দেশাত্মকবোধক গান গেয়ে জাগিয়ে তোলার অর্থ হচ্ছে প্রভাত ফেরী
প্রকাশিত:
২৭ মার্চ ২০১৯ ১৪:৩৯
আপডেট:
৩০ নভেম্বর ২০১৯ ২২:১২
আক্ষরিক অর্থে, খুব ভোরে ঘুমন্ত মানুষকে দেশাত্মকবোধক গান গেয়ে জাগিয়ে তোলার অর্থ হচ্ছে প্রভাত ফেরী। অস্ট্রেলিয়া যেমন আমাদের দেশ, তেমনি বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি। এখানে বসবাসরত সকল বাংলাদেশী মানুষের একটাই পরিচয় আমরা ‘অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশী’। ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে আমাদের যেমন নিজেকে উজাড় করে দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার স্বার্থে কাজ করা উচিৎ, তেমনি বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে আমাদের অগ্রনী ভূমিকা রাখা উচিৎ। এক্ষেত্রে আমরা ‘অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশীরাই’ হতে পারি এই দুই দেশের মিলন সেতু।
এই মাস হচ্ছে অগ্নি ঝরা মার্চ মাস। এই মার্চ মাস বাঙালী জাতির ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ন ও গৌরবময় একটি মাস। বাঙালী জাতির ইতিহাসে যে মাসে চিরকালের জন্য বইতে শুরু করেছিল আনন্দ বেদনার মহাকাব্য, সেই মহান স্বাধীনতার মাস এই মার্চ মাস। মহান সেই স্বাধীনতা দিবসের ৪৮তম বার্ষিকী উদযাপিত হবে এবার। স্বাধীনতার এই দিন বাংগালী জাতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরন করবে দেশ মাতৃকার জন্য আত্মদানকারী বীর সন্তানদের। প্রতি বছর পেছনে তাকিয়ে সামনে এগিয়ে যাবার প্রেরনা যোগায় ২৬ শে মার্চ। স্বাধীকারের দাবীতে জেগে ওঠা নিরীহ বাঙালীর ওপর একাত্তরের ২৫ শে মার্চ কাল রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী চালিয়েছিল নির্মম হত্যাযজ্ঞ। সেই বিভীষিকাময় ভয়াল কাল রাত্রির পর রক্তে রাঙা নতুন সূর্য উঠেছিল ১৯৭১ সালের এই দিনে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল ন্যায়ের সাথে অন্যায়ের লড়াই, অত্যাচারিতের সাথে নির্যাতিত মানুষের আপোষহীন লড়াই, দূর্বলদের সাথে শক্তিমানদের অসম লড়াই। পৃথিবীর আর কোন দেশ কিংবা জাতিকে স্বাধীনতার জন্য, নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়নি। জাতির পিতা বংঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে সেদিন এই বাংলার মানুষ যার যা ছিল তা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিল হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা বিশ্বের দরবারে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেয়েছি, তাদের প্রতি আমরা ঋণী । বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যথেষ্ঠ যত্নবান। সরকারের পাশাপাশি আমাদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে দেশের গরীব অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে সহায়তা করার জন্য। তাদের বাসস্থান ও উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য।
আগামী ২৩শে মার্চ নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের নির্বাচন। গত কয়েক বছর ধরে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রাজনীতিতে নেতৃত্বের উত্থান পতন রাজনীতিতে এক ধরনের অস্থিরতার সৃষ্টি করেছে। নিঃসন্দেহে লেবার, লিবারেল পার্টি সহ অন্যান্য পার্টিরা দেশ ও দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনা করেছে। আবাসন, ইনফ্রাস্টেকচার, শিক্ষা সিস্টেম, স্বাস্থ্যসেবা সহ অনেক সমস্যাকে সামনে রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। এবারই প্রথম বেশী সংখ্যক ‘অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশী’ নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের নির্বাচন রাজনীতিতে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করেছেন যা সত্যিই আমাদের কমিউনিটির জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। জাতীয় পর্যায়ে আমাদের কমিউনিটির বিভিন্ন প্রত্যাশা, সমস্যা সম্ভাবনা তুলে ধরার জন্য সংসদগুলোতে আমাদের কমিউনিটির প্রতিনিধিত্ব অনস্বীকার্য। সোনালী সমৃদ্ধির দিন গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি ভালবাসা, সহমর্মিতা এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাই হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা রইল।
শ্রাবন্তী কাজী আশরাফী
সম্পাদক
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: