এখনো বাজারে সেই ৫২ ভেজাল পণ্য
প্রকাশিত:
১৪ মে ২০১৯ ০৬:৫৮
আপডেট:
৫ মে ২০২৫ ১৪:৩১

বিএসটিআইর পরীক্ষায় প্রমাণিত ৫২টি ভেজাল বা নিম্নমানের খাদ্যপণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এসব খাদ্য পণ্য বিক্রি ও সরবরাহে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে। এরপরও এখনো বাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব ভেজাল পণ্য। এ বিষয়ে এখনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি সংস্থাগুলোর। এজন্য তারা কারণ দেখাচ্ছে ‘আদেশের অনুলিপি’ হাতে না আসাটাকে।
গত রবিবার এক রিট শুনানির আদেশে উচ্চ আদালত বিভিন্ন ধরনের ভোজ্য তেল, খাবার মসলা, পানি, সেমাই, ঘি, ময়দা, দই, চানাচুর, মধু, লবণসহ বিভিন্ন ধরনের ৫২টি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি বন্ধ এবং সেগুলো বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দেয়।
বিএসটিআইয়ের পরীক্ষার মাধ্যমে পুনরায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এসব পণ্য উৎপাদন, সরবরাহ এবং বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় ওই রায়ে। আর এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেন আদালত।
আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার, শান্তিনগর, উত্তরাসহ বেশ কয়েকটি এলাকার দোকানপাট ও বাজারে এখনো সেসব পণ্যের মজুদ দেখা যায়। থেমেও নেই এসব পণ্যের বিক্রি। এসব পণ্যের মজুদ সরিয়ে নেওয়া অথবা বিক্রি বন্ধে এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি পণ্যগুলোর মালিকানা প্রতিষ্ঠান বা উৎপাদক থেকে শুরু করে সরবরাহকারী অথবা সরকারি সংস্থাগুলোকে।
উত্তরার বিডিআর মার্কেটের মুদি দোকানি বলেন, ভেজালের কারণে নিষিদ্ধ হওয়া পণ্যের মধ্যে বেশ কয়েকটি পণ্য আছে তার দোকানেও। আর সেগুলো ক্রেতারা কিনছেনও।
কারওয়ান বাজারে পণ্য কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, পণ্যে ভেজাল আছে বুঝলাম, কিন্তু ভাল বা নির্ভেজাল পণ্যটা কোথায়? ৫২টি হয়তো পরীক্ষা করে ভেজাল পাওয়া গেছে, কিন্তু ঠিকমত পরীক্ষা করলে দেখা যাবে যে, প্রায় শতভাগ পণ্যেই ভেজাল। তাই ভেজাল পণ্যই যেহেতু কিনতে হবে তাহলে এগুলো কিনলেই বা আর কী হবে!
এবিষয় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, এ ধরনের খবর রীতিমত আতঙ্কিত হওয়ার মত খবর। কিন্ত বাস্তবতা হচ্ছে, বিএসটিআই বা অন্যান্য অনেক সংস্থার ওপরই এখন জনগণের আস্থা সেভাবে নেই। বিএসটিআইয়ের থেকে অনেক উচ্চমানের পরীক্ষাগার আছে এসব প্রতিষ্ঠানের। তবে আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আমাদের দেওয়া হয়নি। কিন্তু আমরা দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে একটি চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা সেখানে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলবো যে, আমাদের মজুদে থাকা মালগুলো নিয়ে কেনার সময়ে দেওয়া মূল্য ফিরিয়ে দিতে অথবা পণ্যগুলোতে যে ভেজাল নেই সেটা যেন তারা প্রমাণ করে।
এদিকে আদালতের রায়ের অনুলিপি হাতে পেলে সেখানে থাকা নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ কী নেওয়া হবে জানতে চাইলে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য এবং অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন বলেন, আদালতের আদেশের কপি না পাওয়া পর্যন্ত আসলে আমাদের কিছুই করার নেই। কারণ আদেশে উল্লেখিত বিভিন্ন শব্দগত ব্যাখ্যার ওপর নির্ভর করবে যে আমাদের কী পদক্ষেপ নিতে হবে? পণ্যগুলো সরিয়ে ফেলা বলতে ঠিক কোনগুলো বা কী পরিমাণ সরিয়ে ফেলতে হবে সেটা দেখতে হবে। কোনো একটি ব্যাচ নাকি পুরো লট সরিয়ে ফেলতে হবে? এসব বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে রায় বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেব।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: