একাকিত্ব দূর করার উপায় : জয়দেব বেরা
প্রকাশিত:
১৭ জুন ২০২৩ ১৩:৫৩
আপডেট:
১৭ জুন ২০২৩ ১৫:২৭
একাকিত্ব হল আমাদের এক সামাজিক ও মানসিক পরিস্থিতি।বিভিন্ন কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।তবে এই পরিস্থিতি মূলত তখনই সৃষ্টি হয় যখন আমাদের প্রিয়জনের সাথে বিচ্ছেদ হয়,এছাড়াও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিকেও কেন্দ্র করে(যেমন-চরম দারিদ্র্য,বেকারত্ব,বন্ধ্যাত্ব,প্রিয় কোনো কিছু হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি)এই একাকিত্বের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।বিশেষ করে সম্পর্ক বিচ্ছেদকে কেন্দ্র করে এই একাকিত্বের উদ্ভব হয়। বিচ্ছেদ বলতে ডিভোর্স হতে পারে,প্রেমে ব্রেকাপ থেকে শুরু করে প্রিয় জনের মৃত্যু, বৃদ্ধ বাবা-মা যদি তার সন্তানদের থেকে দূরে থাকে সেই বিচ্ছেদ থেকেও এই একাকিত্বের পরিস্থিতি তৈরি হয়।এই পরিস্থিতি হলে কোনো কিছু ভালো লাগে না,কিছু কাজ করতেও ভালো লাগেনা,মুড সুইং এর মত সমস্যা দেখা যায়,সব কিছুতেই একটা বিরক্তিকর ভাব থাকে,মনের যন্ত্রণা গুলো কাউকে বোঝানো যায় না,মনের কথা গুলোও কাউকে শেয়ার করা যায় না।মনে হবে সবসময় নিজে একা থাকি,বন্ধ ঘরে চোখের জলে একা একা বসে থাকি।এটাই হল একাকিত্ব।এটা একটা সামাজিক ও মানসিক পরিস্থিতি।এই সময় অনেকে খারাপ পথ বা আত্মহত্যার পথও বেছে নেয়।আমি বলবো এই রকম ভুল কাজ একদম করবেন না।কারণ জীবন অনেক মূল্যবান।এই পরিস্থিতি থেকে জীবনের মূল স্রোতে ফিরে আসাও সম্ভব।তাই এই পরিস্থিতি হলে যে উপায় গুলো অবলম্বন করবেন সেগুলি হল-
১)এই সময় আপনি আপনার প্রিয় মন্দির,মসজিদ সহ বিভিন্ন ধর্মের যে ধর্মীয় স্থান রয়েছে সেখানে যাবেন।গিয়ে ঈশ্বর এর কাছে ভক্তি ভরে সব কিছু বলবেন।মনের যন্ত্রণা গুলোকে কান্নার সহিত ঈশ্বর এর চরণে নিবেদন করবেন।দেখবেন মনে অনেকটাই হালকা লাগবে।
২)বন্ধুদের সাথে আড্ডা ও বেড়াতে যাওয়ার বা পিকনিক করার প্ল্যান করবেন এবং ঘুরেও আসবেন।
৩)হেডফোন লাগিয়ে চোখ বন্ধ করে নির্জন জায়গায় বা শুয়ে শুয়ে গান শুনুন।রোমান্টিক ভিডিও বা প্রচুর হাসির ভিডিও,সিনেমা দেখুন।পারলে মোটিভেশনাল ভিডিও দেখুন।দেখবেন অনেকটাই ভালো লাগবে।
৪)ডায়েরিতে মনের যন্ত্রণা গুলোকে নিয়ে লিখুন,কবিতা লিখুন,ছবি আঁকুন,নাচতে ভালো লাগলে নাচুন,রান্না করতে ভালো লাগলে ভালো ভালো কিছু রান্না করুন।নিজেকে যতটা পারবেন এই সবের মধ্যে ব্যস্ত রাখুন।
৫)নিজেকে নিয়ে ভাবুন,নিজেকে ভালোবাসুন,নিজের কাজকে খুব খুব সময় দিন।যতটা পারবেন নিজের ক্যারিয়ার বা নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকুন।দেখবেন ধীরে ধীরে পুরনো কষ্ট গুলো কমতে শুরু করবে।
৬)যে আপনাকে ছেড়ে কারণে-অকারণে চলে গেছে তাকে নিয়ে বেশি ভাববেন না।এটাই মনে করবেন যে ও আপনার জন্য সঠিক ছিল না বা ঈশ্বর আপনার জন্য ওকে পাঠায়নি তাই চলে গেছে।
৭)সবশেষে বলবো,এই সমস্যা যদি খুব গভীর হয় অর্থাৎ হাতের বাইরে চলে গেছে তখন পারলে কোনো অভিজ্ঞ মনোবিদ বা কাউন্সেলর এর সাথে যোগাযোগ করবেন।
(লেখক ভারতবর্ষের একজন সমাজতত্ত্বের গেস্ট লেকচারার,তরুণ কবি,প্রাবন্ধিক, সমাজকর্মী, সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক)
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: