করোনা ভাইরাসে অস্ট্রেলিয়ার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা: কি হতে পারে পরিস্থিতি এবং করণীয়?
প্রকাশিত:
২৫ মার্চ ২০২০ ১৯:৩৮
আপডেট:
৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০০:১৯
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে খুব দ্রুত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসকে প্যানডেমিক বা আন্তর্জাতিক মহামারী হিসেবে সংজ্ঞায়িত করার পর এবং ইটালি ও ইরান সহ বেশ কিছু দেশে পরিস্থিতির অভাবনীয় অবনতির পর প্রতিটি দেশ এখন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার সরকারও ধাপে ধাপে সতর্কতামূলক ও প্রতিরোধকারী বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অতিসম্প্রতি এনএসডব্লিউ স্টেটে নন-এসেনশিয়াল সার্ভিসেস যেমন রেস্টুরেন্ট, পাব, ক্লাব, জিম ইত্যাদি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জনসমাগম এড়ানোর উদ্দেশ্যে। ফেডারেল পর্যায়ে ২০ মার্চ শুক্রবার থেকে আরোপ করা হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল ব্যান বা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের ঘোষণা করা এই নিষেধাজ্ঞার অর্থ আপনার জন্য কি হতে পারে? এদেশে অবস্থানকারী আপনার ও আমার সবার করণীয়ই বা কি এই পরিস্থিতিতে?
মূলত এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় এ মুহুর্তে বিদেশীদের আগমনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে শুধুমাত্র এদেশের নাগরিক এবং স্থায়ী অধিবাসীরাই ঢোকার অনুমতি পাচ্ছেন। নাগরিক ও স্থায়ী অধিবাসীদের সরাসরি পারিবারিক সদস্যদেরকেও অবশ্য অস্ট্রেলিয়ায় ঢোকার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। তবে শর্ত হলো অন্য দেশ থেকে যে কেউই এদেশে আসুক না কেন এখানে পৌছানোর পর নিজ বাড়িতে কিংবা হোটেল বা কোন আবাসনস্থলে একটানা ১৪ দিন সম্পূর্ণ একাকী অবস্থান বা সেলফ-আইসোলেশন বজায় রাখতে হবে।
সেলফ আইসোলেশনের এই ১৪ দিনের মেয়াদে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অন্য কারো সংস্পর্শে আসতে পারবেন না এবং ঐ অবস্থানস্থলের বাইরে বের হতে পারবেন না। যদি কেউ এ নিয়ম ভঙ্গ করে তাহলে স্থানীয় স্টেট বা টেরিটরির আইন অনুযায়ী তার শাস্তি দেয়া হবে। বিভিন্ন স্থানভেদে এই শাস্তির জন্য বিপুল পরিমাণ আর্থিক জরিমানা সহ এমনকি কারাবাসেরও বিধান করা হয়েছে।
সুতরাং বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় আসার সুযোগ পাচ্ছেন যারা কেবলমাত্র দেশটির নাগরিক, কিংবা পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট, অথবা নিউজিল্যান্ডের নাগরিক ও অস্ট্রেলিয়ার রেসিডেন্ট। নাগরিকত্ব বা রেসিডেন্সির প্রমাণ দেখানো সাপেক্ষে তারা এদেশে প্রবেশের সুযোগ পাবেন এবং তার পরই তাদেরকে ১৪ দিনের সেলফ আইসোলেশন পিরিয়ড যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
এছাড়াও নাগরিক ও স্থায়ী অধিবাসীদের ইমিডিয়েট ফ্যামিলি মেম্বার অর্থ্যাৎ স্বামী-স্ত্রী বা পার্টনার বা ডিপেন্ডেন্ট কিংবা লিগাল গার্ডিয়ানরাও ভিসা থাকা সাপেক্ষে আত্মীয়তার প্রমাণ দেখিয়ে ঢোকার সুযোগ পাবেন।
অন্যদিকে যারা এদেশে বেড়াতে এসে আটকা পড়েছেন তাদেরকে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসায় বিভিন্ন ধরণের শর্ত প্রযোজ্য হবে যা জানার জন্য আপনার ভিসা ক্যাটাগরি অনুসারে হোম এফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত জানা যাবে।
অন্যদিকে যেসব অস্থায়ী ভিসাধারী মানুষেরা অস্ট্রেলিয়ার বাইরে ভ্রমণ করতে গিয়ে আটকা পড়েছেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সময় তাদের ভিসার মেয়াদ যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে তখন তাদেরকে সেই দেশ থেকে নতুন করে ভিসার আবেদন করতে হবে। এছাড়াও নানা ক্যাটাগরির ভিসাধারীরা যারা অস্ট্রেলিয়ার ভেতরেও চলতি পরিস্থিতির কারণে তাদের ভিসার কোন শর্ত পূরণ করতে পারছেন না তাদেরকে অনতিবিলম্বে ডিপার্টমেন্টের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রতিটি ঘটনাকে স্বতন্ত্রভাবে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত অবগত করছে।
বিষয়: অস্ট্রেলিয়া স্কট মরিসন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: