আজ থেকে ইউরোপের সঙ্গে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ কার্যকর
প্রকাশিত:
২ জানুয়ারী ২০২১ ২৩:২৪
আপডেট:
৮ মে ২০২৫ ১৪:৩২

প্রভাত ফেরী: ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অর্ধশতকের অংশীদারত্বের আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের পর আজ থেকে ব্রিটেনের নতুন যুগ শুরু হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা থেকে দেশটি ইউরোপের আইন অনুসরণ করা বন্ধ করে দিয়েছে। ভ্রমণ, বাণিজ্য, অভিবাসন ও নিরাপত্তা সহযোগিতার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এখন ভিন্ন আইন মেনে চলবে ব্রিটেন। অর্থাৎ ইউরোপের একক বাজার ও কাস্টমস ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে এসে নিজের মতো করে চলবে দেশটি।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, যুক্তরাজ্য তার স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। দীর্ঘ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আমরা নিজেদের কাজগুলো ভিন্ন ও ভালোভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হব। ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও ব্রিটেন মিত্র ও বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।
এদিকে ব্রিটিশ মন্ত্রীরা হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, নতুন আইন কার্যকর হতে যাওয়া ও পরিবর্তিত শর্তে মহাদেশটির সঙ্গে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আগামী দিনগুলোতে বেশ কিছু ঝামেলা পোহাতে হবে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর। কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেন, বন্দরগুলোতে ধীরগতির আশঙ্কার মধ্যেই সীমান্ত ব্যবস্থা প্রস্তুত রয়েছে।
২০১৬ সালে ব্রেক্সিটের গণভোট হওয়ার সাড়ে তিন বছর পর গত ৩১ জানুয়ারি ২৭ সদস্যের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই সংঘ থেকে বের হয়ে আসার ঘোষণা দেন ব্রিটিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু গত ১১ মাস তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য আইন মেনে আসছিলেন। যদিও একই সময়ে দুপক্ষের মধ্যে ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।
বাণিজ্য আলোচনা সফলভাবে শেষ হওয়ায় ক্রিসমাসের দিন তারা একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। পার্লামেন্টের সায় আসার পর বুধবার থেকে ব্রিটেনে এটি আইন হিসেবে কার্যকর হচ্ছে। নতুন রীতির অধীন ব্রিটিশ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইউরোপীয় অভ্যন্তরীণ বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগ পাবে। যার অর্থ–ব্রিটেন ও মহাদেশটির মধ্যে পণ্যের সীমান্ত পার হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আমদানি-শুল্ক থাকছে না। কিন্তু ব্যবসা ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে লোকজনের ভ্রমণের ক্ষেত্রে আরো বেশি নথিপত্রের ঝামেলার বিষয়টি রয়ে গেছে। এ ছাড়া ব্যাংকিং ও সেবাখাতে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাজ করছে। ব্রিটেনের অর্থনীতির জন্য যেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
বিবিসির রাজনৈতিক প্রতিনিধি জেসিকা পার্কার তার বিশ্লেষণে বলেন, এতে অনেকের মনে বিপুল আশাবাদ জাগলেও অন্যদের মধ্যে গভীর অনুশোচনা কাজ করছে। তিনি বলেন, বাণিজ্য, ভ্রমণ, নিরাপত্তা ও অভিবাসনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এলেও মহামারী করোনার কারণে সমাজের বড় একটি অংশ স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। আগামী মাসগুলোতে এই পরিবর্তন আরো স্পষ্ট হবে বলে তিনি মনে করেন।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: