একটি বাচ্চা খরগোশ: সুকন্যা প্রাচী
 প্রকাশিত: 
 ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:৩৫
 আপডেট:
 ১৫ এপ্রিল ২০২০ ০২:১৬
                                
এক দেশে একটা বন ছিল। সে বনের নাম ফুলকলি। ফুলকলি বনের একটি নরম ঝোপে থকত কারল নামে এক বাচ্চা খরগোশ ও তার মা। একদিন মা কাজে যাবে। যাওয়ার আগে কারলকে একটা গাজর দিয়ে গেল। বলল, 'এই গাজরটা তুমি খাবে।' কারল তো পড়ল মহা বিপদে। কারণ এই বনের সবাই মুখস্তবিদ্যায় দীক্ষিত। সে গাজরটা হাতের তালু, পায়ের পাতা, নাক, কান সব জায়গা দিয়ে ঢোকানোর চেষ্টা করল। কিন্তু সেভাবে হবে কি করে? কারল তো কিছু বুঝতে পারছে না। সে বনের ভেতর দৌড়াতে থাকল। দৌড়াতে দৌড়াতে সে দেখল কাছেই সাদা এপ্রোন পড়া ডাক্তার বসে আছে। কারল তার কাছেই গেল। - 'আঙ্কেল, আঙ্কেল, আমার একটা সমস্যা হয়েছে।' - 'কারল যে! কী হয়েছে তোমার? একটু তাড়াতাড়ি কর। সজারুর অপারেশন এখনো শেষ হয়নি।' - 'আমাকে একটা গাজর খেতে হবে। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কি করে খাব।' - 'তোমার মা তোমাকে কিভাবে খেতে বলেছে?' - 'সেটাই তো সমস্যা! মা তো আমাকে কিছুই বলে যায়নি।' - 'আচ্ছা জ্বালা তো! যাও, বিদায় হও।' বলে ডাক্তার কারলের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিল। সে তখন আর কি করে? আবার দৌড়াতে লাগল। এবার তার সাথে দেখা হল আর্কিটেক্টের সাথে। কমলা রঙের হেলমেট পরে সে একটা ২০ তলা একটা ভবন বানাচ্ছে। কারল সেখানে গেল। - 'ও বাবা! তুমি তো বিশাল কিছু বানাচ্ছ!' - 'হ্যাঁ, সবই আমার নিজ হাতে গড়া।' আর্কিটেক্টের মুখে গর্বের হাসি। - 'তা বেশ ভালো। কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন আছে।' - 'হ্যাঁ, বলো।' - 'এই যে আমার হাতে গাজরটা দেখছ, এটা আমি কিভাবে খাব?' - 'কী আজগুবি প্রশ্ন রে বাবা! মা যেভাবে বলেছে সেভাবে খাবে। যাও বিদায় হও!' কারল তখন আর কি করে! মন খারাপ করে সে হাঁটতে থাকল। সে তখন প্রায় বনের সীমানায় পৌঁছে গেছে। এমন সময় এক হরিণের সাথে তার দেখা হল। হরিণ বলল- - 'আমি রঙ-তুলি বন থেকে এখানে এসে হারিয়ে গেছি। আমাকে পথটা চিনিয়ে দেবে?' - 'আগে বলো, এই গাজরটা আমি কিভাবে খাব?' হরিণ শুনে হাসতে শুরু করল। বলল- - 'কিভাবে খাবে আবার? মুখ দিয়ে চিবিয়ে গিলে খাবে!' কারল সেভাবে চেষ্টা করল এবং সফল হোল। কারল তখন বুঝতে পরল, শুধু মুখস্তবিদ্যা নয়, জীবনে সৃজনশীলতাও প্রয়োজন। সে হরিণকে অনেক ধন্যাবাদ জানালো। সেই থেকে তারা বন্ধু হয়ে গেল।
বিষয়: সুকন্যা প্রাচী গল্প

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: