১৯২০জন ক্ষুদের কণ্ঠে একযোগে উচ্চারিত হলো ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ
 প্রকাশিত: 
 ১২ জানুয়ারী ২০২০ ০৮:২৭
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:০৫
                                প্রভাত ফেরী ডেস্ক: খুলনা জেলা স্টেডিয়াম। ঘড়ির কাটায় সকাল ১০টা। ততক্ষণে মাঠের মধ্যে উপস্থিত হয়েছে এ প্রজন্মের ক্ষুদে বঙ্গবন্ধুর দল। এ যেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিচ্ছবি। আমন্ত্রিত কয়েক হাজার জনতার সাথে যোগ দিয়েছেন বিশিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ। আবেগঘন পরিবেশে ১৯২০ জন ক্ষুদে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে এক যোগে উচ্চারিত হলো সেই ঐতিহাসিক ৭মার্চের সেই ভাষণ-‘আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোকদের ওপর হত্যা করা হয়, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গো গড়ে তোল’.....‘আমরা যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবেনা’....‘মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ’...‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। খুলনা জেলা প্রশাসনের ব্যতিক্রমী ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগননা ও মুজিববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানসমূহের মধ্যে ছিলো খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে তোপধ্বনির মাধ্যমে ‘কাউন্টডাউন প্রথম প্রহরে মুজিববর্ষ’ সূচনা, বঙ্গবন্ধুর ওপর ডকুমেন্টরি প্রদর্শন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন।
মুজিববর্ষের ক্ষণগননা অনুষ্ঠানে সমাজের বিশিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গের সাথে ১৯২০ জন শিশু বঙ্গবন্ধু ছাড়াও ১৯২০জন আলেম, ১৯২০ জন অন্যান্য ধর্মের পুরোহিত, সহস্রাধিক মুক্তিযোদ্ধা, প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কয়েক হাজার সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে খুলনা জেলা স্টেডিয়াম যেন রূপ নেয় ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণস্থল ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে। আগত সর্বস্থরের আবেগ আপ্লুত মানুষ কণ্ঠ মেলান শিশু মুজিবের কণ্ঠে। সত্যি এক বিরল অনুষ্ঠান উপভোগের সুযোগ পেলেন খুলনাবাসী।
একযোগে ক্ষুদে বঙ্গবন্ধুগণের কন্ঠে ৭ মার্চের ভাষণ গভীর আবেগ ও ভাবগম্ভীর আবহের জন্ম দিয়েছে বলে মুল্যায়ন করেছেন খুলনার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। ভাষণ শেষে আমাদের মহান স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে এ প্রজন্মের শিশুদের উদ্বুদ্ধ হয়ে সোনার বাংলা গড়ার শপথ পাঠ করান বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুস্পুত্র খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল।
এছাড়াও ১৭ জন আলেমের সমন্বয়ে পরিচালিত বিশেষ দোয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এ তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্য এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। দোয়ায় বাংলাদেশের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণের পাশাপাশি দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
এদিকে বিকেলে খুলনা শহীদ হাদিস পার্কে জাতির পিতার জ¥শতবার্ষিকী উদযাপনের ক্ষণগননা অনুষ্ঠান ক্ষণগননা যন্ত্রের মাধ্যমে সরাসরি খুলনাবাসীকে দেখানোর ব্যবস্থা করা হয় খুলনা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে। খুলনা সিটি কর্পোরেশন স্থাপিত ক্ষণগননা যন্ত্রের মাধ্যমে হাজারো মানুষ সরাসরি ঢাকার অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ পান। এ সময়ে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান উদযাপন ও জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে খুলনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানকে অসাধারণ, অতুলনীয় হিসেবে আখ্যায়িত করে সুন্দর আয়োজনের জন্যে দেশের শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস বিবেচনায় নিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও ‘চাইল্ড ইন্টিগ্রিটি ও শিশু বঙ্গবন্ধু ফোরাম’-এর ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, সামাজিক সাংস্কৃতি সংগঠনের নেতৃত্ববৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের মানুষ বিপুল উৎসাহ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
বিষয়: মুজিব বর্ষ

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: