বর্তমানে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ দরকার : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য


প্রকাশিত:
৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৫

আপডেট:
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:১৭


শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান ও সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে অতিরঞ্জিত দেখিয়েছে। তাই জিডিপির প্রকৃত আকার জানতে একটি কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

৫ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত মতবিনিময়সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, জাতীয় উন্নয়নের নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত নিশ্চিতে পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীন কমিশনে রূপান্তর করতে হবে।

গত ১৫ বছরের বেশির ভাগ সময় উচ্চ প্রবৃদ্ধির হিসাবে দেশের অর্থনীতির আকার ছাড়িয়েছে সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলার।
কিন্তু অর্থনীতিবিদরা প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের মতো সংশ্লিষ্ট সূচকের ভারসাম্য খুঁজে পাননি। শ্বেতপত্র কমিটি দেখেছে রাজনৈতিক সুবিধা পেতে উন্নয়নকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। এসব বিবেচনায় দেশের অর্থনীতির প্রকৃত আকার বের করা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আমাদের যে উন্নয়ন পরিসংখ্যান আছে তাকে আরেকটি আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের যেমন একটি কর্ম কমিশন আছে, এমন একটি কমিশন করে রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে সংসদের কাছে জবাবদিহি করার একটা সুরক্ষার কথা আমরা প্রস্তাব করেছি। আগামী দিনের উন্নয়ন করতে হলে তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি দূর করতে হবে। জাতীয় পরিসংখ্যানকে রাষ্ট্রের পঞ্চম স্তম্ভ হিসেবে দেখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। বিনিয়োগ আসবে না, যদি পরিবেশ ও নীতিমালার কন্টিনিউ না থাকে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে খেয়াল রাখতে হবে ভারত, বাংলাদেশ সম্পর্কের দিকেও। দুর্নীতি ও চুরির দায় আমাদের। এটাকে অস্বীকার করার বা অন্য কারো ওপর দায় চাপানোর সুযোগ নেই।’

সরকারি কেনাকাটা ও প্রকল্পে ৪০ শতাংশ অর্থ লোপাট হয়েছে বলে মনে করেন আলোচকরা। তাদের মতে, এ জন্য ই-জিপি পদ্ধতি আরো স্বচ্ছ করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে বিদ্যুৎ-জ্বালানি, সামাজিক কর্মসূচি, ব্যাংক খাত ও গ্রামীণ শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল সংস্কার দরকার। জনগণের করের টাকায় ভর্তুকি কমাতে রাষ্ট্রায়ত্ত নাজুক শিল্পগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শও দেন বক্তারা।

অর্থনীতির বিশ্লেষক পারভেজ করিম আব্বাসী বলেন, ‘আওয়ামী সরকার জনপ্রশাসনে কর্মরতদের সুযোগ-সুবিধা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। এভাবে তাদের নীরব সমর্থন আদায় করে শাসনকাল দীর্ঘায়িত করেছে। এখন কার্যকর পরিকল্পনা নিতে হবে জনগণের অর্থে কত বড় জনপ্রশাসন বহাল রাখব। আমার মতে, সরকারি চাকরিতে দক্ষতা, পেশাদারি বাড়াতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগও হতে পারে।’

মতবিনিময়ে বলা হয়, প্রবাসী আয়ের ওপর ভর করেই অনেক দিন ধরেই মন্দা এড়িয়ে চলছে অর্থনীতি। এমন অবস্থায় এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় রপ্তানিপণ্য ও বাজারে বৈচিত্র্য আনতে গুরুত্ব দেন বিশ্লেষকরা।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top