ঘুরে এলাম সাতশ পাহাড়ের দেশে--কিরিবুরু আর মেঘাতবুরু : সুবীর মণ্ডল
প্রকাশিত:
২৮ অক্টোবর ২০২২ ০১:২৯
আপডেট:
৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:২৫
ঝাড়খণ্ডের সিমলা ও মিনি কাশ্মীর বলা হয় এই ঝাড়খন্ড আর উড়িষ্যার সীমান্তে সাতশ পাহাড়ের দেশকে। চারিদিক আকরিক লোহার খনি। অনেকে ঝাড়খন্ডের মেঘালয় বলে এই অঞ্চলকে। অরণ্যকে যারা ভালোবাসেন তাদের কাছে অত্যন্ত পছন্দের জায়গা। তিন-চার দিন অনায়াসে কাটিয়ে দেওয়া যায়। চারিদিক যেন রূপকথার জগৎ।
আসলে এই জায়গাটা, বই পড়ার সুবাদে জানি, বুদ্ধদেব গুহর বা বিভূতিভূষণের খুব প্রিয় জায়গা ছিল। সিংভূম লাগোয়া এই শালবন, লোহা আর ম্যাঙ্গানিজ খনিতে ঘেরা লাল মাটির পথ আর জঙ্গলের কথা বুদ্ধদেব গুহর লেখায় বারবার ফুটে উঠেছে। সে ঋজুদার গল্পেই হোক বা অন্য উপন্যাসে। তাই লোহা মোড়া মাইন সিটি কিরিবুরু আর মেঘাতাবুরুর সৌন্দর্যে হারিয়ে যেতে আর উপন্যাসের মন ভোলানো বর্ণনাকে মিলিয়ে নিতে হাজির হলাম দুইদিনের ছুটিতে। আসলে হিম পড়া ভোর কাছে এলেই শাল সেগুনের ঝড়া পাতাদের চিঠিরা আসতে থাকে মনের ভেতর। বিদ্রোহী মন খুঁজে নিতে চায় মুক্তির আস্বাদ। তাই প্রকৃতির মাঝে নিজেকে সমর্পণ শহর থেকে বহু দুরে।
আজ খুব ভোরে আবার পথ চলা শুরু করলাম। চাইবাসার হোটেল থেকে বেরিয়েছিলাম। হাইওয়ে ধরে গাড়ি চলল জগন্নাথ পুরের দিকে। চাইবাসা থেকে দূরত্ব মাত্র ৬৫ কিমি। তারপর পৌঁছলাম নোয়ামুণ্ডি দূরত্ব মাত্র ১৮ কিমি। নোয়ামুণ্ডি থেকে বড় জামদা পৌঁছলাম। দূরত্ব মাত্র ১৯ কিমি। কিরিবুরুর পাদদেশে অবস্থিত। এখানে সৎ সঙ্গের একটি অসাধারণ মন্দির ও গেস্টহাউস আছে ভক্তদের জন্য। আরণ্যক পরিবেশ। বেশ কিছুক্ষণ কাটালাম। আবার পথ চলা শুরু। এরপর ২০ কিমি গভীর জঙ্গলাকীর্ণ পথ ধরে কিরিবুরুর পাহাড়ে পৌঁছলাম। তারপর পৌঁছলাম মেঘাতবুরু। চারিদিক জুড়েই সাতশ পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে প্রহরীর মত। শুধুই মুগ্ধতার আবেশ। লৌহ আকরিকের খনি আছে। অনুমতি ছাড়া খনি এলাকায় প্রবেশ করা যায় না। বেশ কয়েকটি নদী ও জলপ্রপাত আছে। আদিবাসীদের গ্রামীণ জীবনের অপ্রাপ্তির ক্ষত বিক্ষত ছবি খুঁজে পাওয়া সম্ভব। জাগ্রত দেবীর মন্দির আছে।
নাগরিক জীবনের হাজারো ব্যস্ততা আর সময়ের টানাটানিতে অবসর মেলে না সহজে। তাই মন কেমন করা গতকাল ঝকঝকে তকতকে এক কাকভোরে 'দ্যুত্তেরি' বলে কেজো জীবনকে গুডবাই জানিয়ে কাঁধের ঝোলাটি তুলে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম শাল- মহুয়া পলাশের দেশ চাইবাসার সবুজ প্রকৃতির বুকে। শহরের অনর্গল ডিজেল- পেট্টোলের শ্বাসরোধকারী কালো ধোঁয়া, নাগরিক জীবনের এই সময়ের উৎকন্ঠা থেকে বাঁচতে, ফুসফুস ভরে অক্সিজেন নিয়ে প্রাণশক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাইলে যেতেই হবে লাল পাথুরে ভূমি আর পাহাড়- জঙ্গলের স্বপ্নভৃমি শাল, পলাশ- শিমুলের সবুজ মনোমুগ্ধকর সবুজ উপত্যকা এশিয়ার বিখ্যাত শাল অরণ্যের মাঝে। ঝাড়খণ্ড-ওড়িষ্যা সীমান্তে অবস্থিত সাতশো পাহাড়ের দেশ সারাণ্ডা,এক অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি। সারাণ্ডা ফরেস্ট এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শাল অরণ্য। কোন এক সময়ে এটি ছিল সিংভূমের রাজা সিংহদেও, বীরকিশোর সিংহদেও পরিবার এবং মনোহরপুরের জমিদারদের মায়া ক্ষেত্র। বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। সারাণ্ডা অরণ্যের মধ্যমণি কিরিবুরু আর মেঘাতাবুরু। মেঘাহাতুবুরু আর কিরিবুরু দুটো যমজ পাহাড়। মেঘাহাতুবুরু মানে যে পাহাড়ের উঠোনে মেঘেরা ঘুরে বেরায়, আর পাশেই কিরিবুরু, কিরি মানে পোকা আর বুরু মানে পাহাড়। চমৎকার সাজানো এক স্বপ্নের দেশ। এ যেন শিল্পীর ক্যানভাসে আঁকা ছবি। আশে পাশে আছে ৭০০টি পাহাড় চূড়া। এরই আকর্ষণে সাতশ পাহাড়ের দেশে যেতেই হলো। সারাণ্ডা অরণ্যকে বাঙালির হৃদয়ে চির-সবুজ করে গিয়েছেন অরণ্য প্রেমিক সাহিত্যিক চিরসবুজ মনের মানুষ বুদ্ধদেব গুহ যেমন পলাশের অরণ্য রাতমোহনাকে বাঙালির হৃদয় মানচিত্রে চিরজীবী ও চির- সবুজ করে গিয়েছিলেন প্রকৃতি প্রেমিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সারান্ডার জঙ্গলে শালের গহীন অরণ্যের মাঝে পাহাড়ি পাকদন্ডী স্বপ্নের পথ। চলতে চলতে মনে হয়েছে "এই পথ যদি শেষ না হত”- লৌহ আকরিকে ভরা পাহাড়ের গায়ে উচ্ছ্বল ঝর্ণা। লাল মাটির দেশে বসন্তের মন মাতানো প্রকৃতি। বাসন্তী পূর্ণিমায় জ্যোৎস্নালোকিত জঙ্গলের মাঝে এক অসাধারণ অনুভূতি। বেশ কয়েক বছর আগে বইয়ের প্রথম ‘সাতশ পাহাড়ের দেশ’ সারান্ডার কথা পড়ে দেখার প্রবল ইচ্ছে জেগেছিল। শুনেছিলাম শালের ঘন জঙ্গলের কথা, জেনেছিলাম স্বপ্নমেদুর কিরিবুরু ও মেঘাতবুরুর নাম। অনেকদিনের ছোট্ট এক বাসনা মেটাতে দুর্গাপুজোর পর তিন দিনের ছুটিতে পাড়ি দিলাম সেই সারান্ডায়। খাতড়া মহকুমা শহর থেকে কাকভোরে নিজস্ব নেক্সা বালেনো গাড়ি চেপে রওনা হলাম চাণ্ডিল-চাইবাসা-জগন্নাথপুর- নোয়ামোণ্ডি- জামদা হয়ে কিরিবুরুর ও মেঘাতবুরুর উদ্দেশ্যে। দূরত্ব ২৫০ কিমির বেশি নয় বলে মনে হল। জঙ্গল মহলের মসৃণ রাস্তা ধরে রানিবাঁধের জঙ্গল ছুঁয়ে ঝিলিমিলি- বান্দোয়ান-কাটিন হয়ে টাটানগরের বিভিন্ন জনপদ ছুঁয়ে ছুঁয়ে রাজাখাসওয়ান চাইবাসা, ডাঙ্গোয়াপোসি, নোয়ামুন্ডি, বড় জামদা হয়ে দুপুর ১২টার সময় পৌঁছে গেলাম বরবিল স্টেশনে। শেষের অনেকটা পথ জুড়ে লাল মাটি, মালভূমির উঁচু নিচু জমি, পলাশ-শিমুল-শাল-কুসুমের গাছের মনোমুগ্ধকর শোভা ও মাঝে মাঝে পাহাড়শ্রেণী।
৫ ঘন্টার কিছু সময়ে বরবিল পৌঁছে চোখে পড়ল দূরের মনোমুগ্ধকর পাহাড়ের সারি। এই অঞ্চলের ভূগোলটা অভিনবত্বের দাবি রাখে, সারান্ডা বনভূমির একপ্রান্তে ওড়িশার কেওনঝাড় জেলার এক জনপদ বরবিল। মূলত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউন। বরবিলের আশপাশ ঘিরে যেমন পাহাড়-জঙ্গল, তেমনই লৌহ খনি ও নানান শিল্প কারখানা। দেশের লৌহ আকরিকের সবচেয়ে বড় রিজার্ভ এই অঞ্চলে, যার অনেকটাই সারান্ডার বনভূমি অঞ্চলের অন্তর্গত। এমনিতেই ফাঁকা ফাঁকা বরবিল। স্টেশন থেকে ৩ কিমি দূরে শহরের একপ্রান্তে হোটেলটির অবস্থান। সাহু হোটেল। দুদিকে দুটি জঙ্গলময় অনুচ্চ পাহাড়। বড় জামদা অথবা বরবিলকে কেন্দ্র করেই ঘোরা যায় সারান্ডার জঙ্গল ও ঝর্ণা, নদী, মন্দির সহ আরো নানা দ্রষ্টব্যস্হল। ছোটনাগপুর মালভূমিতে ৮২০ বর্গ কিমি জুড়ে সারান্ডার পর্বতময় জঙ্গল। ঝাড়খন্ডের পশ্চিম সিংভূম ও ওড়িশার কেওনঝাড় জেলার কিছু অংশে বিস্তৃত। জঙ্গল জুড়ে লৌহ আকরিকের ভান্ডার ছাড়াও পাহাড়, নদী, ঝর্ণা আর অপূর্ব প্রাকৃতিক শোভা। জঙ্গল এলাকার মধ্যে রয়েছে কিরিবুরু ও মেঘাতবুরুর SAIL টাউনশিপ, থলকোবাদ, মনোহরপুর। আর সারান্ডার এক প্রান্তে চাইবাসা, বড় জামদা ও বরবিল। বড় জামদা থেকে সারান্ডার অন্যতম আকর্ষণ জোড়া পাহাড়ি জনপদ কিরিবুরু-মেঘাতবুরুর দূরত্ব ২০ কিমি। আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল সেখানেই। সারান্ডা ও কিরিবুরুতে নিজেদের গাড়িতে চড়ে রোমাঞ্চকর অভিযানের কথা অনেক দিন মনের মণিকোঠায় অমলিন হয়ে থাকবে, অনন্য বন্যরূপের জন্য।
