পড়ুয়ার আসরের বিশেষ আয়োজন: “আমরা তোমাদের ভুলবো না”
প্রকাশিত:
৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:৩৭
আপডেট:
৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:৫১
৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে এবার পড়ুয়ার আসর একটি বিশেষ পাঠপর্ব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।৩০ শে নভেম্বর ২০২৪ সন্ধ্যায় গ্লেনফিল্ড কমিউনিটি হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ছিলো “স্বাধীনতার বিজয় অর্জনের সুদীর্ঘ যাত্রাপথে সাহসী পুরুষ একা হাঁটেনি, তার সাথে ছিলো নারীরা—শক্তি হয়ে, প্রেরণা দিয়ে, সম্মুখ লড়াই করে।”
এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিলো বেগম রোকেয়ার জীবন ও সাহিত্যের উপর আলোকপাত এবং সেই সাথে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে নারীর সাহসিকতা ও অবদানকে নতুনভাবে উপলব্ধি করা এবং বর্তমান প্রজন্মের কাছে সেই ইতিহাস তুলে ধরা।
বিশেষ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক ওপার এপার বাংলার প্রখ্যাত লেখক অজয় দাশগুপ্ত, অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মাদ আলী কাজী, ডা: শাফিন রাশেদ, কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী, কাউন্সিলর আশিকুর রহমান, কাউন্সিলর এলিজা আজাদ রহমান, সংগঠক গামা আব্দুল কাদির, শেখ শামীম,শফিকুল আলম, নেহাল বারী, জন্মভূমি টিভির পরিচালক আবু আরেফিন,আব্দুল জলিল, মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান তরুণ, প্রতীতির প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুস সালেকিন, আব্দুল সোবাহান, ডা: জাকির, ড: খাইরুল চৌধুরী, ড: রফিকুল ইসলাম, মিলি ইসলাম, নোমান শামীম, আশীষ বাবলু,
রফিকউদ্দিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে পাঠ করে স্বপ্নীল এবং Country of Acknowledgement পাঠ করে নিয়ন। এরপর বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিলো পড়ুয়ার আসরের নিয়মিত সদস্যদের অংশগ্রহণে বিশেষ পাঠ ও গীতি আলেখ্য। এই পর্বে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে নারীরা কিভাবে শক্তি ও প্রেরণা হয়ে অংশ নিয়েছেন, তাদের সাহসিকতা ও অবদানের কথা বিশেষ ভাবে তুলে ধরা হয়, শ্রদ্ধা জানানো হয় “Unsung Hero”দের!
দ্বিতীয় পর্বে ছিলো প্রথম প্রজন্মের তরুণ শিল্পী এবং স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান! এই পর্বের পরিচালনায় ছিলেন নাসরিন মোফাজ্জল ও উপস্থাপনায় ছিলেন আসমা আলম কাশফি।
প্রথম প্রজন্মের শিল্পীদের উৎসাহ প্রদানের জন্য এবার পড়ুয়ার আসর তাদেরকে সার্টিফিকেট ও পুরস্কার প্রদান করে। পুরুস্কার পেয়েছেন সামিহা রাশেদ, আদৃতা রহমান, রোহান রহমান, আতিফ কাজী, স্বপ্নীল ও নিয়ন সহ অনেকে। কমিউনিটির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও পড়ুয়ার আসরে বিশেষ অবদান রাখার জন্য পড়ুয়ার আসর লতা খান কে বিশেষ সন্মাননা পুরস্কারে ভূষিত করেন।পুরুষ্কার প্রদান করেন, ডঃ আলী কাজী, আব্দুল জলিল ও ডাঃ শাফিন রাশেদ।
অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন, আদৃতা রহমান, সামিহা রাশেদ, নাজ আহমেদ, এ কে এম ফারুক, অমিয়া মতিন, রোখসানা বেগম, আনিসুর রহমান, ফারিয়া আহমেদ,লুনিয়া আহমেদ, সাজ্জাদুল চৌধুরী বাপ্পী ও মাসুদ মিথুন।
কবিতা আবৃত্তি করেন আতিফ কাজী রহমান, পলি ফরহাদ, নাসিমা আক্তার, মুস্তাফিজ তালুকদার, রুমানা সিদ্দিকী, আশফাক রহমান ও আরিফুর রহমান।
অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট ছড়াকার ও লেখক অজয় দাশগুপ্ত ও প্রতীতির কর্ণধার সিরাজুস সালেকীন।
শব্দ পরিচালনায় ছিলেন মাহাদী। মঞ্চ সজ্জা ও ডেকোরেশনে ছিলেন শামিম হোসেন ও আসমা কাশফি আলম।তবলায় সহযোগিতা করেন শান্তনু কর ও রোহান রহমান।
বইয়ের স্টল নিয়ে ছিলো প্রশান্তিকা বইঘর ও পড়ুয়ার আসর।খুব সুলভ মূল্যে রাতের খাবারের ব্যবস্থাও ছিল।
সার্বিক ভাবে অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত অনুপ্রেরণামূলক ও আনন্দমুখর, যা উপস্হিত দর্শকশ্রোতা পুরো সময় জুড়ে উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা অত্যন্ত অনুপ্রাণিত হন এবং তারা নারীদের অবদানকে আরও মূল্যায়ন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।
এই আয়োজনটি আমাদের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়কে নতুনভাবে আবিষ্কার করার সুযোগ করে দেয়।
পড়ুয়ার আসর অনুষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এবং প্রবাসে বাংলার ঐতিহ্য কে ধন্যবাদ জানিয়ে এবং বই পড়া ও সুস্থ সংস্কৃতি চর্চ্চার ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: