সিডনী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


করোনায় মৃত্যুর মিছিল থামছেই না, মৃতের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়াল


প্রকাশিত:
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২২:২৪

আপডেট:
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:৫৮

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী: সাপ ও বাদুড়ের শরীর থেকে মানবদেহে আক্রমণকারী করোনা ভাইরাস ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং চীনে মহামারী আকারে রূপ নিয়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগে করোনা ভাইরাসে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করে মার্কিন গবেষণা সংস্থা। ইতোমধ্যে এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। শুধু শনিবার এ ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে মরেছে ১৪৩ জন। ফলে এ নিয়ে সব মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১ হাজার ৫২৭ জনে।

এ ছাড়া নববর্ষের ছুটি কাটিয়ে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে ফিরে যাওয়া প্রত্যেককে ১৪ দিন ‘সেলফ কোয়ারেন্টাইনে’ (অন্য মানুষের কাছ থেকে দূরে অবস্থান) থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে ভয়াবহ এ ভাইরাস মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত চীনের খরচ হয়েছে ৩৩ লাখ কোটি টাকা। ফলে গত ৩০ বছরের মধ্যে বর্তমানে চীনের অর্থনীতি সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে। বিবিসি, ডেইলি মেইল, সিএনএন।

শনিবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, শুক্রবার মৃতদের মধ্যে ১৩৯ জনই ভাইরাসের উৎসস্থল হুবেই প্রদেশের। এর মধ্যে শুধু উহানেই শনিবার প্রাণ হারিয়েছেন ১০৭ জন। এতে করে করোনাভাইরাসে গোটা চীনে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫২৩ জন। শুক্রবার চীনে নতুন করে ২ হাজার ৬৪১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। ফলে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৬৪ হাজার ৪৯৫ জন। আর এই ভাইরাসে বিশ্ব জুড়ে মোট মৃত্যুবরণ করেছে ১ হাজার ৫২৭ জন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ হাজার ৯০ জন।

এদিকে, চীনা নববর্ষের বর্ধিত ছুটি কাটিয়ে যারা চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে ফিরছেন, তাদের ১৪ দিন ‘সেলফ কোয়ারেন্টাইনে’ থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বেইজিং ভাইরাস প্রিভেনশন ওয়ার্কিং গ্রুপের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন বেইজিংয়ে ফিরে আসা সবার ঘরে থাকা উচিত। অথবা ১৪ দিনের জন্য গ্রুপ পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। কেউ এই আদেশ না মানলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনের বাইরে এখন পর্যন্ত তিনজন মারা গেছে। জাপানে কোয়ারেন্টাইনে রাখা প্রমোদতরীতে নতুন করে আরও ৪৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ওই জাহাজটিতে করোনা আক্রান্ত যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৮ জনে। এ পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন।

শুধু আক্রান্ত আর মৃত্যুতেই থেমে নেই এ ভাইরাস। ভয়াবহ এ ভাইরাস শুধু চীনকে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে ফেলেনি, মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে দেশটির অর্থনীতির ওপরও। ভয়াবহ এ ভাইরাস মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত চীনের খরচ হয়েছে ৩৩ লাখ কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একেবারে তলানিতে পৌঁছে গেছে চীনের অর্থনীতি। ৩০ বছরের ইতিহাসে এখন সব থেকে তলানিতে দেশটির অর্থনীতি। যা চীনের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা।

জানা গেছে, গত চার বছরের মধ্যে চীনের সংস্থাগুলোতে হঠাৎ করেই কমে গেছে লাভের পরিমাণ। ভাইরাস আতঙ্কে অন্যান্য দেশের বিভিন্ন সংস্থাও চীনে থাকা অফিসগুলোর বন্ধ করে দিয়েছে। সব কর্মীদের ফিরিয়ে নিচ্ছেন সেখান থেকে। কমিউনিস্ট চীনের শেয়ারবাজারেও বড় পতন লক্ষ্য করা গেছে। অর্থনীতিরবিদরা বলছেন, গত এক মাসে শুধু করোনাভাইরাসের জন্য ৪২০ বিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ৩৩ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যা চীনের জন্যে যথেষ্ট মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কীভাবে বিশাল এই ক্ষতি মোকাবেলা করা যায় তা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে চায়নিজদের কাছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top