সিডনী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


বাহরাইনের রাজধানীতে ইসরাইলি দূতাবাস উদ্বোধন


প্রকাশিত:
১ অক্টোবর ২০২১ ২১:৩২

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১১:০০

 

প্রভাত ফেরী: বৃহস্পতিবার বাহরাইনের রাজধানী মানামাতে ইসরাইলি দূতাবাস উদ্বোধন করা হয়। ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ায়ির লাপিদ বাহরাইন সফরে দেশটিতে এই দূতাবাস উদ্বোধন করেন তিনি।

এদিকে ফিলিস্তিনিরা এবং আরব বিশ্বের সাধারণ মানুষ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ইসরাইলের সাথে মীমাংসায় যথেষ্ঠ অগ্রগতির আগেই আরব নেতাদের এই চুক্তিকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে বিবেচনা করছে।

গত বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় কথিত 'ইবরাহীমি চুক্তির' মাধ্যমে ইসরাইলের সাথে বাহরাইনের কূটনীতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার এক বছর পর মানামায় দূতাবাস খুললো ইসরাইল। বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ আল-জায়ানি দূতাবাস উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন।

দূতাবাস উদ্বোধনের পর এক টুইট বার্তায় ইয়ায়ির লাপিদ বলেন, 'বাহরাইনে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলের দূতাবাস খুলেছি। আমরা একমত হয়েছি, ইসরাইলে বাহরাইনের দূতাবাস এই বছরের শেষে খোলা হবে।'

এর আগে বৃহস্পতিবার একদিনের সংক্ষিপ্ত সফরে বাহরাইন যান ইয়ায়ির লাপিদ। ইয়ায়ির লাপিদের সফরের মধ্য দিয়ে বাহরাইনের রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স গালফ এয়ার মানামা-তেলআবিব বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচল শুরু করে।

সফরে ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাহরাইনের বাদশাহ হামাদ বিন ঈসা আল-খলিফা ও যুবরাজ সালমান বিন হামাদ আল-খলিফার সাথে সাক্ষাৎ করেন।

এছাড়া বাহরাইনে মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম বহরের সদর দফতরও পরিদর্শন করেন ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পরে বাহরাইনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ আল-জায়ানির সাথে বৈঠকের পর বেশ কিছু দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন ইয়ায়ির লাপিদ।

বৈঠক শেষে বাহরাইন ও ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অংশগ্রহণে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লাপিদকে লক্ষ্য করে আল-জায়ানি বলেন, 'আপনার সফর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অগ্রগতি তৈরি করেছে এবং প্রমাণ করেছে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সহযোগিতায় আমাদের সাদৃশ্যপূর্ণ ইচ্ছার। পাশাপাশি এটি এই অঞ্চলের জনগণের প্রকৃত ও স্থায়ী নিরাপত্তা ও উন্নতি অর্জিত হয়েছে।'

আল-জায়ানি সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের সংকট মীমাংসায় দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রতি বাহরাইনের সমর্থন প্রকাশ করেন।

অপরদিকে ইয়ায়ির লাপিদ দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে তার সমর্থনের কথা জানালেও তার সরকারের 'সকলেই একই ধরনের চিন্তা করেন না' বলে মত প্রকাশ করেন।

এর আগে জুনে সরকার গঠনের পর ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ায়ির লাপিদ ইবরাহীমি চুক্তিতে অংশ নেয়া সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরক্কোতে সফর করেন এবং সেখানে ইসরাইলের কূটনীতিক দফতর উদ্বোধন করেন।

গত জুনে ইসরাইলে দুই বছর রাজনৈতিক সংকটের পর মধ্যপন্থী ইয়েশ আতিদ দলের প্রধান ইয়ায়ির লাপিদের উদ্যোগে দীর্ঘকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরোধী বিভিন্ন ধারার ইসরাইলি রাজনৈতিক দলগুলো একত্রিত হয়ে জোট গঠন করে। নেসেটে সম্মিলিত জোটের সদস্যদের ভোটে নেতানিয়াহুর ১২ বছরের শাসনের অবসান হয় এবং নতুন জোট সরকার গঠন করা হয়।

জোট গঠনের শর্ত অনুসারে প্রথম দুই বছরের জন্য উগ্র জায়নবাদী দল ইয়ামিনার প্রধান ও নেতানিয়াহুর এক সময়কার সহযোগী নাফতালি বেনেত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন।

বেনেত যে কোনো প্রকারে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করে আসছেন।

এদিকে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, লাপিদের বাহরাইন সফরের মাধ্যমে ইসরাইলকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য উৎসাহ দেয়া হয়েছে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় কথিত 'ইবরাহীমি চুক্তির' মাধ্যমে ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন কূটনীতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে। পরে মরক্কো ও সুদান এই চুক্তিতে যোগ দেয়।

এর আগে ১৯৭৮ সালে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির মাধ্যমে প্রথম আরব দেশ হিসেবে ইসরাইলের সাথে কূটনীতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে মিসর। পরে ১৯৯৪ সালে ইসরাইলের সাথে দ্বিতীয় আরব দেশ হিসেবে জর্দান কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।

সূত্র : আলজাজিরা

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top