মর্যাদা অত্যন্ত তাৎপর্যময়।

হজরত আদম (আ) থেকে শুরু করে সর্বশেষ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স) পর্যন্ত সব নবী-রাসূল নিজ হাতে কাজ করতেন। স্বহস্তে কাজ সম্পাদন করা অতিশয় উত্তম। রসূলুল্লাহ (স) শ্রমের প্রতি অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ ও শ্রমিকের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে বাণী প্রদান করে বলেছেন, ‘উত্তম উপার্জন হলো  কর্মীর হাতের (শ্রমের) উপার্জন, যখন সে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে।’

নবী করিম (স) নিজে শ্রম ব্যয় করে জীবিকা অর্জন করতেন। একদা তিনি তাঁর ফোস্কা পড়া পবিত্র হাত দেখিয়ে সাহাবায়ে  কেরামদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘এটি এমন একটি হাত, যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল পছন্দ করেন।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘নিজের হাতের কাজ ও শ্রম দ্বারা উপার্জিত খাদ্য খাওয়া অপেক্ষা উত্তম খাদ্য কেউ খেতে পারে না।

মানবজীবনের নানা রকম প্রয়োজনে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার উদ্ভব। দরিদ্র মানুষরা আর্থিক প্রয়োজনে ধনীদের দ্বারস্থ হয়; কিন্তু ধনীদের জীবনের একটি প্রহরও চলতে পারে না গরিব মানুষের সহযোগিতা ছাড়া। এই যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা, এটিই সামাজিক বন্ধন। আর এ বন্ধন যদি আন্তরিকতা ও মানবিক বোধের দ্বারা সংরক্ষিত হয়, তাহলেই সমাজে শান্তি স্থায়ী রূপ পায়।

ইরশাদ হয়েছে, হে মানবমণ্ডলী! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি একজন নারী ও একজন পুরুষ থেকে এবং তোমাদের বিভিন্ন গোত্র ও শ্রেণিতে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পারো। নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত, যে সবচেয়ে বেশি মুত্তাকি। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু জানেন, সব খবর রাখেন। (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১৩)
বর্তমানে আমাদের সমাজে শ্রমিকরা বঞ্চিত ও লাঞ্চিত। মাসের পর মাস চলে যায় শ্রমিকরা বেতন পায় না। বেতনের দাবিতে শ্রমিককে মালিকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হয়। শ্রমিকের বেতন-ভাতার ব্যাপারে বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, “শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তাদের প্রাপ্য মজুরি পরিশোধ কর।” শ্রমজীবী মানুষ বা কোনো শ্রমিক অবসর নেয়ার পর তার বাকি জীবন চলার জন্য অর্থনৈতিক সুবিধা বা পেনশনের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে হযরত ওমর (রাঃ) বলেছেন, “যৌবনকালে যে ব্যক্তি শ্রম দিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের খেদমত করেছেন বৃদ্ধকালে সরকার তার হাতে ভিক্ষার ঝুলি তুলে দিতে পারে না"।

ইসলামে সকল ধরনের শ্রমকেই সম্মান দেয়া হয়েছে। হাদীসে শ্রমদ্বারা উপার্জনকারী ব্যক্তিকে আল্লাহর বন্ধু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইসলাম শ্রমকে উৎপাদন ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ হিসেবে বিবেচনা করে। উৎপাদনের ক্ষেত্রে একজনের পুঁজি ও অন্য জনের শ্রমকে একত্র করে পাস্পরিক চুক্তিভিত্তিতে লভ্যাংশ বণ্টন করে নেয়াকে ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে শ্রম-মালিক ও পুঁজি-মালিক উভয়ই উৎপাদনে মালিক হন। এছাড়া মজুরিভিত্তিতে নিয়োগও অনুমোদন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে যোগ্যতার পাশাপাশি শ্রমিকের প্রয়োজনের প্রতিও দৃষ্টি রাখার কথা বলা হয়েছে।

আল্লাহর রসূল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের অধীনস্থরা তোমাদের ভাই, তোমরা যা খাবে তাদেরকে তাই খেতে দিবে, তোমরা যা পরিধান করবে তাদেরকে তাই দিবে’। ভাইয়ের সম্পর্ক বিবেচনা করলে আর শোষণের প্রশ্ন উঠে না।

খাওয়া-পরার ক্ষেত্রে ইসলাম মালিক-শ্রমিকের একই মান বিবেচনা করে ন্যূনতম মজুরি এমন পরিমাণ নির্ধারণ করতে বলে যাতে সে সন্তোষজনক জীবন পরিচালনা করতে পারে। পারিশ্রমিক প্রদানের ক্ষেত্রে বিলম্ব ও হয়রানিকে কঠোর ভাষায় নিষেধ করা হয়েছে। রসূল (সা.) বলেছেন, ‘শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকাবার পূর্বেই তার পারিশ্রমিক প্রদান কর’।
তিনি আরো বলেন, ‘যে কোনো মজুরকে খাটিয়ে নিজের পুরোপুরি কাজ আদায় করে নেয় কিন্তু তার মজুরি দেয় না কিয়ামতের দিন আমি তার দুশমন হব। আর আমি যার দুশমন হব তাকে আমি লাঞ্ছিত ও বিপদগ্রস্ত করেই ছাড়বো।

রসূল (সা.) যখনই শ্রমিক-মালিকের সম্পর্ক বিষয়ে কথা বলতেন তখনই তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তেন আর বলতেন, ‘যারা তোমাদের কাজ করে তারা তোমাদের ভাই। আল্লাহ এদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন’। মালিককে সাবধান করে দিয়েছেন এই বলে, ‘তোমরা প্রত্যেকেই এক একজন দায়িত্বশীল। আর প্রত্যেকেই তার অধীনস্থ ব্যক্তিবর্গ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে’।

ইসলাম মালিকদেরকে শ্রমিকের সমস্যা বিবেচনার ক্ষেত্রে তাদেরকে আল্লাহর বান্দাহ, প্রতিনিধি ও বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করতে বলে। রসূল (সা.) বলেন, ‘তাদের উপর এমন কাজের বোঝা চাপিয়ে দিও না যা অত্যন্ত কষ্টকর। অগত্যা যদি করতেই হয়, তবে নিজে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে তাদেরকে সাহায্য কর’। নবী (সা.) আরো বলেন, ‘তোমরা অধীনস্থদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে এবং তাদেরকে কোনো কষ্ট দিবে না। তোমরা কি জান না, তোমাদের ন্যায় তাদেরও একটি হৃদয় আছে। ব্যথা দানে তারা দুঃখিত হয় এবং কষ্ট বোধ করে। আরাম ও শান্তি প্রদান করলে সন্তুষ্ট হয়। তোমাদের কি হয়েছে যে তোমরা তাদের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন কর না’।

হজরত (সা.) বলেন, ‘মজুর-চাকরদের অসংখ্যবার ক্ষমা করা মহত্তের লক্ষণ। তাদের অপরাধ প্রত্যেক দিন সত্তর বার হলেও ক্ষমা করে দিও’। শ্রমিকদের প্রতি মালিকের দায়িত্ব প্রসঙ্গে হাদীসে এসেছে, ‘তোমাদের কোনো ভৃত্য তোমাদের জন্য যখন খাদ্য প্রস্তুত করে নিয়ে আসে, তখন তাকে হাতে ধরে খেতে বসাও। সে যদি অস্বীকার করে তবে দু’এক মুঠো খাদ্য তাকে অবশ্যই দিবে’।
মৃত্যুর সময় রসূল (সা.)-এর মুখ দিয়ে যে শব্দ বেরিয়ে আসছিল তা ছিল-‘নামাজের প্রতি খেয়াল রাখ আর যারা তোমাদের অধীন তাদের অধিকার ভুলে যেও না’।

১ মে ১৮৮৬। এ দিনে আমেরিকার শিকাগো শহরে ৮ ঘণ্টা শ্রম'সময়সহ বিভিন্ন দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ৮ জন শ্রমজীবী মানুষ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তাদের সে আত্মদান বৃথা যায়নি। আজ সারা বিশ্বের মানুষ গভীর শ্রদ্ধাভরে তাদেরকে স্মরণ করে এবং ৮ ঘণ্টা শ্রম'সময়সহ উন্নত জীবনযাপনের লক্ষ্যে তাদের দাবিসমূহ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের। শ্রমিকের চাকরির নিরাপত্তা, উন্নততর পরিবেশ, জীবন ধারণোপযোগী বেতন-ভাতা ইত্যাদি বিষয়ে আন্তর্জাতিক মান থেকে বাংলাদেশ অনেক পেছনে রয়েছে। কারখানায় অগ্নিকাণ্ড, ভবন ধসসহ নানাবিধ দুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানি এখন একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের জীবনের মূল্য সবচেয়ে কম।
পুঁজিবাদ বলেন আর সমাজতন্ত্রই বলেন, শুধু কাগজে-কলমে আর বক্তৃতা-বিবৃতি ছাড়া শ্রমিকের উন্নয়ন চোখে পড়ে না।আসলে ইসলামি অর্থনীতি ছাড়া কোন তন্ত্র -মন্ত্রেই শ্রমিকের
অধিকার পুরপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

