সিডনী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৪ই চৈত্র ১৪৩০

সিলেটের ভোলাগঞ্জঃ সাদা পাথরের স্বর্গরাজ্য : রুমান হাফিজ


প্রকাশিত:
৩১ অক্টোবর ২০২০ ২১:১৭

আপডেট:
৩১ অক্টোবর ২০২০ ২২:৩৩

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির গ্রান্ড ট্যুর এবার সিলেটে। ৫ দিনের ট্যুরে প্রথম দুইদিন সুনামগঞ্জে। সেখানে টাঙ্গুয়ার হাওর,নীলাদ্রি লেক,লাকমাছড়া,জাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান আর বারিক্কা টিলায় ভ্রমণ। শেষ দিনে রাতারগুল আর সাদা পাথরের রাজ্য ভোলাগঞ্জে। সকাল ৮ টায় হোটেলরুমে নাস্তা সেরে আমাদের জন্য অপেক্ষায় থাকা বাসে চেপে যাত্রা শুরু।

সকাল থেকেই ঝুম বৃষ্টি। আমাদের বহনকারী বাস চলছে ভোলাগঞ্জের উদ্দেশ্যে। পুরোটা সময় জুড়ে বৃষ্টি লেগেই ছিলো। অন্যদিকে বাসের ভেতরে চলছে সেকি গান! গানের সঙ্গে চবিসাস বর্তমান-প্রাক্তনদের নাচের দৃশ্য ভ্রমণের আনন্দে যুক্ত করেছে বাড়তি মাত্রা।

ভোলাগঞ্জ পৌঁছে সবাই নিজেকে প্রস্তুত করলো; সাদা পাথরের রাজ্যে হারিয়ে যেতে। গ্র্যান্ড ট্যুর পরিচালনায় দায়িত্বশীলরা নৌকা ভাড়া করে সবাইকে নিয়ে চললেন একসঙ্গে। চারপাশে সবুজ পাহাড়ে ঘেরা এলাকাজুড়ে অজস্র সাদাপাথর। চিকচিকে রূপালি বালু আর ছোট-বড় সাদা অসংখ্য পাথর মিলে এ যেন এক পাথরের রাজ্য। সিলেট শহর থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলোমিটার। ধলাই নদীর সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে ছোট-বড় সাদা রঙের পাথরগুলো। ভারত থেকে প্রচুর পাথর সেখানে জমা হয়। যা বছরজুড়ে শ্রমিকরা উত্তোলন করে থাকে। এত পাথর বাংলাদেশের কোথাও নেই। নৌকায় ধলাই নদী পেরিয়ে এসে গেলাম একেবারে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে।

চারদিকে শুধু সাদা রঙা পাথর আর পাথর। নির্জন নৈসর্গিক এই জায়গাটিতে সামনে সবুজ পাহাড়ের সারি, স্রোতকে সঙ্গী করে পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ছে শীতল জল। এই জলে নিজেদের সকল ক্লান্তি-অবসাদ নিমিষেই দূর করতে সবার মন উতলা হয়ে গেলো। কিন্তু স্রোতের প্রতাপে সিনিয়ররা পানির স্পর্শ থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিলেন। পানি আর সাদা পাথরের জাদুকরী শীতল স্পর্শ তবুও কাউকে বঞ্চিত করতে দেয় নি! নিরাপদ অবস্থানে থেকে সবাই ছবি তোলে আর জলের সংস্পর্শে গিয়ে সময় পার করতে লাগলেন।

স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, সর্বাধিক বৃষ্টি বহুল এলাকা চেরাপুঞ্জির অবস্থান ভারতের পাহাড়ী রাজ্য মেঘালয়ে। ধলাই নদীর উজানে এ রাজ্যের অবস্থান। খাসিয়া জৈন্তিায়া পাহাড় ঘেরা এ রাজ্যের দৃশ্য বড়ই মনোরম। ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে এলাকায় অবস্থান করে পাহাড়-টিলার মনোরম দৃশ্যাবলি অবলোকন করা যায়। বর্ষাকালে চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির পানি ধলাই নদীতে পাহাড়ী ঢলের সৃষ্টি করে। গ্রীষ্মকালে অনেকে ধলাই নদীকে মরানদী হিসাবে অভিহিত করলেও বর্ষায় নদীটি ফুলে ফেঁপে ওঠে।

যেভাবে যাওয়া যায়:
সিলেটের আম্বরখানা থেকে ভোলাগঞ্জ যাবার সিএনজি পাওয়া যায়। লোকাল সিএনজিতে করে জনপ্রতি ভাড়া ১৩০-১৫০ টাকা ভাড়ায় ভোলাগঞ্জ যেতে পারবেন। চাইলে রিজার্ভও নেওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে যাওয়া আসা মিলে ১২০০-১৩০০ টাকা। এক সিএনজিতে ৫ জন বসা যায়। ভোলাগঞ্জ বাজারে নেমে দশ নম্বর নৌকা ঘাটে যেতে হবে। নৌকা ঘাট থেকে যাওয়া ও আসাসহ ৮০০ টাকা নৌকা ভাড়ায় ঘুরে আসতে পারবেন সাদা পাথর। প্রতি নৌকায় সর্বোচ্চ ৯/১০ জন যেতে পারবেন।

 

রুমান হাফিজ
শিক্ষার্থী, সোহরাওয়ার্দী হল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top