সিডনী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে


প্রকাশিত:
২৯ মার্চ ২০২০ ২০:৩৩

আপডেট:
৪ মে ২০২৪ ০১:৪৭

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী: সারাবিশ্বে করোনার ভয়াল থাবা কেড়ে নিয়েছে ৩০ হাজারেরও বেশি প্রাণ। এই ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ছয় লাখেরও বেশি। আর এরমধ্যেই চীনের উহান থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, কোথাও বাদ পড়েনি করোনার বিস্তার। বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশে এখন তাণ্ডব চালাচ্ছে মরণঘাতি এ ভাইরাসটি।

করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু ইতালিতেই মারা গেছে ১০ হাজারের বেশি মানুষ। শুধু গত ২৪ ঘণ্টাতেই ইতালিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন ৮৮৯ জন। এদিকে স্পেনও বিপর্যস্ত। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৩ হাজারেরও বেশি। মারা গেছে প্রায় ছয় হাজার। কেবল গত ২৪ ঘণ্টাতেই দেশটি হারিয়েছে ১৯ নাগরিক।

মার্কিন মুলুকে ১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে অনেক আগে। বর্তমানে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার। ইতোমধ্যে ট্রাম্পের দেশেই করোনার ছোবলে প্রাণ হারিয়েছে ২ হাজার ৪৭ জন।

এদিকে বলা চলে ইউরোপ প্রায় লকডাউন। এশিয়া, আফ্রিকাসহ অন্যান্য মহাদেশের পরিস্থিতিও প্রায় একইরকম। ঘরবন্দী মানুষ। মৃত্যুর খবর আর বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ধসের আশঙ্কা।


করোনা ছাড়েনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আর স্বাস্থ্যমন্ত্রীকেও। বৃটিশ রাজপরিবারেও ঢুকে গেছে এ ভাইরাসটি। প্রিন্স চার্লসও এতে আক্রান্ত। অসস্থা এতোটাই মারাত্মক যে, করোনা কাকে কখন আক্রমণ করছে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কিছু বলতে পারছে না। এমনকি এখন পর্যন্ত ভাইরাসটি প্রতিষেধকও আবিস্কার হয়নি। আরও অন্তত একবছর সময় লেগে যাবে এটির প্রতিষেধক আবিস্কার করতে।

যুক্তরাজ্যে করোনায় গত একদিনে ২৬০ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে করোনায় সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে নেদারল্যান্ডসে কোভিড-১৯ রোগে ৬৩৯ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৯৩ জনের। বেলজিয়ামে ৩৫৩ এবং সুইজারল্যান্ডে করোনায় ২৬৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। শতাধিক মৃত্যু হয়েছে ইউরোপের আরও অনেক দেশে।

করোনা মানছে না কোনো ভৌগলিক সীমানা। মানছে না ধর্ম, বর্ণ, গোত্র কিংবা ব্যবধান। ইচ্ছে হলেও ছড়িয়ে পড়ছে যে কারও দেহে। বিস্তার করছে সংক্রমণ। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইরান, স্পেনসহ অনেকগুলো দেশের প্রথমসারির প্রায় অর্ধশতাধিক নেতার গায়ে হামলা চালিয়েছে প্রাণঘাতি এ ভাইরাস। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ করোনা ঠেকাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। বহুল পরিচিত ও জনবহুল রাজ্য নিউইয়র্কের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। ডেব, মাস্ক আর ভেন্টিলেটর সঙ্কটে পড়েছে দেশটি। ইতোমধ্যে ট্রাম্প জাহাজ হাসপাতাল বানিয়ে সাগরপথে পাঠিয়েছেন নিউইয়র্কে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনেক আগেই সতর্ক করেছে এশিয়াকে। এ মহাদেশে ইরানের অবস্থা বেশি নাজুক। গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে মৃত্যু হয়েছে ১৩৯ জনের। এ যাবত দেশটি হারিয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ। ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পাননি। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্টসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা আইসোলেশনে আছেন।

ব্যাপকভাবে বিস্তার ছড়ানো দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে জার্মানির নামও। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭ হাজার ৬৯৫ জন। তবে আক্রান্তদের মধ্যে ৪৩৩ জন মারা গেছেন। যা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৮২ জনের মৃত্যু হওয়ার পর আশঙ্কা করা হচ্ছে সেখানেও ভালোই মহামারি আকার ধারণ করবে করোনা।

করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ভারতে এখনও এক হাজার না হলেও আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৪ জন। দেশটিতে চলছে ২১ দিনের লক ডাউন। তবে পাকিস্তানে ১৫শ ছাড়িয়েছে। ১২জন মারা গেছে ইমরান খানের দেশে।

বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত ৪৮ জন। ইতোমধ্যেই পাঁচজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা। ২৮ জনের চিকিৎসা চললেও ১৫জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এখানাকার সব অফিস-আদালত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তারপর থেকেই রাস্তায় মানুষ বের হওয়া এতোটাই সীমিত করা হয়েছে, এমন সুনশান -ফাঁকা ঢাকা আগে কেউ দেখেনি।

চীনের মধ্যাঞ্চলের প্রদেশ হুবেইয়ের রাজধানী উহান থেকে করোনার শুরু। সেখানে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছে কোভিড-১৯। দীর্ঘদিন উহান জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করলেও এখন সেখানে খানিকটা প্রশান্তির বাতাস বইছে। উহানের লকডাউন তুলে নেওয়া হয়েছে। গত কয়েকদিনে উহানে অবস্থানকারীদের মাঝে আর করোনা পাওয়া যায়নি। যে কয়েকজনের মাঝে পাওয়া গেছে, তারা সবাই বিদেশ থেকে উহানে এসেছেন। তবে বিদেশফেরতদের মাধ্যমে আবারও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করায় সেখানে দ্বিতীয় দফা করোনা ‌‘বিষ্ফোরণের’ শঙ্কা তৈরি হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top