ইসলাম মালিকদের উপর অনেক দায়িত্ব যেমন অর্পণ করেছে তদ্রুপ শ্রমিকের উপরও আরোপ করেছে কিছু আবশ্যক ন্যায়নীতি। যেমন-
★ শ্রমিকের উপর অর্পিত দায়িত্ব অবশ্যই আমানতদারিতার সাথে সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় তাকে মহান আল্লাহর দরবারে জবাবদিহী করতে হবে। আল্লাহ বলেন, “সর্বোত্তম শ্রমিক সেই ব্যক্তি যে শক্তিশালী ও আমানতদার (দায়িত্বশীল) হয়” (সূরা কাসাস : ২৬)।

★দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজের জ্ঞান, যোগ্যতা ও দক্ষতা তার থাকতে হবে। শারীরিক ও জ্ঞানগত উভয় দিক থেকেই তাকে কর্মক্ষম হতে হবে।

 ★ ইসলাম কাজে গাফলতিকে কোনমতেই সমর্থন করে না। আল্লাহ বলেন, “দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়, যারা লোকের নিকট থেকে মেপে নেয়ার সময় পূর্ণ মাত্রায় গ্রহণ করে আর যখন তাদের জন্য মেপে অথবা ওজন করে দেয়, তখন কম দেয়” (সূরা মোতাফফিফীন : ১-৩)। আয়াতের অর্থ হলো, নিজে নেয়ার সময় কড়ায় গণ্ডায় আদায় করে নেয়। কিন্তু অন্যকে মেপে দিতে গেলে কম দেয়। ফকীহগণের মতে, এখানে তাওফীফ বা মাপে কম বেশী করার অর্থ হলো, পারিশ্রমিক পুরোপুরি আদায় করে নিয়েও কাজে গাফলতি করা। অর্থাৎ আয়াতে ঐসব শ্রমিকও শামিল যারা মজুরি নিতে কমতি না করলেও কাজে গাফলতি করে; কাজে ফাকি দিয়ে ঐ সময় অন্য কাজে লিপ্ত হয় বা সময়টা অলস কাটিয়ে দেয়। তাদেরকে কঠোর শাস্তির হুমকি দেয়া হয়েছে।

★নিজের কাজ হিসেবে করা : কাজে নিয়োগ পাবার পর শ্রমিক কাজকে নিজের মনে করে সম্পন্ন করবে। অর্থাৎ পূর্ণ দায়িত্বশীলতার সাথে স্বতঃস্ফূর্ততার সাথে কাজটি সম্পাদন করে দেয়া তার দায়িত্ব হয়ে যায়।

★একজন শ্রমিক তার শ্রমের মাধ্যমে যে অর্থ উপার্জন করবে তা যেন হালাল হয় এবং এর বিনিময়ে পরকালীন সফলতা লাভে ধন্য হয় তার প্রতি লক্ষ্য রাখবে। সেবার মানসিকতা নিয়ে পরম আগ্রহ ও আনন্দের সাথে কাজটি সম্পন্ন করা।
মহানবী (সঃ) মালিক ও শ্রমিককে পরস্পর ভাই ভাই হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি যখন এই পার্থিব জীবনের সকল সম্পর্ক ঘুচিয়ে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে যাত্রা করেছিলেন, সেই অন্তিম মুহূর্তে তাঁর পবিত্র মুখে যে শেষ শব্দটি ধ্বনিত হয়েছিল, সেটাও ছিল এই শ্রমিক শ্রেণীর প্রতি তাঁর সযত্ন  দৃষ্টি ও সহমর্মিতার সৌহার্দ্যপূর্ণ আশ্বাস।

পরিশেষে বলা যায়, এ সুন্দর পৃথিবীর রূপ-লাবণ্যতায় শ্রমিকদের কৃতিত্বই অগ্রগণ্য। কিন্তু শত আক্ষেপ সভ্যতার কারিগর এ শ্রেণীটি সর্বদাই উপেক্ষিত, অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত। উদয়াস্ত উষ্ণ ঘামের স্যাঁতসেঁতে গন্ধ নিয়ে খেটে যে শ্রমিক তার মালিকের অর্থযন্ত্রটি সচল রাখে, সেই মালিকেরই অবিচারে শ্রমিকদের অচল জীবনটি আরো দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। এটাকে সেই মৌমাছির সাথে তুলনা করা যায়, যারা দীর্ঘ পরিশ্রমের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করে চাকে সঞ্চয় করে, কিন্তু তার ভাগ্যে একফোঁটা মধুও জোটে না। সুতরাং সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থায় মালিক-শ্রমিকের বৈরিতাপূর্ণ সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা ও শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। আর এজন্য সর্বাগ্রে উচিত ইসলাম প্রদর্শিত মালিক-শ্রমিক নীতিমালার পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ ও বাস্তবায়ন। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন-আমীন॥

 

মোঃ শামছুল আলম
লেখক ও গবেষক

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top