সিডনী মঙ্গলবার, ১৪ই মে ২০২৪, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩১

পশ্চিমের সূর্যোদয় : ঋভু চট্টোপাধ্যায়


প্রকাশিত:
২০ আগস্ট ২০২০ ২২:৩০

আপডেট:
১৪ মে ২০২৪ ১৫:০১

 

 ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢুকে বিছানার উপর রাখা ছোট ব্যাগটার দিকে চোখ পড়তেই অর্ণব চেঁচিয়ে ওঠে, ‘তারমানে তুমি আমার একটা কথাও শুনলে না, সেই যাচ্ছো।’

পাপিয়া তখন ডাইনিং টেবিলে বসে ভাত খাচ্ছিল। অর্ণবের কথা শুনেও কোন উত্তর না দিয়ে একভাবে খেয়ে যাওয়াতে অর্ণব আরো রেগে উঠে বাজারের ব্যাগটা শব্দ করে মাটিতে রেখে দেয়। পাপিয়ার মা পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলে ওঠেন, ‘আমি একটু আগেই বলছিলাম বলে আমার উপর চিল্লিয়ে উঠল। তুমি একটু বুঝিয়ে বল। কারোর কথা শোনে না।’

–আপনার মেয়ে আমার কথাও শোনে না। না হলে আমি সেই প্রথম দিনেই বারণ করেছিলাম। ভীষণ স্বার্থপর, শুধু নিজের নাম....

–ফ্রিজ থেকে একটা জলের বোতল  দাও তো। নিতে ভুলে গেলাম। পাপিয়া অর্ণবের কথার মাঝে বলে উঠল।

–কি দেবো জলের বোতল! কেন তোমার ঐ সায়েন্সটিস্টগুলোকে বল। ওরাই এসে তোমার মুখে তুলে দিক।

-এই দিন পনেরোর মধ্যে টাকা পয়সা কেউ নিতে আসবে না। কাজের মেয়েটার টাকাও পাঠিয়ে দিয়েছি। তাও মায়ের কাছে কিছু টাকা দেওয়া থাকল।

কথাগুলোর পরেই অর্ণবের কানে পাপিয়ার ঢেঁকুর তোলার শব্দ কানে এল।

অর্ণব আর কোন কথা না বলে বাথরুমে ঢুকে যাবার আগে বলে উঠল, ‘মা, ওকে একটা জলের বোতল বের করে দিন।’

বাথরুমের ভিতর থেকেই শাশুড়ি মার গলা কানে এল, ‘তুই একবার ভালো করে ভাব। বুকাইএর এই মাত্র দেড় বছর  বয়স। কিছু একটা হয়ে গেলে...’

–কিচ্ছু হবে না। বড় বড় ডাক্তার আছেন, সায়েন্সটিস্ট আছেন। আমি জানি ওর দেড় বছর বয়স, কিন্তু আরো অনেকেই আছেন তাদেরও বাচ্চা আছে।

–সবাই আছেন তাও কিন্তু বিশ্বে এত লোক মারা গেল। মা বলে উঠলেন।

পাপিয়া উত্তর দেবার আগেই ফোনটা বেজে উঠল। পাপিয়া রিসিভ করে সব কিছু শুনে উত্তর দিল, ‘এক ঘন্টা না আরো বেশি।ঠিক আছে...’

ফোনটা রেখে তার মায়ের দিকে বলল, ‘গাড়িটার কি খারাপ হয়েছে। আসতে ঘন্টা খানেক দেরি হবে।’

–দেখছিস, এগুলো সব বাধা। তুই কিছু বুঝছিস না। শুনছিস না। আবার ভাব, ছেলেটার কথা ভাব।

অর্ণব কোন কথা না বলে আস্তে আস্তে নিজের ঘরের ভিতর ঢোকে। দরজা ভিতর থেকে লাগিয়ে ব্যালকোনিতে দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট ধরায়। শহরটা কেমন যেন থমকে গেছে।লোকজনের ভিড় নেই, গাড়ি নেই। স্কুল, কলেজ, অফিস সব বন্ধ।যত দূর চোখ যায় শুধু আলোকিত অন্ধকার। সিগারেটের ধোঁয়া শরীরের ভিতরটাকে আরো জ্বালিয়ে দিল।ব্যালকোনির উপর থেকেই তাদের কমপ্লেক্সের গেটের আশে পাশে কয়েক জনকে থালা বাটি হাতে ঘুরতে দেখে দারোয়ান তাদের এদিকে ঢুকতে দেয় না। দেখলেই তাড়িয়ে দেয়। অর্ণব একদিন তাদের কমপ্লেক্সের দারোয়ানের হাতে কয়েক প্যাকেট বিস্কুট কিনে কেউ এলে দিতে বলেছিল। দারোয়ানটা রাজি হয় নি।বলে,‘স্যার আপনি ওদের চেনেন না। একদিন দিলে পুরো দল নিয়ে প্রতিদিন চলে আসবে।’

–আসুক না। খেতেই তো আসবে।

–বাকিরা রাগ করে স্যার।

অর্ণব আর কিছু বলেনি।

একটা লম্বা শ্বাস ছেড়ে সেকথা একবার মনে এলেও পাপিয়ার কথা সব কিছুকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। কি সুন্দর সংসার, একজন প্রফেসর আরেকজন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে ল্যাব অ্যাসিটেন্ট। মোটামুটি স্বচ্ছল। একবছর হল একটা নতুন ফ্ল্যাটও কিনেছে। একমাত্র ছেলের এই দেড়বছর বয়স। তাকে মানুষ করার একটা পরিকল্পনাও আছে। ভালোই চলছিল।তার মাঝে এই রোগ আরম্ভ হল।অর্ণবদের কলেজ বন্ধ হয়ে গেলেও পাপিয়াদের ল্যাবে কাজ চলছে। বরং আগের থেকে পাপিয়ার ফিরতে দেরী হচ্ছে। সরকারি ল্যাব, বিভিন্ন রোগ আর ওষুধ নিয়েই তার গবেষণা। পাপিয়াদের যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা থাকলেও চিন্তা তো হয়। একদিন তো রাত্রি দশটার সময় পাপিয়া ফোন করে বলে, ‘আমার আর ফেরা হবে না।মাকে খাবার গরম করে নিতে বলবে।’

অবশ্য শুধু একদিন নয় এই অবস্থাতে প্রায় প্রতিদিনই দেরি হচ্ছে। অর্ণবের খারাপ লাগলেও কিছু করবার নেই। প্রেমের বিয়ে, তাছাড়া অর্ণবের নিজের বলতে এই পাপিয়া আর তার বাড়ি। যে কাকা কাকিমার কাছে মানুষ হয়েছে তার ছেলেমেয়েরা এখন কোন যোগাযোগ রাখে না।অর্ণব নিজের থেকে মাসে একবার করে যায়। নিজের ভাগের বাড়ির ইলেকট্রিক চার্জ বা টুকটাক খরচ বাবদ কিছু টাকাও দিয়ে আসে। কিন্তু এর বেশি আর কিছু না। নিজেদের চাকরির সময়ের ঠিক নেই দেখে পাপিয়া তার মাকে নিজেদের কাছে এনে রেখেছে। এতে তার দাদা খুব খুশিও হয়েছে।

সবই ঠিক চলছিল হঠাৎ এই ....।

ঘরের দরজাতে অর্ণব টোকা মারার আওয়াজ পেল। সিগারেটটা ফেলে বাইরে বেরোতেই শাশুড়িমাকে ঘরের সামনে দেখতে পায়। ‘কি হল?’ জিজ্ঞেস করতেই উনি উত্তর দেন, ‘তোমাদের কমপ্লেক্সের সরকার বাবু বাইরে ডাকছেন।’ সরকার বাবু! মানে সেক্রেটারী বিধান সরকার? খেয়েছে, ওরা পাপিয়ার কথাটা জেনে গেল নাকি।আরেক কেলো। কয়েকদিন আগেই বাজার করতে গিয়ে শুনল পাশের কম্পপ্লেক্সে কোন একটা পরিবার বিদেশ থেকে ফেরবার জন্য কমপ্লেক্সের সবাই মিলে ভদ্রলোকের ফ্ল্যাটে বাইরে থেকে চাবি দিয়ে দিয়েছে। যা প্রয়োজন সব তার দরজার কাছে নামিয়ে আসছে। প্রথমে ভদ্রলোক রাজি না হওয়াতে পুলিশ ডেকেছে। শুধু তাই নয় বলেও দিয়েছে, ‘না মানলে সব কিছু মিটলেও এক্কেবারে এক ঘরে করে দেবে।’

তারপর চারদিকে ডাক্তার বা নার্সদের ঘর দেওয়া নিয়ে সমস্যা তো আছেই।

এই কমপ্লেক্সেরও একজন সেদিন গাড়ি আসা দেখে জিজ্ঞেস করেছে, ‘বৌদির কি এমার্জেন্সি ডিউটি? হসপিটাল রিলেটেড? গাড়ি আসে দেখি। সেরকম হলে বলবেন, মানে বুঝতেই তো পারছেন আমাদের পরিবার নিয়ে থাকতে হয়। রোগটাতো খুব একটা ভালো নয়।’

অর্ণবের একটু ভয় লাগে।তারপর ঘরের বাইরে বেরিয়ে ডাইনিংএ পাপিয়াকে দেখতে পেয়ে মাথাটা আরো জ্বলে ওঠে। কি অদ্ভুত রে বাবা, শুনল সেক্রেটারি সরকারদা এসেছেন, উনি বুকাইকে কোলে নিয়ে বসে আছে। আরে বাবা অতই যদি দরদ তবে রাজি হতে গেলি কেন? এখন আদিখ্যেতা হচ্ছে।

অর্ণবের কানে গেল পাপিয়া বুকাইকে বলছে, ‘বাবিন আর দিদুনকে কিন্তু একদম জ্বালাবে না। নো দুষ্টুমি।আমি ফিরেই একটা খুব সুন্দর একটা ইয়াবড় চকোলেট কিনে দেবো।’

অর্ণব সেদিকে কান না দিয়ে দরজার কাছে গিয়ে দেখে শুধু সরকারদা নন, মিত্রদা, আবীর বাবুও আছেন। সবাই নিজেদের মধ্যে দূরত্ব রেখে মাক্স পরে দাঁড়িয়ে আছেন। নিচে থেকে আরো কয়েকজনের গলার আওয়াজ পাওয়া গেলেও ঠিক কত জন আছেন বোঝা গেল না।

অর্ণব খুব ভয়ে ভয়েই বলল,‘হ্যাঁ সরকার দা বলুন।’

–আরে আপনি তো ম্যাডামের ব্যাপারটা চেপে গেছেন।আমরা আজকে খবরের কাগজে দেখলাম।

–খবরের কাগজ! কোন কাগজ! অর্ণব আমতা আমতা করতে লাগল।

-কোন কাগজ কি বলছেন, সব কাগজেই দিয়েছে। এটাতো বিরাট ব্যাপার।

–না মানে আমি আজকে নিউসের কোন পোর্টাল দেখতে পায় নি।এখন কাগজ নেওয়া তো বন্ধ করে দিয়েছি।

-ঠিক আছে। ম্যাডাম কোথায়? এই রকম একটা বাচ্চা ছেলে রেখে এত বড় একটা কাজ করতে যাওয়া কি মুখের কথা!ম্যাডামের স্ট্যামিনা আছে বলতে হবে। আপনিও তো পারমিশন দিয়েছেন। আমরা তো সবাই সেটাই আলোচনা করছি।

-না না, আমি কিচ্ছু করিনি, এই ঘরের সব কিছু ঐ সামলায়। আমি কলেজ সেমিনার এই সব নিয়েই...।

–ম্যাডামের সাথে কি..

-পাপিয়া এই বেরোবে তাই...

-ঠিক আছে বিরক্ত করছি না।তবে আমরাও ঠিক একই ভাবে....।

সরকারদারা চলে যাবার পর অর্ণব তাড়াতাড়ি বাইরের দরজাটা বন্ধ করে বলে উঠল, ‘হল, পেপারেও তোমার খবর দিয়ে দিয়েছে।এবার বোঝো।’

পাপিয়া বুকাইকে কোলে নিয়েই বলে উঠল, ‘জানো আমাদের ল্যাবের নিজস্ব রেসিডেন্ট কমপ্লেক্স হচ্ছে। এক্কেবারে দারুণ জায়গায়।আমাকে নাকি একটা গিফ্ট করবে। রির্টায়ারমেন্টের পরেও ছাড়তে হবে না। এখানে তাড়িয়ে দিলে ওখানে চলে যাবো। তোমার কলেজটা একটু দূর হবে। বাকি সব দারুণ।’

কথাগুলো শুনে অর্ণবের শরীরটা কিড়মিড় করছিল। পাপিয়া এখন এরকম ভাবেই গা জ্বালানো কথা বলছে। দুসপ্তাহ আগেই রাতে শুয়ে কোথাও কিছু নেই হঠাৎ বলে ওঠে, ‘জানো আমার হার্টটা খুব ভালো আছে।লাঙ্গসটাও।’ তারপর একে একে শরীরের বাকি সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো যে ঠিক আছে তা জানিয়েই আসল কথাটাতে আসে। অর্ণব রেগে উঠলে খুব ভালো ভাবে বুঝিয়ে কনসার্ন লেটারে সিগনেচার করায়। অর্ণব বুকাই এর কথা বলে, পাপিয়ার নিজের  মায়ের কথা বলে। উত্তরে পাপিয়া সারা বিশ্বের কথা বলে।

‘ভাবতে পেরেছ এটা যদি সাকসেসফুল হয় কত মানুষ বেঁচে যাবে?’

–আর যদি তোমার কিছু হয়ে যায়?

-তুমি ঐ ম্যাডামটাকে বিয়ে করে নেবে। ঐ যে তোমার কলেজে নতুন জয়েন করেছে, সেদিন ছবি দেখালে। বেশ ভালোই তো দেখতে।

 সেদিন অর্ণব কোন উত্তর না দিয়ে বিছানাতেই পাপিয়ার পাশে উঠে যায়। 

পাপিয়ার ফোনটা আবার বেজে ওঠে। পাশে দাঁড়ানো অর্ণব ভয়ে আবার জড়ো হয়ে যায়। পাপিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,‘ছেলেটার কথাও একবার ভাবলে না। শুধু নিজের ...’

–ভাবলাম তো, তাই তো রাজি হয়ে গেলাম। এটাতে সাকসেস পেলে আর এমন ভাবে আমাদের কাউকে বাঁচতে হবে না। সবাই আগের মত কাজ করবে, বেরোবো।

শেষের কথাগুলো বলবার সময় পাপিয়ার গলা ধরে যায়। তাও বুকাইএর থুঁতনিটা নেড়ে বলে ওঠে, ‘তাই না বাবু?’ বুকাই পাপিয়ার গলাটা দুহাত দিয়ে ধরতেই পাপিয়া তার দু’গালে চুমু খেতে আরম্ভ করলেও উল্টো দিকে দাঁড়ানো দুজন বুকাইএর ভিজে যাওয়া গালটা বুঝতে পারে না।

পাপিয়া মাকে প্রণাম করে অর্ণবের কাছে দাঁড়াতেই অর্ণবেরও চোখদুটো ভিজে যায়। পাপিয়া অর্ণবের হাতদুটো ধরে বলে, ‘পাগল একটা, তুমি যে ছেলে, এরকম করে কেউ কাঁদে?’

অর্ণবের ঠৌঁটদুটো আরো ফুঁপিয়ে ওঠে।ধরা গলায় বলে, ‘কি বলবো? সাবধানে থাকবে? ফিরে এলে....’

-এলে মানে! আসবোই, না হলে বিজ্ঞান মিথ্যা হয়ে যাবে। এই সভ্যতা শেষ হয়ে যাবে।

আস্তে আস্তে চারজন সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতেই চমকে ওঠে। গ্রাউণ্ডফ্লোরে সরকারদা পাপিয়ার হাতে একটা ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে বলেন,‘ম্যাডাম পুরো কমপ্লেক্স আপনার জন্য গর্বিত। পনেরো দিন তো নাকি? সব ঠিক হলে  আমাদের সবার পক্ষ থেকে বড় করে সম্বর্ধনা দেবো। ততদিনে আশা করি সব মিটে যাবে।’

আরেকপা এগিয়ে লনে নামনেই দেখতে পায় কম্পপ্লেক্সের প্রতি ফ্ল্যাটের কেউ ব্যালকোনি কেউবা জানলায় দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছে। কয়েকটা ফ্ল্যাট থেকে ফুলও ছুঁড়ছে। এই প্রথমে অর্ণবের পাপিয়ার জন্য গর্ব হতে লাগল। এত ভিড় দেখে দিদুনের কোলে থাকা বুকাই প্রথমে একটু ভয় পেলেও চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সব কিছু দেখতে লাগল। গাড়ি কম্পপ্লেক্সের বাইরে দাঁড়িয়েই ছিল। পাপিয়া গাড়িতে চাপতেই আরেকবার হাততালির আওয়াজ কানে এলো। পাপিয়াও চোখ মুছতে মুছতেই গাড়িতে উঠল। বুকাইকে কোলে নিয়ে ফ্ল্যাটের দিকে পা ফেলতেই দারোয়ানের টেবিলে রাখা খবরের কাগজটার দিকে অর্ণবের চোখ গেল। দারোয়ানটাও খবরটা দেখছিল। অর্ণব বুকাইকে কোলে নিয়েই পড়তে লাগল, ‘ভ্যাকসিনকে পরীক্ষামূলক ভাবে শরীরে নেওয়ার জন্য নিজের দেড় বছরের সন্তানকে রেখেই এগিয়ে এলেন তরুণী।’

অর্ণব বুকাইকে শাশুড়ির কোলে দিয়ে খবরটা পড়তে আরম্ভ করল। নাম ঠিকানার সাথে ছবিও দিয়েছে।মেয়েটাতো কিচ্ছু বলেনি!

অর্ণবের চোখদুটো বন্ধ হয়ে এলেও তার মধ্যে পাপিয়ার মুখটা ভেসে ওঠে।

 

ঋভু চট্টোপাধ্যায়
পশ্চিম বর্ধমান, ভারত

ছবি স্বত্ত্বঃ আনিসুল কবীর

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top