আমরা অরণ্য প্রেমিক চারজন। বরবিলের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে স্বপ্নের -ভালোবাসার নদী কারো। আধা শহর এলাকা ছাড়িয়ে সেই কারো নদীর উপর ব্রীজ পেরিয়ে প্রবেশ করলাম এক স্বপ্নের লাল মাটির দেশে। সামনেই উঁচু উঁচু সবুজ পাহাড়। পাশেই লৌহ আকরিকের খনি, বোলানি মাইনসে যাবার রাস্তা। গাড়ি ছুটল অন্য পথে জঙ্গলের দিকে। খনি অঞ্চল হওয়ায় বরবিলের আশেপাশের পথ ঘাট বেশ ধুলোময়। একটু এগিয়েই দুপাশে শালগাছের সারি। গত বর্ষায় গাছগুলি সবুজ-সতেজ হয়ে উঠেছে, বর্ষনসিক্ত শালপাতার ঔজ্জ্বল্যে মন ভরে গেল। মাঝে মধ্যে দু একটি লাল পাতায় ভরা কুসুম গাছ। সবুজ ও লালের সমন্বয়ের মাঝে মালভূমি প্রান্তরের বাতাসে ম ম করা মহুয়া ফুলের গন্ধ। একটা ঝাঁকড়া মহুয়া গাছের নিচে গাড়ি থামালাম। এবারে আমাদের সঙ্গে আসা বাকি দুজনের এই প্রথম মহুয়া গাছ দেখা। সামনের অনেক উঁচু পাহাড়টা দেখিয়ে চালক সুখদেব সোরেন (রাজা) বলল স্যার, আমাদের গন্তব্য ঐ পাহাড়টা পেরিয়ে আরো উপরে- কিরিবুরু। শুরু হল পাহাড় চড়া আর গভীর জঙ্গলে প্রবেশ। শালের ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পাকদন্ডী পথে চড়াই ভাঙা। অনেকটা উঠে পাহাড়ের বাঁকে এক জায়গায় গাড়ি থামল। জায়গাটা কিছুটা ভিউ পয়েন্টের মত। অনেক নিচে জঙ্গলময় উপত্যকা। দূরে উপত্যকার আরেক প্রান্তে আরো অনেক পাহাড়ের সারি। দূরের উপত্যকাতেই সারান্ডার কোর এরিয়া। চারিপাশে উঁচু উঁচু গাছে নানান পাখির ডাক। বেশ কিছুক্ষণ নির্জন জঙ্গলময় পাহাড়ি বাঁকে সময় কাটিয়ে আবার চলা শুরু। পাহাড় ভেঙে আরো কিছুটা উঠে জঙ্গল একটু পাতলা হল। পথে পড়ল একটি জায়গা নাম তালাও, ও তার উপরে SAIL এর নির্মিত একটি উদ্যান। আরো খানিক গিয়ে পৌঁছলাম কিরিবুরুতে। জঙ্গলের মাঝে আনুমানিক ১৩১১ মিটার উচ্চতায় পাহাড়ের উপর এখানে গড়ে উঠেছে SAIL এর মনোমুগ্ধক এক টাউনশিপ। কিরিবুরুর অবস্থান ওড়িশার কেওনঝাড় জেলায়, আর লাগোয়া মেঘাতবুরু ঝাড়খন্ডের পশ্চিম সিংভূম জেলায়। সীমানা পেরিয়ে ওড়িশা ছেড়ে প্রবেশ করলাম ঝাড়খন্ডে।
