সিডনী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১৩, আক্রান্ত ১০ হাজার


প্রকাশিত:
৩১ জানুয়ারী ২০২০ ২২:১৩

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:২৯

ছবি: সংগৃহীত

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে চীনের মূল ভূখণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৩ জনে। এছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

বেইজিং জানিয়েছে, চীনের হুবেই প্রদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক দিনে আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, এনিয়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ২১৩ জনে পৌঁছেছে আর আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ৬৯২ জন। ভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে প্রতিদিন সকালে নিহত ও আক্রান্তের সংখ্যা প্রকাশ করছে চীন।

হুবেই প্রদেশ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল উহান শহরে মৃতের সংখ্যা ২০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিকে সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া চীনের প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বৃহস্পতিবার জেনেভায় এক জরুরি বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেয় সংস্থাটি। খবর সিএনএন, আল জাজিরা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাধনম ঘেব্রেইসাস বলেন, এই ঘোষণার মূল কারণ শুধু চীনে কী হচ্ছে তা নয় বরং বিশ্বের অন্যান্য দেশে কী ঘটছে সেটাও দেখতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঘোষণার পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়িং বলেন, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আত্মবিশ্বাস ও সক্ষমতা বেইজিংয়ের রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চীন ডব্লিউএইচও এবং অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে’।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে চীনা কর্তৃপক্ষ করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১৭০ বলে জানায়। এক দিনের ব্যবধানে তা ২১৩-তে পৌঁছেছে। ফলে এই সময় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ২৫ শতাংশ।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ পর্যন্ত চীন, থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, হংকং, সিঙ্গাপুর, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তাইওয়ানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ইসরায়েলেও এক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র চীনের মধ্যাঞ্চলের উহান শহর থেকে শত শত বিদেশি নাগরিককে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং নিহতের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের উহান থেকে সরিয়ে নিচ্ছে।

তবে বিস্তার ঠেকাতে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ চীনগামী বিমানের ফ্লাইট বাতিল করছে। এর মধ্যে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, এয়ার এশিয়া, ক্যাথে প্যাসিফিক, এয়ার ইন্ডিয়া ও ফিনএয়ার ইতোমধ্যে চীনগামী বিমানের সংখ্যা কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে।

২০০৩ সালে একই গোত্রের ভাইরাস সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোমের (সার্স) প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় চীনে। সেই সময় সার্সে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এবার ছাড়িয়ে গেছে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস। চীন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ববাজারে বড় ধরনের ধাক্কার আশঙ্কা করা হচ্ছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top