সিডনি প্রেস এন্ড মিডিয়া কাউন্সিলে ভাঙ্গন
 প্রকাশিত: 
 ৭ জুন ২০২১ ১৯:১৪
 আপডেট:
 ৭ জুন ২০২১ ২০:২৭
                                
অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি লেখক ও সাংবাদিকদের সংগঠন 'সিডনি প্রেস এ্যান্ড মিডিয়া কাউন্সিল' এর অস্তিত্ব কি সংকটের মুখে?
বর্তমানে এই সংগঠনের সভাপতি পদে আছেন ড. এনামুল হক। সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিষদের অন্যান্য অন্যতম সদস্যরা হলেনঃ আবদুল্লাহ ইউসুফ শামীম (সহ-সভাপতি), মোহাম্মাদ আবদুল মতিন (সাধারণ সম্পাদক), মোহাম্মেদ আসলাম মোল্লা (সহ-সভাপতি), শিবলী আবদুল্লাহ (সহ-সভাপতি), আবদুল আউয়াল (যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক), মিজানুর রহমান সুমন (প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক), মাকসুদা সুলতানা (কোষাধ্যক্ষ), নামিদ ফারহান (সাংস্কৃতিক সম্পাদক), মোহাম্মাদ আসিফ ইকবাল (মিডিয়া অ্যান্ড কমুনিকেশন সম্পাদক), নাইম আবদুল্লাহ, মোহাম্মাদ রেজাউল হক ও ড. ফজলে রাব্বি (কার্যকরী পরিষদের সদস্য)। এছাড়া প্রায় ৫৪ জন সাংবাদিক এবং মিডিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন সদস্য হিসাবে।
কিছুদিন পূর্বে, সিডনি প্রেস এন্ড মিডিয়া কাউন্সিলের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে সকল সদস্যদের সদস্যপদ নবায়নের জন্য আবেদন করা হয়। গত ৪ই জুন ছিল সদস্যপদ নবায়নের শেষ তারিখ। বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয় যে, কাউন্সিলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আবেদনপত্র বাছাই শেষে ১১ জুনের মধ্যে নতুন সদস্যের তালিকা প্রকাশ করা হবে। নতুন কার্যকরী পরিষদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শুরু হবে ১৪ জুন (সোমবার) এবং শেষ সময় আগামী ১৮ জুন (শুক্রবার) বিকেল ৩টা। ২০শে জুন দুপুর ১২ টায় কাউন্সিলের বার্ষিক সাধারণ সভায় নতুন কার্যকরী পরিষদ গঠন করা হবে। কাউন্সিলের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আজ ৭ই জুন, প্রভাত ফেরীর ইমেইলে এবং পরে ফোন করে সিডনি প্রেস এন্ড মিডিয়া কাউন্সিলের সভাপতি ডঃ এনামুল হক জানিয়েছেন, সংগঠনের কয়েকজনের অন্যায়, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও অস্বচ্ছতা মেনে নিতে না পেরে সংগঠন থেকে তিনি পদত্যাগ করেছেন। তিনি আরও জানান যে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিনিয়র সভাপতি, সহ-সভাপতি, ট্রেজারার ও জয়েন্ট সেক্রেটারি ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও কার্যকরি পরিষদের আরও সদস্যরা পদত্যাগ করছেন বা করবেন বলে জানা গেছে এবং অনেকেই তাদের সদস্যপদ আর নবায়ন করতে আর ইচ্ছুক নন বলে জানিয়েছেন।
যদিও এখন পর্যন্ত তাদের পদত্যাগপত্র কার্যকরি পরিষদে আনুষ্ঠানিক ভাবে গৃহিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
সদস্য সংগঠনগুলোর মধ্যে থেকে সিডনির সুপরিচিত ও প্রধান মিডিয়াগুলোর কেউই থাকছেন না বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে সুপ্রভাত সিডনি, বাংলা কথা, স্বাধীন কন্ঠ, NTV ও ইসলামী বার্তা সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় সংবাদপত্র ও মিডিয়া। তাঁর মতে, সংগঠনটি আগামী ২০শে জুন তাদের সাধারণ সভা হবার কথা ঘোষণা করে থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি সাংবিধানিক সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
এই বিষয়ে সংগঠনের একজন কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যের সাথে যোগাযোগ করা হলে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন যে, একজন ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতা এবং প্রোটোকল না মেনে বিভিন্ন বক্তব্য দেওয়া, আচরন এবং কার্যনির্বাহী পরিষদের সাথে আলোচনা না করে সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সভায় যোগদানে কার্যনির্বাহী পরিষদের অনেকের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। তবে এটি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারত। এভাবে হঠাৎ করে একজন নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তির পদত্যাগের ঘোষনা দেওয়াটা আসলে সংগঠনের জন্য বিব্রতকর। সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের পদত্যাগ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। তিনি নিজে পদত্যাগ করবেন কি না এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে, অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলোচনা করে তবেই তিনি সিদ্ধান্ত নিবেন।
সিডনির এক জনপ্রিয় সংবাদ পত্রের প্রতিনিধিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান যে, তাঁদের পত্রিকার সম্পাদক খুব শীঘ্রই এই ব্যাপারে তাঁদের অবস্থান জানাবেন। তাই এই মুহুর্তে তিনি নিজের নাম প্রকাশ করে সবাইকে ‘কনফিউজড’ করতে চাচ্ছেন না। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, ‘প্রেস এন্ড মিডিয়া’ কাউন্সিলের একজন নেতৃস্থানীয় সদস্য কিছুদিন হল বিভিন্ন মিডিয়াতে আরেকটি পত্রিকা এবং তাঁর সত্ত্বাধিকারীর বিরুদ্ধে অশালীন বক্তব্য রেখে যাচ্ছেন। তাঁর এই বক্তব্য এবং বিষেদাগার উদ্দেশ্যমূলক। আগামী ২০শে জুন কাউন্সিলের সাধারন সভাকে সামনে রেখে তিনি এই সব করে যাচ্ছেন যেন, ঐ ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন। সিডনি ‘প্রেস এন্ড মিডিয়া’ কাউন্সিল কমিউনিটির সাধারন মানুষদেরই প্রতিনিধিত্ব করে। বিষয়টাও পুরানো। অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়ে থাকলে আমরাও এই ব্যপারে পদক্ষেপ নিতে পারতাম। তিনি এই জন্য কাউন্সিলে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে পারতেন।
এই বিষয়ে সংগঠনের সেক্রেটারি আবদুল মতিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সংগঠনে এই মুহুর্তে মিটিং চলছে। স্বাধীন কন্ঠ, সুপ্রভাত সিডনি সহ সব পত্রিকা আমাদের সাথে আছে। যে অভিযোগ গুলি উত্থাপন করা হয়েছে তা হাস্যকর । সংগঠনের আগামী কার্যক্রম তার নিয়ম অনুসারেই চলবে। তিনি কারো এই ধরনের উদ্দেশ্য প্রনোদিত বক্তব্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানান।
আমরা আশা করব যে, 'সিডনি প্রেস এ্যান্ড মিডিয়া কাউন্সিল' এই সংকট কাটিয়ে উঠবে এবং আলোচনা সাপেক্ষে খুব দ্রুত একটা সমাধানে পৌঁছাতে পারবে। এখানে উল্লেখ্য যে, গত কয়েক বছরে সংগঠনটি বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়াতে বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটিতে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে আসছিল।
বিষয়:

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: