সিডনী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

বিষণ্ণ শহরের কথকতা : মোঃ ইয়াকুব আলী


প্রকাশিত:
৩ নভেম্বর ২০২০ ২২:০২

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ২০:২০

 

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিকে বলা হয় 'সিটি অব কালারস'। সত্যিকার অর্থেই সিডনি রঙের শহর। সারা বছর জুড়েই কোন না কোন উৎসবা লেগে থাকে আর তার সাথে তাল মিলিয়ে বদলে যায় শহরের রং। এছাড়াও প্রকৃতির পরিক্রমায় ঋতূ বদলের সাথে সাথেও বদল হয় শহরের রং। কিন্তু করোনাকালে প্রাণবন্ত এই শহরটাই কেমন যেন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে কোন প্রকার প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ করা যাচ্ছে না। তাকে যেন এক অদ্ভুত বিষণ্ণতা পেয়ে বসেছে। সিডনিতে দিনের বেলায় যানবাহন থেকে শুরু করে ফুটপাতগুলো থাকে লোকে লোকারণ্য কিন্তু করোনাকালে তার সবই প্রায় ফাঁকা। বর্তমানে সে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও পুরোপুরি প্রাণ ফিরে আসেনি এখনও। কবে আসবে সেই বিষয়েও কোন ধারণা আপাতত করা যাচ্ছে না।   

বড়বড় উৎসবগুলোর মধ্যে প্রতিবছর ২৬শে জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়া ডে, ফেব্রুয়ারি মাসে চাইনিজ নিউ ইয়ার, মে জুন মাস জুড়ে চলে ভিভিড ফেস্টিভ্যাল, সেপ্টেম্বরে বন্ডাই সমুদ্র সৈকতে 'ফেস্টিভ্যাল অব উন্ডস' আর অক্টোবর মাসে আছে হ্যালোইন। তবে সিডনির সবচেয়ে বড় ফেস্টিভ্যাল হচ্ছে 'নিউ ইয়ার' কে বরণ করে নেয়ার চোখ ধাঁধানো আতশবাজি। এছাড়াও বাঙালিদের রয়েছে সারা বছর জুড়েই বিভিন্ন ধরণের মেলা ও উৎসব। এভাবেই সারা বছর জুড়েই সিডনির মানুষ ব্যস্ত রাখে নিজেদের। ঘড়ির কাটার আগে চলে বছরের দিনগুলো শেষ হয়ে যায় কিন্তু করোনা আসার পর এ বছরটা যেন অনেক লম্বা হয়ে গেছে। ঘড়ির কাটা ঠিকই চলছে কিন্তু মনেহচ্ছে সময় যেন তার টাট্টু ঘোড়া থামিয়ে একটু জিরিয়ে নিচ্ছে। 

অস্ট্রেলিয়া ডে এবং চাইনিজ নিউ ইয়ারের পর মে জুনের সবচেয়ে বড় ফেস্টিভ্যাল ছিলো ভিভিড। ঋতু পরিক্রমায় জুন মাস থেকে অস্ট্রেলিয়াতে শীতকাল শুরু হয় তাই তখন শহরটা নিস্তেজ হয়ে পরে। ব্যবসা বাণিজ্যেও কিছুটা মন্দা ভাব পরিলক্ষিত হয়। সেই মন্দা ভাব কাটাতেই মে মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত মাসব্যাপি আয়োজন করা হয় এই ফেস্টিভ্যালের। সারা সিডনি বৈদ্যুতিক বিভিন্ন বর্ণের আলোয় সেজে উঠে। সিডনির অপেরা হাউসের দেয়ালে এবং ছাদে খেলা করে বিভিন্ন বর্ণের আলো। তার পাশেই রাতের রয়াল বোটানিক গার্ডেন যেন জীবন্ত হয়ে উঠে বিভিন্ন প্রকারের আলোর ঝলকানিতে। তরঙ্গা জু'তে আলো দিয়ে বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি বানানো হয়। ডার্লিং হারবারে বর্ণিল পোশাক পরে হেটে যায় ছয় মিটার উঁচু মেরি ডাইন।

ছবিঃ ভিভিড ফেস্টিভ্যাল

ভিভিড শো দেখতে দেশ বিদেশের হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করে সিডনি শহরে। রাতের পুরো সিডনি শহর যেন প্রাণ ফিরে পায়। রাতের সিডনির রাস্তাগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। পায়ে পায়ে মানুষ একটা প্রদর্শণী থেকে অন্য একটা প্রদর্শণীতে। আলোর এই ঝলকানি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করে বাচ্চারা। কিছু সময়ের জন্য হলেও বাচ্চারা যেন রূপকথার রাজ্যে হারিয়ে যায়। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে দশটা অবধি চলে এই প্রদর্শণী। সিডনি হারবারের ছোট বড় জাহাজগুলোও সাজে বিভিন্ন রঙে। অনেকেই জাহাজে চড়ে ঘুরে বেড়ায়। ট্রেনে বাসে অনেক মানুষ আসা যাওয়া করে। খাবার দোকানগুলোতে থাকে লম্বা লাইন। গত বছর প্রায় দুই দশমিক চার মিলিয়না দর্শনার্থী ভিভিড শো উপভোগ করেন যেখান থেকে যায় হয় প্রায় ১৭২ মিলিয়ন ডলার।  

ছবিঃ ফ্যাস্টিভেল অব উইন্ডস

এরপর সেপ্টেম্বর সিডনির বন্ডাই সমুদ্র সৈকতে চলে সারাদিনব্যাপি ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব। এটাকে বলা হয় 'ফেস্টিভ্যাল অব উইন্ডস'। সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব। ওয়েভারলি কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে চলে এই উৎসব। বাহারি রঙ আর আকৃতির ঘুড়িতে ছেয়ে যায় বন্ডাই সমুদ্র সৈকতের আকাশ। এই উৎসব দেখতে শতশত পর্যটক আসেন। ঘুড়ির সাথে সাথে তাদেরও মন হয়তোবা ঘুড়ি হয়ে কিছুক্ষণের জন্য হলেও বন্ডাই সৈকতের শীতল বাতাসে উড়ে বেড়ায়। পাশাপাশি চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার কৃষ্টি এবং সংস্কৃতির বিভিন্ন রকমের পরিবেশনা চলতে থাকে। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে তাদের অভিভাবকেরাও অনেক সময় ঘুড়ি কিনে নিয়ে উড়াতে শুরু করেন। এভাবেই একটা দিন কেটে যায় বাতাসে বাতাসে। এই উৎসবের সময় বন্ডাই সমুদ্র সৈকত লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এমনিতেই বন্ডাই সৈকত পর্যটকদের কাছে অনেক বড় আকর্ষণ উপরন্তু ফেস্টিভ্যাল অব উইন্ডস তাতে বাড়তি রঙ যোগ করে। 

সিডনির সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী উৎসবের নাম 'ক্রিসমাস' ক্রিসমাস আসার অনেক আগে থেকেই দোকানগুলোতে ক্রিসমাসের জিনিসপত্র তোলা হয়। ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ আসতে এখনও অনেক দেরি কিন্তু এখনই দোকানগুলোতে ক্রিসমাস ট্রি থেকে শুরু সবরকমের আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে। ক্রিসমাস উপলক্ষে বাড়িঘরগুলোকে নানা রঙের আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। কিছু কিছু সিটি কাউন্সিল আলোকসজ্জার প্রতিযোগিতারও আয়োজন করে থাকে। তখন সেইসব সবার্ব ভ্রমণে গেলে আপনার মনেহবে আপনি হয়তোবা স্বর্গের কোন রাস্তায় হাঁটছেন। ক্রিসমাসের অনেক আগেই স্কুলগুলো ছুটি হয়ে যায় তাই বাচ্চারা ইচ্ছেমতো ঘুরাঘুরি করতে পারে। অনেকেই বাবা মায়ের সাথে দেশ বিদেশ ঘুরতে বের হয়। অফিসগুলোতেও অনেক লম্বা ছুটি দেয়া হয় যাতেকরে পরিবারের সাথে সবাই আনন্দময় সময় কাটাতে পারে। 

এরপর প্রতিবছর অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখে পালন করা হয় হ্যালোইন উৎসব। সারা অস্ট্রেলিয়া জুড়েই এদিন বাচ্চা বিভিন্নরকমের সাজে এক বাসা থেকে অন্য বাসার দরজায় যেয়ে টোকা দিয়ে বলে 'ট্রিক অর ট্রিট' হ্যালোইনের আগে থেকেই দোকানগুলোতে হ্যালোইনের পোশাক থেকে শুরু করে ক্যান্ডি তোলা হয়। সেগুলো সবাই কিনে নিয়ে আসেন। বাচ্চারা সবাই বিভিন্ন ধরণের ভুত সাজে। আবার অনেক অভিভাবকও বাচ্চাদের উৎসাহ দেয়ার জন্য নিজেরাও ভুত সেজে বেড়িয়ে পড়েন। কেউবা বালতি আবার কেউবা ব্যাগে চকোলেট সংগ্রহ করে। আশেপাশের পাড়া ঘুরে তারা অনেক চকোলেট সংগ্রহ করে। এসময় সবাই আগে থেকেই অনেক চকোলেট এবং ক্যান্ডি কিনে রাখেন যাতেকরে বাচ্চারা খালি হাতে ফেরত না যায়। দিনশেষে বাচ্চারা একগাদা চকোলেট আর ক্যান্ডি নিয়ে বাসায় ফেরে। চকোলেটের পরিমাণ দেখেই তার খুশিতে ডগমগ করে। এরপরদিন স্কুলে যেয়ে কে কত পরিমাণ চকোলেট পেয়েছে সেটা নিয়ে গল্প করে। 

ছবিঃ সিডনির প্রাণকেন্দ্র জন মানবহীন সেন্ট্রাল ষ্টেশন

এছাড়াও বছর জুড়ে চলে বিভিন্ন দেশের মানুষের বিভিন্ন রকমের ফেস্টিভ্যাল। বাংলাদেশের মানুষদের উৎসবের মধ্যে পহেলা বৈশাখ, ঈদ এবং দুর্গা পূজা অন্যতম। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে সিডনি জুড়ে অনেকগুলো মেলার আয়োজন করা হয়। সেইসব মেলাতে বিশাল জনসমাগম হয়। সেখানে জিনিসপত্র বিকিকিনির পাশাপাশি চলে বিভিন্ন রকমের খাবারের স্বাদ গ্রহণ করা। অস্ট্রেলিয়াতে জন্ম দেয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দ্বিতীয় প্রজন্ম কিছুটা হলেও দেশের মেলার স্বাদ নিতে পারে। ইদানিং বাংলাদেশের আদলে মেলার অনুসঙ্গ হিসাবে যোগ হয়েছিলো রাস্তায় আল্পনা এবং মঙ্গল শোভাযাত্রা। এছাড়াও সারা বছরব্যাপী বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দিনগুলোও পালন করা হয়। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সিডনির এশফিল্ড পার্কে দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় বইমেলা। সেখানে ২০০৬ সালে স্থাপন করা হয়েছে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধ'।

ছবিঃ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

সিডনির সবচেয়ে বড় উৎসব হিসেবে ধরা হয় সিডনি হারবার ব্রিজের 'নিউ ইয়ার' উপলক্ষে করা আতশবাজি। পৃথিবী বিখ্যাৎ এই আতশবাজি দেখতে সিডনিতে পর্যটকেরা ভিড় করতে থাকেন অনেক আগে থেকেই। অনেকেই সিডনি হারবারে সপ্তাহখানেক আগে থেকেই তাবু টানিয়ে থাকা শুরু করেন আতশবাজির একটা ভালো ভিউ দেখার জন্য। ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ সকাল থেকেই মানুষ জড়ো সিডনি হারবারসহ আশেপাশের সব জায়গায়। অনেকেই আবার ডার্লিং হারবারেও যান। এছাড়াও সিটি কাউন্সিলগুলোর উদ্যোগেও ছোট আকারে আয়োজন করা আতশবাজির। দুই পর্যায়ে এই আতশবাজি চলে। রাত নয়টার সময় একবার এবং রাত বারোটার সময় একবার। রাত নয়টার সময় হয় ছোট আকারে। এরপর বারোটার সময় হয় বড় আকারে। হারবার ব্রিজের দুপাশের কংক্রিটের থামের উপর চলে আলোর প্রদর্শণী। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের উপর আলোকচিত্র পরিবেশন করা হয়। সেখানেই দেখানো হয় 'সিডনি - সিটি অব কালারস' ।

ছবিঃ জন মানবহীন টাউনহল

এই বছর করোনার কারণে কোন উৎসবই আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। আর যেগুলো আয়োজন করা হয়েছিলো তাতেও ছিলো অনেক বিধি নিষেধ তাই মানুষ মন খুলে আনন্দ করা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। উৎসব মানেই হাজার হাজার মানুষের সমাগম। করোনার বিস্তার রোধে কারণে সেই জনসমাগমের উপরই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। গত বছর অস্ট্রেলিয়াতে দেখা দিয়েছিলো স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বন অগ্নিকান্ড যেটাকে অস্ট্রেলিয়ার ভাষায় বলে 'বুশ ফায়ার'। এরপর দেখা দিয়েছিলো পানির সংকট। পানির সংকট মোকাবিলার জন্য পানির গৃহস্থালি ব্যবহারের উপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিলো। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই সারা বিশ্বের সাথে সাথে অস্ট্রেলিয়াও করোনার কবলে পড়েছে। এরফলে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়েছে।

ছবিঃ ডার্লিং হারবারের জন মানবহীন ফাঁকা সেতু

 

বিভিন্ন প্রকার বিপর্যয়ের মধ্যেই প্রকৃতি চলেছে তার আপন নিয়মে। ঋতু পরিক্রমায় শীতের পরে এসেছে বসন্ত। গাছেরা সব আড়মোড়া ভেঙে নতুন সবুজ পাতায় সেজেছে। গাছে গাছে শাখে শাখে দেখা দিয়েছে হরেক রকমের ফুল। মৌমাছিরা গুজন করে ফুল থেকে ফুলে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে। অতি সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার বসন্ত কালের সিগনেচার ফুল জ্যাকারান্ডাতে ছেয়ে গেছে সমস্ত সিডনি শহরের রাস্তাঘাট। পাখির চোখে দেখলে মনেহবে কোন এক নিপুণ শিল্পী তার তুলির আঁচড়ে সিডনির সবখানে বেগুনী রঙ ছড়িয়ে দিয়েছেন। শীতের সময় সমস্ত পাতা ঝরিয়ে জ্যাকারান্ডা গাছগুলো থুথুড়ে বুড়োর মতো ঝিম মেরে বসে থাকে। বসন্তকাল আসলে শুরুতেই সেই শুকনো শাখাগুলোতে দেখা দে গাঢ় বেগুনী রঙের ফুল। এরপর একসময় ফুলগুলো ঝরে যেয়ে সমস্ত গাছটা আবার সবুজ পত্রপল্লবে ভরে উঠে।

বলা হয়ে থাকে বেদনার রং নীল তাহলে জ্যাকারান্ডার গাঢ় বেগুণী রংটাকেও আমরা বেদনার রঙ বলতে পারি। সেদিক দিয়ে বিচার করলে সিডনি এখন বেদনায় আক্রান্ত একটা অবয়ব। বুশ ফায়ার পানির সংকটের পর করোনাযা সিডনির স্বাভাবিক জীবন এখন বিপর্যস্ত। তবে আমরা আশাবাদী শীতের পরে যেমন সিডনিতে বসন্তের হাওয়া এসে লেগেছে ঠিক তেমনি করোনাকাল শেষ হয়ে সিডনিতে বইবে সুবাতাস। সিডনি আবার ফিরে পাবে তার পুরোনো রূপ। পর্যটক এবং কর্মব্যস্ত মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে হবে সিডনির পথ ঘাট। সেই সুদিনের আসায় আমরা দিন গুনছি কারণ স্বপ্ন বা আশাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।    

 

মোঃ ইয়াকুব আলী
মিন্টো, সিডনী, অস্ট্রেলিয়া

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top