নিউজিল্যান্ডের অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিক দেশে ফিরতে বাধা; পেলেন তালেবানের আশ্বাস
 প্রকাশিত: 
 ৩১ জানুয়ারী ২০২২ ০০:০৬
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:০৪
                                
প্রভাত ফেরী: দম্পতির কাছে একমাত্র আফগানিস্তানেরই ভিসা ছিল। সেইসময়ে বেলিস তালেবানের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা আশ্বস্ত করে বেলিসকে বলেছিলেন তিনি যদি আফগানিস্তানে আসেন তাহলে ভালোই থাকবেন। একই সঙ্গে ক্ষুব্ধ বেলিস জানান, নিজের দেশ নিউজিল্যান্ড- এ ফিরতে চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ৫৯ টি নথি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু জরুরি প্রত্যাবর্তনের জন্য তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে বেলিসের নিজেরই দেশ।
নিউজিল্যান্ডের অন্তঃসত্ত্বা এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, কোয়ারেন্টিনের কারণে তাকে তার দেশে ফিরে যেতে বাধা দেয়া হয়েছিল। যার জন্য সাহায্যের আশায় তিনি তালেবানদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
গতকাল শনিবার (২৯ জানুয়ারি) নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডে প্রকাশিত একটি কলামে সাংবাদিক শার্লট বেলিস বলেন, একসময় আফগান মহিলাদের প্রতি তালেবানদের নিষ্ঠুর আচরণ নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন।
এবার নিজের দেশের সরকারের কাছে তিনি সেই একই প্রশ্ন রাখছেন।
নিউজিল্যান্ডের কোভিড-১৯ রেসপন্স মন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স হেরাল্ডকে বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছিল কিনা তা নিয়ে খোঁজ নিতে তিনি তাঁর অফিস কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
মহামারী চলাকালীন ভাইরাসের বিস্তারকে সর্বনিম্ন রাখতে সক্ষম হয়েছে দেশটি এবং তার ৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ৫২জনের মৃত্যু হয়েছে ভাইরাসে।
তবে সেখানে কড়া কোভিড আইন বলবৎ রেখেছে সরকার। ফলে দেশে প্রত্যাবর্তনকারী নাগরিকরাও সামরিক বাহিনী দ্বারা পরিচালিত কোয়ারেন্টিন হোটেলগুলিতে ১০ দিন বিচ্ছিন্নভাবে কাটাচ্ছেন, পরিস্থিতি এমন যে দেশের হাজার হাজার লোক এখন বাড়ি ফেরার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।
প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন এবং তার সরকারকে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিদেশে আটকে পড়া নাগরিকদের অভিজ্ঞতা চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে।
গত বছর, বেলিস আল জাজিরার জন্য কাজ করছিলেন আফগানিস্তানে। আমেরিকান সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়টি কভার করছিলেন তিনি।
সেই সময়ে দেশের নারীদের প্রতি তালেবানদের আচরণ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন।
শনিবার তার কলামে, বেলিস বলেছিলেন যে তিনি সেপ্টেম্বরে কাতারে ফিরে এসেছিলেন এবং জানতে পারেন তিনি অন্তসত্ত্বা।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার জিম হুইলেব্রোকের সঙ্গে ছিলেন বেলিস। মে মাসে তিনি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন।
বেলিস জানান, তিনি নভেম্বরে আল জাজিরা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন এবং সঙ্গী হুইলেব্রোকের সঙ্গে বেলজিয়ামে চলে আসেন। যেহেতু তিনি সেখানকার বাসিন্দা ছিলেন না তাই সেখানে বেশিদিন থাকতে পারেননি।
দম্পতির কাছে একমাত্র আফগানিস্তানেরই ভিসা ছিল। সেইসময়ে বেলিস তালেবানের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা আশ্বস্ত করে বেলিসকে বলেছিলেন তিনি যদি আফগানিস্তানে আসেন তাহলে ভালোই থাকবেন।
একই সঙ্গে ক্ষুব্ধ বেলিস জানান, নিজের দেশ নিউজিল্যান্ড- এ ফিরতে চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ৫৯ টি নথি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু জরুরি প্রত্যাবর্তনের জন্য তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে বেলিসের নিজেরই দেশ।
নিউজিল্যান্ডের ম্যানেজড আইসোলেশন এবং কোয়ারেন্টিন সিস্টেমের যুগ্ম প্রধান ক্রিস বানি হেরাল্ডকে সেইসময়ে বলেছিলেন যে তাঁর জরুরী আবেদনটি দেশের কোয়ারেন্টিন নিয়মের সাথে খাপ খাচ্ছে না।
শুধু তাই নয় তাঁকে পুনরায় অন্য একটি আবেদন করতে বলা হয়। সেই সঙ্গে ক্রিস বানি একটি চিঠিতে লিখেছিলেন দেশের নাগরিকদের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলবৎ করা হয়েছে, জেক তিনি অস্বাভাবিক বলে মনে করেন না।
বেলিস সম্প্রতি বলেছেন যে নিউজিল্যান্ডে আইনজীবী, রাজনীতিবিদ এবং জনসংযোগের লোকদের সাথে কথা বলার পরে, তার মামলাটি নিয়ে আবার ভাবনাচিন্তা করা শুরু হয়েছে, যদিও তাকে এখনও বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। সূত্র: www.theguardian.com

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: