সেনাপ্রধান জানালেন, শেখ হাসিনা কেন সেফ এক্সিট পেলেন
 প্রকাশিত: 
 ২৯ আগস্ট ২০২৪ ১১:৩৩
 আপডেট:
 ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ২১:৫৩
 
                                
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সেফ এক্সিট দেয়া কি ঠিক ছিল? নাকি তাকে দেশে রেখে বিচার করা উচিত? অনেকের মনেই রয়েছে এমন প্রশ্ন। এক টেলিফোন আলাপে সেনাপ্রধান বলেন, আমি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করছিলাম। তখন জানতে পারি, শেখ হাসিনা চলে যাচ্ছেন। তবে দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন এটি জানতাম না। আমি মনে করি, দেশে থাকলে শেখ হাসিনার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারতো। একটি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হোক, এটি কেউ চাইবে না। এটি নিশ্চয়ই কাম্য নয়।
তিনি বলেন, সবাই একসাথে কাজ করলে দেশ সংস্কার করা সম্ভব হবে। একটি সুন্দর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে পারব। সেনাবাহিনীও সরকারের সাথে রয়েছে, কাজ করছে। সেই লক্ষ্যে আমাদের যেতে হবেই, কারণ এই কার্যক্রমকে অর্ধেক সম্পন্ন অবস্থায় রাখা যাবে না। এই লক্ষ্য থেকে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনেকে গুজব ছড়াচ্ছে। সত্যের সাথে মিথ্যাকে মিশ্রণ করে একেক রকম সংবাদ পরিবেশন করা হয়। এর ফলে মানুষের ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়। যা সমীচীন নয়। এ সময় জনগণকে সত্য সংবাদ জানাতে এবং ধৈর্য ধারণ করারও আহ্বান জানান সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান।
মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো দায়িত্বশীল আচরণ করছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকেই দায়িত্বশীল আচরণ করছে। তারা সত্যের সাথে মিথ্যাকে মিশ্রণ করছে না। এরপরও তাদের আরও কাজ করতে হবে। আরও সময় পেলে মিডিয়াও ধীরে ধীরে সক্রিয় হয়ে উঠবে। ১৬ বছরের জঞ্জাল ১৬ দিনে মিটবে না, এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, সমস্যা ১৬ মাসে মেটানো গেলেও ভালো। আমলাতন্ত্র-পুলিশ ইত্যাদি সব দিকেই সমস্যা রয়েছে। এই সরকারকে সময় দিতে হবে। তারা কাজ করছে। অধৈর্য হলে হবে না।
আগের সরকারের সমর্থিত অনেকেই প্রশাসনের নানা জায়গাই রয়েছে। সেক্ষেত্রে শঙ্কা থেকে যায় কি না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ধীরে ধীরে এটিকে ঠিক করতে হবে। যে সরকার যখনই থাকে তার সাথে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করে। এর অর্থ এই না যে সবাই ‘স্বৈরাচারকে’ সমর্থন করেছে। তাদেরকে দৈনন্দিন কাজ করে যেতে হয়। এক্ষেত্রে তারা কিছু ভালো কাজ করেছে আবার কিছু খারাপ কাজ করেছে। কিন্তু সবাইকে এই তকমা দেয়া ঠিক নয়। তবে যারা দোষী তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে হবে।
সেনাবাহিনীর অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রসঙ্গে এই জেনারেল বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনেক বিষয়েই তদন্ত হচ্ছে। প্রমাণ ছাড়া কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না। প্রক্রিয়াটি একটু ধীর গতিতে চলছে। এখানে বেশকিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। সেনারা কেন ব্যারাকে ফিরে যাচ্ছে না এ বিষয়ে ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যারাকে ফিরে যেতে চাই। তবে পুলিশ দায়িত্ব নেয়ার মতো অবস্থায় না থাকায় সেনাবাহিনীকে সম্ভবত কিছুকাল থাকতে হবে। পুলিশ বাহিনী প্রায় ভেঙে গিয়েছিল। তারা দায়িত্ব নেয়ার মত অবস্থায় ফিরলে সেনাবাহিনী অবশ্যই ব্যারাকে ফিরে যাবে। আমরা বেশিদিন থাকতে চাই না।
সম্প্রতি বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, সেনাবাহিনী এই বিষয়গুলোকে কাউন্টার করছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডেও একটি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। সেনাবাহিনী তাদেরকে বুঝিয়ে ক্ষান্ত করেছে। অনেকেই কষ্টের মধ্যে রয়েছে। এরপরও ধৈর্য ধরে ধীরে ধীরে বিষয়গুলো সমাধান করতে হবে। আনসারদের ইস্যুতে অ্যাকশন নিয়ে তাদের নিবৃত্ত করা হয়েছে।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    -2020-01-01-23-27-22.jpg) 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: