সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১

আলো (অনু গল্প) : ডঃ গৌতম সরকার


প্রকাশিত:
১০ মে ২০২১ ২১:১৩

আপডেট:
২ মে ২০২৪ ০৯:০৩

 

সূর্য্য ডুবে গেছে বেশ কিছুক্ষণ; গোধূলির শেষ আলোর সাথে চোখের রড আর কোন কোষের সন্ধিও প্রায় শেষ -এবার সত্যিই কিছু দেখা যাচ্ছেনা, চোখ বুঝে যে যেদিকে পারছে বলে লাথি মারছে....শেষে যখন বল উড়ে ঘোষপুকুরে গিয়ে পড়লো....তখন তরুনী গোধূলি যুবতী অন্ধকারে গিয়ে মিশেছে৷ আর কি করা ! অবশেষে খেলা বন্ধ হলো।

বাড়ি ফিরে, হাত-পা ধুয়ে, কোনোরকমে নাকে-মুখে কিছু গুঁজে হাতে একটা হ্যারিকেন ঝুলিয়ে ছেলেটা বেরিয়ে পড়ল৷ টিউটরের বাড়ি কাছেই, সঙ্গে পড়ে আর দুজন, একই ক্লাসে একই স্কুলে৷ কিন্তু কোনো এক ঝগড়ার কারণে তাদের মধ্যে বাক্যালাপ বন্ধ। তবে নিজেরাই একটা এসকেপ রুট বের করেছে- সেটা হলো তারা অতি প্রয়োজনে কথা বলতে পারবে, তবে কারোর নাম উল্লেখ করতে পারবেনা, 'আলো' বলে সম্বোধন করতে হবে৷ অর্থাৎ আলো বলে ডাকলে হেরে যাওয়ার ভয় রইলোনা- কারণ চিরকালই এই বয়সের বন্ধুদের ঝগড়া হবার পর উপযাচক হয়ে ভাব করাটা পরাজয় হিসেবে ধরা হয়৷ তাই এরা শত-সহস্র কথা আলোর অক্ষরেখা ধরে চালায়৷ কিন্তু কখনও কারোর নাম নেয় না, কারোর দিকে সোজা চোখে তাকিয়েও দেখেনা।

আলো ১ ছিল গল্পের ছেলেটি, আর আলো ২ নারী। সবার বাড়ি ছিল ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে৷ কিন্তু কপালক্র মে আলো ৩-র বাড়ি ছিল এদের দুজনের বাড়ির ঠিক উল্টো পথে....তাই প্রতিটা রাত্রে আলো ১-এর সুযোগ হতো আলো ২-র সাথে বাড়ি ফেরা৷ কোনো কথা হতোনা, মুখের দিকে তাকানোরও নিয়ম নেই, আলো ১-এর বাড়ি টিউশন বাড়ি সংলগ্ন গলি হলেও.....ছেলেটি প্রতিটি রাত্রে উপযাচক অনন্ত পথ পেরিয়ে যেত ....পরিশেষে আলো ২-এর মামা যখন ক্লাবের আড্ডা শেষ করে আলো ২-কে নিয়ে বাকি পথ ফিরতো.... তখন আলো ১ দিনের পর দিন (? রাতের পর রাত) অস্বস্তি, যন্ত্রণা, বিক্ষেপ, আকুতি, বিরহ, ব্যাকুতির শুষ্ক মরুপথ পেরিয়ে তারুন্যের কারুন্যে ভালোবাসার অমৃতরসে উত্তীর্ণ হওয়ার দীক্ষা অর্জন করতো৷

 

গৌতম সরকার
অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, যোগমায়া দেবী কলেজ, কলকাতা

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top