সিডনী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


স্পেন ও ইতালিতে ফের বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা, বেসামাল যুক্তরাষ্ট্র


প্রকাশিত:
৮ এপ্রিল ২০২০ ০২:৪৩

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:২৯

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী: বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কোনোমতেই তার রাশ টেনে ধরা যাচ্ছে না। চলতি সপ্তাহের শুরুতে  স্পেন ও ইতালিতে করোনায় প্রতিদিনের মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমে আসলেও মঙ্গলবার তা আবার বেড়ে গেছে। আর যুক্তরাষ্ট্র বলা চলে করোনার থাবায় বেসামাল। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী করোনায় সর্বশেষ আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬০৬। মারা গেছে, ৭৬ হাজার ৪০৩। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩৯ জন।

গত চারদিন ধরে কম প্রাণহানির রেকর্ড একটু আশা জাগালেও গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে স্পেনে করোনায় মৃত্যু আবারও আগের দিনের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও অন্তত ৭৪৩ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, একদিনের ব্যবধানে দেশে করোনায় প্রাণহানি আবারও বেড়েছে। আগের দিন ৬৩৭ জন মারা গেলেও মঙ্গলবার তা একশো’র বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৩ হাজার ৭৯৮ জন। স্প্যানিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশে নতুন করে আরও ৫ হাজার ৪৭৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন এক লাখ ৪০ হাজার ৫১০ এবং সুস্থ হয়েছেন ৪৩ হাজার ২০৮ জন।

গত চারদিন ধরে দেশটিতে করোনায় প্রাণহানির সংখ্যা ছয় শ’র নিচে থাকলেও মঙ্গলবার ব্যতিক্রম চিত্র দেখা গেছে। স্পেন করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সময় পার হয়ে আসছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আগের চারদিনের রেকর্ড ভেঙে যাওয়ায় তারা আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে ইউরোপের আরেক দেশ ইতালিতে। সংক্রমণের দিক থেকে স্পেনের পেছনে থাকলেও দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ হাজার ৫২৩ জন, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। এছাড়া দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৪৭ জন। গত সপ্তাহে মৃত্যুর সংখ্যাটা এক লাফে অনেকটাই নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল ইতালি। রোববার সেখানে মৃত্যু হয়েছিল ৫২৫ জনের। দেশে করোনা সংক্রমণের পর থেকে যা সর্বনিম্ন বলেই জানিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কিন্তু মঙ্গলবার মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাড়ায় ৬৩৬ জনে। ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, সংক্রমণ যাতে আর বাড়তে না পারে তার জন্য আরও কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। প্রতিদিনের মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ফ্রান্সেও। রোববার দেশটিতে ৩৫৭ জন মারা গেলেও সোমবার মারা যায় ৬০৫ জন।

তবে এই মুহূর্তে সংক্রমণের দিক থেকে সবাইকে টপকে গিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৭৪।  পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ৯৬৬ জন। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা নিউইয়র্কের। তবে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো। গত দু’দিনে মৃত্যুর হার যেমন কমেছে, পাশাপাশি সংক্রমণেও অনেকটা রাশ টানা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।  এই সংখ্যা কমার কারণ হিসাবে সামাজিক দূরত্বের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ইরানেই সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনাভাইরাস। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিয়ানুস জাহানপুর টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে জানিয়েছেন, সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩ হাজার ৮৭২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে আরও ২ হাজার ৮৯ জন। ফলে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬২ হাজার ৫৮৯ জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে ২৭ হাজার ৩৯ জন। এছাড়া ৩ হাজার ৯৮৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানানো হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top