সিডনী সোমবার, ৬ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি : টুটু রহমান


প্রকাশিত:
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:০৭

আপডেট:
৪ মে ২০২০ ১৩:২২

 

২০০৪ সালের ১৪ এপ্রিল(১ বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ ) বিবিসির বাংলা পরিসেবা মাধ্যম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করে। উল্লেখ্য, এই জরিপটিতে বাংলাদেশ ভারতসহ বিশ্বব্যাপী অবস্থানরত বাঙালিরা অংশগ্রহণ করে। জরিপেে ১৪০ জনের নাম আসে। যে যে কারণে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হয়েছেনঃ

★ উপাধি- বঙ্গবন্ধু
★ পরিচিতি- রাজনীতিবিদ, স্বাধীনতার ঘোষক, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী
★ যে জন্য বিখ্যাত - বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, একজন তুখোর রাজনীতিবিদ যিনি পাকিস্তান থেকে সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য বাঙালিদের দশকের পর দশক ধরে চলমান দীর্ঘ সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন, যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দুইবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও একবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সামরিক অভ্যুত্থানে যার প্রায় পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়।

সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার ( বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলা) টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম। তাঁর বাবার নাম লুৎফর রহমান, মা সায়েরা খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে শেখ মুজিব ছিলেন তৃতীয়। ১৯২৭ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৩৪ সালে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তিন বছর তাঁর পড়াশোনা বন্ধ ছিলো। ১৯৩৮ সালে ১৮ বছর বয়সে বিয়ে করেন বেগম ফজিলাতুন্নেছাকে। তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জনক তিনি। ১৯৩৯ সালে এক বন্ধুকে আটকে রেখে মারধরের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রথম কারাবরণ করেন।

১৯৪১ সালে ম্যাট্টিকুলেশন করে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। এখানে ছাত্র নেতা হিসেবে জনপ্রিয়তা পান। কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৪০ সালে প্রাদেশিক মুসলিম লীগ কাউন্সিলর হন। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ধর্মঘট ডাকায় গ্রেপ্তার হন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয় এবং জেলে থাকা অবস্থায় যুগ্ম-সম্পাদক হন।

১৯৫৫ সালের ১৭ জুন ঢাকার পল্টনের জনসভা থেকে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন দাবি করেন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং লাহোরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য ছয়দফা তুলে ধরেন; যেখানে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সামরিকসহ সকল অধিকারের কথা বলা হয়।  ছয়দফা ছিলো পূর্ব বাংলার মুক্তিসনদ। ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামি করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৬৯ সালে তা প্রত্যাহারে বাধ্য হয় সরকার।

১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগ রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবকে ' বঙ্গবন্ধু ' উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালি জাতির কাছে ছিলো মুক্তিযুদ্ধের গ্রিনসিগন্যাল । ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল কারাবন্দি শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে মুজিবনগর সরকার গঠণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেে ৩০০ আসেনর মধ্যে ২৯২ আসনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে।

১৯৭৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু প্রথম বাঙালি নেতা হিসেবে জাতিসংঘে বাংলায় বক্তৃতা করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বিপদগামী সেনাসদস্যদের হাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন ; যা ছিলো পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম রাজনৈতিক হত্যাকান্ড। বিদেশে থাকায় তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে যান। বর্তমানে বাংলাদেশের সফল ও জননন্দিত প্রধানমন্ত্রীই হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানের যোগ্য উত্তরসূরী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। 

 

টুটু রহমান
সাবেক উপ-পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top