বৈধভাবে যাওয়া যাবে গ্রিস
প্রকাশিত:
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০২:১৩
আপডেট:
৫ মে ২০২৫ ০৩:৩৪

প্রভাত ফেরী: বৈধভাবে ইউরোপের দেশ গ্রিস যাওয়ার পথ খুলল। বাংলাদেশ থেকে বছরে চার হাজার কর্মী নেবে। গ্রিস যেতে কর্মীর টাকা খরচ হবে না।
অভিবাসন ব্যয় বহন করবে নিয়োগকারী। কৃষিখাতের মৌসুমী শ্রমিক হিসেবে পাঁচ বছরের ওয়ার্ক পারমিট দেবে গ্রিস সরকার। দেশটির শ্রম আইনানুযায়ী বেতন পাবেন কর্মীরা।
এসব শর্ত রেখে বুধবার সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও গ্রিস। ইউরোপে কেনো দেশের সঙ্গে কর্মী নিয়োগে এটিই প্রথম চুক্তি। নিজ নিজ পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ ও গ্রিসের মাইগ্রেশন অ্যান্ড অ্যাসাইলাম বিষয়ক মন্ত্রী প্যানাইয়োটিস মিতারাচি। রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, গ্রিসের মাইগ্রেশন পলিসির সেক্রেটারি জেনারেল পেট্রোক্লস জর্জিওজিয়াডিসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রবাসী কল্যাণ সচিব সমকালকে বলেছেন, ‘আপাতত শুধু কৃষিখাতে কর্মী নিলেও ভবিষ্যতে অন্যান্য খাতে নিয়োগের বিষয়ে আলোচনার পথ খোলা রয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদি ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষে কর্মীদের দেশে ফিরে আসতে হলেও, পরবর্তীতে আবার কর্মসংস্থানের জন্য গ্রিসে যেতে পারবেন।’
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্রিসে চাকরির আবেদনের সঙ্গে বৈধ ট্রাভেল ডকুমেন্ট, বৈধ ওয়ার্ক কনট্রাক্ট, বিমার প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। এর নির্ধারিত ফি ও ব্যয় বহন করতে হবে।
আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন সমকালকে বলেন, ‘গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ। দেশটির আইনে সর্বনিম্ন যে মজুরি নির্ধারণ করা রয়েছে, বেতন তার চেয়ে কম হবে না। সমঝোতা স্মারকের মেয়াদ পাঁচ বছর। পরবর্তীতে মেয়াদ বাড়ানো যাবে।’
ইন্টারনেট পাওয়ার তথ্যানুযায়ী, গ্রিসে সর্বনিম্ন মাসিক মজুরি ৭৭৩ ইউরো; যা বাংলাদেশি প্রায় ৭৬ হাজার টাকার সমপরিমান।
গ্রিসের মন্ত্রী সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, তার দেশের সংসদে সমঝোতা স্মারকটি অনুমোদন পাওয়ার পর কর্মী নিয়োগ শুরু হবে। এতে কত সময় লাগতে পারে- তা জানাননি।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, মাস দুয়েক সময় লাগতে পারে। সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি বোয়েসেল কর্মী পাঠাবে। বেসরকারি এজেন্সিগুলোও সুযোগ পাবে কী না- তা জানা যায়নি।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের কর্মীরা নিরাপদে গ্রিসে গিয়ে বৈধভাবে কাজ করতে পারবেন। নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর নিয়োগকারীর খরচে কর্মীরা গ্রিসে যেতে পারবেন। চূড়ান্ত হলে মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া জানিয়ে দেওয়া হবে।
তার আগে কাউকে টাকা না দিতে গ্রিস যেতে ইচ্ছুকদের সতর্ক করে মন্ত্রী বলেছেন, কোনো দালাল বা প্রতারকের খপ্পড়ে যেনো কেউ না পড়েন।
গ্রিসের মন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশি কর্মীরা পরিশ্রমী হলেও মানবপাচারকারীরা তাদের ফাঁদে ফেলে সর্বশান্ত করছে। সমঝোত সম্মাক সই হওয়ার ফলে কর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে।
বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে গ্রিসে চাকরি সুযোগ সীমিত হলেও প্রতি বছরই হাজারো তরুণ অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশের সীমানা ও সাগর পাড়ি দিয়ে গ্রিসে যাচ্ছে। পথিমধ্যে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে গ্রিস যেতে। বহু তরুণ এখনও হিমশীতল বনে জঙ্গলে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে অপেক্ষা করছে গ্রিস বা ইউরোপে অন্যান্য দেশগুলোতে প্রবেশের চেষ্টায়। গ্রিসে বৈধভাবে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করতে গত অক্টোবরে ইমরান আহমদ দেশটি সফর করেন।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: