সেনা অভিযানে মিয়ানমারে সু চি ও রাষ্ট্রপতি আটক; মুক্তি চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া
 প্রকাশিত: 
 ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:৫১
 আপডেট:
 ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:৫৩
 
                                
প্রভাত ফেরী: মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চি এবং দেশটির রাষ্ট্রপতি উইন মিনতকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে সেনাবাহিনীর অভিযানে তাদের আটক করা হয়। দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকেও আটক করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র মায়ো নিউনত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, অং সান সু চি, রাষ্ট্রপতি উইন মিনত এবং অন্য শীর্ষ নেতাদের সোমবার ভোরে আটক করা হয়েছে।
এদিকে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চিসহ গ্রেফতার সব নেতার মুক্তির দাবিও জানিয়েছে দেশটি। খবর আলজাজিরার।
৮ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনের ফলকে সম্মান জানাতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা, অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের অন্যান্য প্রবীণ ব্যক্তিদের গ্রেফতারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান এ বিষয়ে বিফ্র করেছেন।
এনএলডির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হান থার মিন্টকেও আটক করা হয়েছে। সৈন্যরা দেশের বিভিন্ন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে তাদের আটক করে নিয়ে যায় বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপকে দেশটির গণতান্ত্রিক উত্তরণকে নষ্ট করার ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এ সম্পর্কে বিফ্র করেছেন।
সাধারণ নির্বাচনের ফল পরিবর্তন করতে বা মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক উত্তরণে বাধা দেওয়ার যে কোনো প্রয়াসের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে অস্ট্রেলিয়াও মিয়ানমারে সেনা অভ্যত্থানের নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী ম্যারিসে পেইনও বলেছেন, এই গ্রেফতারের নিন্দা জানাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। তারা চান মিয়ানমারে আইনের শাসন মর্যাদা পাবে, আইনসম্মত পন্থায় বিতর্কের অবসান ঘটবে এবং সু চিসহ আটক নেতাদের মুক্তি দেওয়া হবে।
সু চিসহ দেশটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটকের কারণ হিসেবে সেনাবাহিনী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ‘কারচুপির অভিযোগকে’ সামনে এনেছে।
গত বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি ভূমিধস জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২ আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬ আসন।
কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। দলটি নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। তার পর থেকেই দেশটিতে ফের সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। সেটিই আজ সত্যি প্রমাণ হল।
মিয়ানমার দীর্ঘদিনের ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল।  ২০০৮ সালে দেশটি গণতন্ত্রের পথে ধাবিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর অধীনে ছিল।  মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক উত্তরণে মূল ভূমিকা রাখেন দেশটির স্বাধীনতার অবিসংবাদী নেতা অং সান। পরবর্তীতে তার মেয়ে অং সান সু চি ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি দল গঠন করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মূল ভূমিকা রাখেন।  এ কারণে তাকে কয়েক বছর গৃহবন্দিও থাকতে হয়েছে।
বিষয়: সুচি গ্রেফতার

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: