সিডনী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


২০১৯ সালে সড়কে প্রাণ গেছে ৫২২৭ জনের: নিরাপদ সড়ক চাই


প্রকাশিত:
৫ জানুয়ারী ২০২০ ২৩:১৫

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৩৪

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: ২০১৮ সালের তুলনায় বাংলাদেশের সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা ২০১৯ সালে বেড়েছে বলে পরিসংখ্যান দিয়েছে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলন। পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে দেড় হাজারটি এবং নিহত বেড়েছে ৭৮৮ জন।

জাতীয় প্রেসক্লাবে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনার খবর এবং সংগঠনের বিভিন্ন শাখা থেকে পাঠানো তথ্য সন্নিবেশ করে তৈরি প্রতিবেদন তুলে ধরেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের (নিসচা) চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর নানা উদ্যোগ নেওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা কিছুটা কমে ছিল; কিন্তু তা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি।’

নিসচার তথ্য অনুযায়ী, ২০‌১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ হাজার ৭০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ২২৭ জন নিহত হয়েছে। অথচ ২০১৮ সালের ৩ হাজার ৩৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল ৪ হাজার ৪৩৯ জন। ২০১৮ সালের তুলনায় ১ হাজার ৫৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হয়েছে ২০১৯ সালে। ২০১৮ সালের চেয়ে ২০১৯ সালে ৭৮৮ জন মানুষ বেশি মারা গেছে। তবে নিহতের সংখ্যা বাড়লেও কমেছে আহতের সংখ্যা। ২০১৮ সালের সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৮ জন আহত হয়েছিল, ২০১৯ সালে আহত হয়েছে ৬ হাজার ৫৩ জন।

ফাইল ছবি

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের নির্দেশ থাকা সত্ত্বে পুলিশ, সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসন থেকে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলে নিয়মিত প্রতিবেদন দেওয়া হয় না। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সরকারিভাবে পাওয়া যায় না কোনো পরিসংখ্যান। এক্ষেত্রে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত সংখ্যা সঠিক ও নিখুঁতভাবে নির্ণয় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এটি করার দায়িত্ব ছিল সরকারের। এজন্য আমরা যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি দুর্ঘটনা অনুসন্ধান সেল গঠন করে প্রতিবছরের সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য জাতির কাছে তুলে ধরার অনুরোধ করছি, যাতে সঠিক ও নিখুঁত সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য সবাই জানতে পারে এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৯ সালে ১৬২টি রেল দুর্ঘটনায় ১৯৮ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৩৪৭ জন। ৩০টি নৌ-দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৬৪ জন, আহত হয়েছে ১৫৭ জন। এসব দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১০ জন নিখোঁজ রয়েছে। নিচসা সড়কে দুর্ঘটনার জন্য এককভাবে সবচেয়ে বেশি দায়ী করেছে ট্রাককে। মোট ১০৯৮টি দুর্ঘটনার জন্য ট্রাক দায়ী বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এছাড়া মোটরসাইকেল ১০৩৩টি, বাস ৯৯২টি, কাভার্ড ভ্যান ১৬০টি, মাইক্রোবাস ১৫৮টি, নসিমন ৮৩টি, প্রাইভেটকার ৭৯টি এবং পিকআপ, অটোরিকশা, ভ্যান ও অন্যান্য যানবাহন ২ হাজার ১৭৮টি দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বেশিরভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বড় শহর ও মহাসড়কে। ভ্যান, রিকশা, নসিমন, অটোরিকশার মতো যানবাহন এসব দুর্ঘটনার জন্য বেশি দায়ী বলে নিসচার পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে। ধীরগতির এসব যান এখনও মহাসড়কে চলাচল করে দূরপাল্লার বড় গাড়ি চলাচলে বিঘ্ন ঘটালেও তা ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের উদ্যোগ নেই বলে নিচসার অভিযোগ।

সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে নিসচা। এছাড়া সচেতনতামূলক কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে প্রচার, স্কুলের পাঠ্যক্রমে সড়ক দুর্ঘটনারোধের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা বাস্তবায়ন ও ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগের সুপারিশ করেছে নিসচা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top