সিডনী বুধবার, ১লা মে ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১

আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নদী এবং নৌযোদ্ধারা : এস ডি সুব্রত


প্রকাশিত:
২৮ মার্চ ২০২৩ ২২:৫৩

আপডেট:
১ মে ২০২৪ ০২:২৭

 

আমাদে সবচেয়ে মূল্যবান অর্জন, আরাধ্য গর্বের ধন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এক সাগর রক্ত, ত্রিশ লাখ শহীদ আর অগণিত মা-বোনের ইজ্জতের বদৌলতে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পেয়েছিলাম স্বাধীন বাংলাদেশ। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের দেশের মুক্তিযুদ্ধা, ছাত্র কৃষক শ্রমিক জনতা বুদ্ধিজীবী ও নারী পুরুষ নির্বিশেষে আপামর জনতার অকুতোভয় সংগ্রামের মাধ্যমে পেয়েছিলাম নতুন মানচিত্র। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে আপামর জনতার পাশাপাশি আমাদের পরিবেশ প্রকৃতির অবদান রয়েছে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নদীর অবদান অপরিসীম। নদীর অনুকূল পরিস্থিতির বাড়তি সুবিধা আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় বাংলাদেশের ভৌগোলিক পরিবেশ ও প্রকৃতি মুক্তিযুদ্ধের অনুঘটক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে দারুণভাবে। নদ-নদী থেকে সুবিধা পেতে মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণের জন্য বর্ষাকাল অবধি অপেক্ষা করেছিলেন সেসময়।
আমাদের গেরিলাদের সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থান ছিল দেশের প্রতিটি এলাকা তাদের অতি পরিচিত। বাংলাদেশের নদী-নালা, খাল-বিল, টিলা-সমতলভূমি সব ছিল তাদের নিবিড় সম্পর্কে বাধা। অন্যদিকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আমাদের এসব নদ নদী ও হাওর হাওর সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না থাকায় গেরিলা যুদ্ধে ভালো ফল পেতে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের বেগ পেতে হয়নি।
বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকা ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য নতুন, পরিবেশ ও আবহাওয়া ছিল প্রতিকূল। তদুপরি অসংখ্য নদী-নালা ও খাল-বিল থাকার কারণে পাকিস্তানি সেনাদের যুদ্ধ করার মানসিক শক্তি একদম ভেঙে যায়। স্থানীয় নদীকেন্দ্রিক লোকায়ত জ্ঞান ও কৌশল জানা ছিল আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের।

হাওর বা নদীতে কচুরিপানা মাথায় দিয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করে হানাদারদের কাবু করা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের এক অন্যন্য কৌশল। এমনকি নদীতে খালি নৌকা ছেড়ে দিয়ে তার পেছনে গোপনে অগ্রসর হয়ে শত্রুকে নিশানায় এনে ঘায়েল করতেও মুক্তিযোদ্ধাদের বেগ পেতে হতো না। কখনো কখনো সাঁতরিয়ে খুব দিয়ে শত্রুপক্ষের জাহাজে বোমা স্থাপন করার মতো ইতিহাস আমাদের নৌ যোদ্ধাদের। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় গোটা রণাঙ্গনকে মোট ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। প্রতিটি সেক্টরে একেকজন সেক্টর কমান্ডার থাকলেও ১০ নম্বর সেক্টরে ছিল না। কারণ এর আওতাভুক্ত ছিল দেশের সব নদী ও সমুদ্রবন্দর এবং উপকূলীয় জলসীমা। মার্চের শুরুর দিকের একটি ঘটনা পৃথক নৌ-কমান্ডো গঠনের পথ খুলে দেয়। তখন পাকিস্তানি সাবমেরিন পিএনএস ম্যাংরো ফ্রান্সের তুলন সাবমেরিন ডকইয়ার্ডে যায়। উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানি সাবমেরিনারদের প্রশিক্ষণ। এর মধ্যে ১৩ জন ছিলেন বাঙালি। তাদের মধ্যে অন্তত আটজন দলত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে আসেন। তাদের নিয়ে নৌ-কমান্ডো গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এই কমান্ডো দেশের অভ্যন্তরে যেসব অভিযান পরিচালনা করে, তার মধ্যে 'অপারেশন জ্যাকপট' সবচেয়ে স্মরণীয়। এটি ছিল নৌযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে সফলতম গেরিলা অপারেশন। একাত্তরের ১৫ আগস্ট রাতের প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম, মোংলাসমুদ্র বন্দর এবং চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে একযোগে অসীম সাহসের সঙ্গে হামলা চালায় আমাদের নৌযোদ্ধারা। এই গেরিলা অপারেশনে পাকিস্তানি বাহিনীর বেশকিছু অস্ত্র ও রসদবাহী জাহাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তার মধ্যে বিদেশি কিছু জাহাজও ছিল। সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের নৌবাহিনীর খবর। অন্যদিকে মনোবল ভেঙে পড়ে পাকিস্তানি বাহিনীর। মুক্তিযোদ্ধা শেখ রোকনের মতে - 'শুধু চূড়ান্ত যুদ্ধে নয়; এক অর্থে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরেও, ২৬-২৭ মার্চ, বলতে গেলে আক্রান্ত ঢাকার জন্য ত্রাতা হয়ে এসেছিল ঢাকার চারপাশের নদীগুলো। ঢাকাবাসী প্রথম সুযোগেই বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা নদী পার হয়ে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রাথমিক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। হানাদার বাহিনীর গণহত্যার সাক্ষীও বুড়িগঙ্গা। রায়েরবাজারের যে স্থানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অনেকের লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেটা ছিল আদতে আদি বুড়িগঙ্গার নদী খাত। মুক্তিযুদ্ধে আরও যেসব শহীদের লাশের খোঁজ মেলেনি, আমি নিশ্চিত তারাও মিশে আছেন তাদের প্রিয় স্বদেশের নদ-নদীতে। আর নদ-নদীর মতোই আমাদের মধ্যে প্রবাহিত হয়ে চলছে তাদের ত্যাগ ও সংগ্রাম। তাই আমাদের নদীগুলো নিছক পানিপ্রবাহ নয়, এর সঙ্গে মিশে রয়েছে বুকের তাজা রক্ত।'
সুন্দর বনের প্রকৃতি নদী আমাদের সাহায্য করেছে সে সময়। প্রাকৃতিকভাবেই এক বড় লড়াকু আমাদের এই সুন্দরবন। এই সুন্দরবনের নদীসমূহও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হয়ে ওঠে, যা সুন্দরবন সাব-সেক্টর হিসেবে পরিচিত। বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জের মধ্যে ছিল সাব-সেক্টরের হেডকোয়ার্টার। ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন অঞ্চলটি ছিল নদীবহুল। এই এলাকায় নদ-নদী, খাল-বিল মাকড়সার জালের মতো বিস্তৃত। ১৯৭১ সালে মেজর জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে সুন্দরবনের ভেতরে আড়াইবাঁকী, মাইঠার ও মূর্তির খালের সংযোগস্থলে একটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে মোট ১৪ জন মুক্তিযোদ্ধা বড় একটি জেলে নৌকা নিয়ে সেদিন ধানসাগর খালের মধ্য দিয়ে ভোলা নদী পার হয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। তাদের সঙ্গে থাকা নৌকার দুই মাঝিও সেদিন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছিলেন। শেলা নদীর যুদ্ধ নৌ যুদ্ধাদের একটি অন্যতম উদাহরণ। ১৯৭১সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২০ তারিখের দিকে কমান্ডার জিয়াউদ্দিনের কাছে খবর পৌঁছায় শেলা নদী হয়ে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যবাহী জাহাজ ও গানবোট যাতায়াত করছে। খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঠিক করেন ওইসব নৌযান আক্রন করতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গেরিলা বাহিনীর অর্ধশতাধিক সদস্য শেলা নদীর উত্তর তীরে অবস্থান নেয়। পাকিস্তানি সেনা বহনকারী একটি স্টিমার এ পথ দিয়ে যাচ্ছিল। স্টিমারটি দেখামাত্র গুলি শুরু করেন মুক্তিযোদ্ধারা। স্টিমারটির ছাদে থাকা পাকিস্তানি সেনারাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। তখন পরিস্থিতি বুঝে পাকিস্তানিরা খুব দ্রুত স্টিমারটিকে ওই স্থান থেকে সরিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে যায়। তখন অপারেশন সফল না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সুন্দরবন এলাকায় নৌযান চলাচলের সময় নদীর খাড়ির অংশ দিয়েই চলাচল করে, যাতে চরে আটকে না যায়। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত হয় তারা শেলা নদীর খাড়ির পাশ দিয়ে যত বড় বড় গাছ আছে, তাতে ওঠে নৌযান আক্রমণের জন্য অপেক্ষা করবেন, যাতে গুলি করা যায় সরাসরি স্টিমারের ছাদে। তারপর পরিকল্পনা অনুযায়ী জায়গা বুঝে বড় বড় গাছে ওঠে পড়েন মুক্তি যোদ্ধারা। তারপর নিজেদের গামছা দিয়ে গাছের সঙ্গে ভালো করে বেঁধে নেন। এমন সময় খাড়ির যে অংশের বড় গাছগুলোয় মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নিয়েছেন, ঠিক সেখান দিয়েই স্টিমারটি চলতে দেখা যায়। স্টিমারের ছাদে তখন শতাধিক পাকিস্তানি সেনা অবস্থান করছিল। গাছে থেকেই পাকিস্তানি সেনাদের দিকে গুলি চালানো হয়। এতে অর্ধশতাধিক পাকিস্তানি হতাহত হয়। এই ঘটনায় পাকিস্তানি সেনারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় ভরা জোয়ার থাকায় স্টিমারটি উত্তরদিকে নিয়ে যায় এবং শেষে মোংলার দিকে নিয়ে যায় । মুক্তিযুদ্ধের ৫ নং সেক্টরের অধীনে মুক্তাপুর সাব-সেক্টরের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন জয়ন্ত কে সেন। স্নাতক পড়ূয়া এ টগবগে যুবকটি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিকেই মুক্তিবাহিনীতে যোগদান করেন। তার জন্মস্থানও সারি নদীর তীরে। মুক্তাপুর সাব-সেক্টরের অধীনে তিনি ভারতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং তার নেতৃত্বে এক কোম্পানি মুক্তযুদ্ধকালে অত্যন্ত বীরত্বের সঙ্গে এ অঞ্চলে অনেক সফল অভিযান পরিচালনা করে। দেশমাতৃকার টানে জীবনের মায়া ত্যাগ করে তিনি যুদ্ধ করেছেন। '৫নং সেক্টর সম্বন্ধে তিনি লিখেছেন নেহাত দায়সারা গোছের লেখনী'-এর বিপরীতে তিনি মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা নিয়ে '১৯৭১ সময়ের সাহসী সন্তান' নামে একটি বই প্রকাশ করেছেন, যেটিতে সত্যিই মুক্তিযুদ্ধের এ অঞ্চলের অনেক অজানা অধ্যায় উঠে এসেছে। সারি নদী জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট থানাকে পৃথক করেছে। সে নদীর তীরে একটি যুদ্ধ হয় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে, যেখানে একটি খাল মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের নায়ক হিসেবে কাজ করেছিল। জয়ন্ত কে সেনের ভাষায়, '...সেপ্টেম্বর মাসের একটি ঘটনা। পাকিস্তানিরা আমাদের প্রতিরক্ষা অবস্থানে প্রায় এক কোম্পানি সৈন্যসহ আক্রমণ করে। আমাদের অবস্থান সারি নদীর তীরে। জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট থানা এ নদী দ্বারা বিভক্ত। জৈন্তাপুর থানার বিড়াখাই-পাঁচসেওতি গ্রামে আমার কোম্পানির অবস্থান। অপর পারে আরও একটি কোম্পানি আমাদের গোয়াইনঘাট থানার আটলিহাই গ্রামে। একটা ছোট খাল গ্রামে প্রবেশ করে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে নাজুক করে দেয়। মোটামুটি সাধারণ বাঙ্কার তৈরি করে আমাদের অবস্থান। সকাল ৯টায় পাকিস্তানি আর্টিলারি শেলিং শুরু করে আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর। এক ব্যাটারি আর্টিলারি অর্থাৎ ৬টি কামান প্রায় একসঙ্গে শেলিং শুরু করে। প্রথম দিকে মনে হয়েছিল, এটা নিত্যদিনের ঘটনা। যখন শেলিং তীব্রতর হয়, তখন আমি বেতার যন্ত্র দ্বারা মুক্তাপুর সাব-সেক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং পাল্টা শেলিংয়ের জন্য অনুরোধ করি। পাকিস্তানি গানগুলো দরবস্ত এলাকার পেছনে ছিল। আমাদের মর্টারও আর্টিলারি কাউন্টার ফায়ার শুরু করে এবং আস্তে আস্তে পাকিস্তানি আর্টিলারি ফায়ার বন্ধ হয়ে যায়। ততক্ষণে নদীর উভয় তীর দিয়ে পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ শুরু করে। আমাদের সব হাতিয়ার গর্জে ওঠে। পাকিস্তানিরা প্রথম পর্যায়ের আক্রমণে রাজাকার, সিএএফ ও মিলিশিয়াদের সামনে পাঠিয়ে পেছন থেকে তারা অগ্রসর হতে থাকে। আমাদের গুলির জবাবে সম্মুখ সারির শত্রুরা ধানক্ষেতের মধ্যে ধরাশায়ী হতে শুরু করে। তবু পাকিস্তানি সৈন্যদের জেসিও ও কমান্ডারদের বলতে শুনি, 'কুচ নেহি হোয়া, আগাড়ি বাড়ো, মুক্তি ভাগ রাহ হ্যায়।' প্রায় ১৫০ গজ সামনে শত্রু। আমাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে তাদের অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। এ জন্য আমাদের মর্টারের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। পাকিস্তানি বাহিনীর ডান দিকের সৈন্যরা আমাদের অন্য কোম্পানিটির প্রায় ১০০ গজ দূরে এসে পৌঁছে; কিন্তু নদীর শাখা খালে পানি থাকায় নিচে নামতে ও খাল পার হয়ে আক্রমণ করতে ইতস্তত করে। ইতোমধ্যে পাকিস্তানি বাহিনী নদীর তীরের বাঁশঝাড়ের কভার দিয়ে সবাই প্রাণ নিয়ে দৌড়ায় (ব্রিগেডিয়ার জয়ন্ত কে সেন, ২০০৫ : ৬২-৬৩)।
আমাদের নদীগুলোতে নৌ অভিযান ও অন্যান্য অপারেশন বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। এ কারণে পাক বাহিনী তাদের আস্থা হারাতে শুরু করে। এরপরেই আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত যুদ্ধে হারতে শুরু করে। গেরিলা অপারেশনগুলো পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মনোবলকেও হ্রাস করেছিল প্রবলভাবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় নদী ও জলাশয় দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে যোগাযোগের সুবিধার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এগুলো পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে ধ্বংস করতেও ব্যপক ভূমিকা রাখে। তাছাড়া ১৯৭১ সালের ১৬ আগস্টের পর নৌ অভিযানের কারণে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর প্রভাব দ্রুত হ্রাস পেতে শুরু করে। যার ফলশ্রুতিতে বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যূদয় ঘটে বাংলাদেশ নামক নতুন ভূখন্ডের , আমরা পাই লাল সবুজের প্রিয় পতাকা । কিন্তু দুঃখের বিষয় নদী আজ ভরাট হচ্ছে , দখল হচ্ছে , দূষিত হচ্ছে , হারাচ্ছে গতি। এদিকে নজর দিতে হবে সকলে মিলে। সরকার ও জনগণকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে এজন্য।

 

এস ডি সুব্রত
কবি ও প্রাবন্ধিক

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top