কিরিবুরুর ফরেস্ট অফিস থেকে সারান্ডার কোর এলাকায় সাফারির অনুমতি মেলে। জায়গায় জায়গায় ভীষণ ঘন জঙ্গলের মধ্যে গা ছমছম করে। জঙ্গলের অন্দরে ৫৫০ মিটার উচ্চতায় পাহাড়ি গ্রাম থলকোবাদ। একসময় মাওবাদী কার্যকলাপের দৌলতে খুব অশান্ত পরিবেশ ছিল থলকোবাদ সহ সমগ্র সারান্ডার জঙ্গলে। তবে কয়েক বছর হল সে অশান্তির অবসান হওয়ায় পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে সারান্ডায়। সারান্ডার জঙ্গলে আছে অনেক হাতি। এছাড়াও আছে হরিণ, সম্বর, বাইসন। তবে সাফারির সময় জঙ্গলের গভীরতায় চমকিত হলেও ভাগ্যে না থাকলে বন্য জন্তুর দেখা তেমন মেলে না। শুধু পাহাড়-জঙ্গলের অপূর্ব প্রকৃতি মন ভরিয়ে দেয়। অনুমতি জোগাড় করতে পারলে দেখে নেওয়া যায় SAIL এর ‘আয়রন ওর মাইনস’। জঙ্গলের মাঝে আছে কয়েকটি ঝর্ণা। তবে একদিনের সফরে এলে সব দেখা হয় না। হাতে ২/৩ দিন সময় নিয়ে বেরুতে হবে।
বিকেলবেলা হাজির হলাম কিরিবুরু-মেঘাতবুরুর ভিউ পয়েন্টে, যা সারান্ডার অন্যতম আকর্ষণ। পাহাড়ের মাথায় সারান্ডার জঙ্গলের সর্বোচ্চ স্থানে এই সানসেট পয়েন্ট। স্থানীয় ভাষায় ‘কিরি’ শব্দের অর্থ হাতি ও ‘বুরু’ শব্দের অর্থ পাহাড়। আর মেঘাতবুরু হল মেঘেদের পাহাড়। ভিউ পয়েন্টের নিচেই SAIL এর মেঘালয় গেস্ট হাউস। বিকেলবেলা ভিউ পয়েন্টের চাতালে বহু পর্যটকের সমাগম। উপর থেকে সামনের দৃশ্যপটে অগুনতি পাহাড় সারির অসাধারণ ভিউ দেখে মুগ্ধ হতে হয়। সারান্ডাকে বলা হয় ‘সাতশ পাহাড়ের দেশ’। আর এই কিরিবুরুর পাহাড়ের উপর থেকেই পরিস্কার দিনে দেখা যায় ৭০০টি পাহাড়। মেঘলা না হলেও খুব পরিস্কার ভিসিবিলিটি ছিল না এদিন। তা সত্ত্বেও সামনে থেকে পিছনে পাহাড় শ্রেণীর প্রায় ৬-৭ টি লেয়ার স্পষ্ট দৃশ্যমান। নিচের উপত্যকায় সারান্ডার কোর এরিয়ার ঘন সবুজ জঙ্গল। নানান পাহাড়ে অনেক ঘুরেছি। কিন্তু কিরিবুরুর মত এমন আশ্চর্য্য সুন্দর ভিউ খুব কমই দেখেছি। সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়েছে। সামনের পাহাড় সারি ও আশেপাশের জঙ্গুলে পরিবেশ দেখে ও ছবি তুলে খানিক প্রতীক্ষার পর সাক্ষী রইলাম এক অসাধারণ সূর্যাস্তের। আকাশে রঙ ছড়িয়ে সারান্ডার সাতশ পাহাড়ের মাথায় এদিনের মত অস্ত গেল সূর্য। সূর্য ডোবার পর বুনো গন্ধের ঘ্রাণ নিয়ে আরো খানিক বসে রইলাম ভিউ পয়েন্টে। নিঝুম পরিবেশে নিভে যাওয়া আলোয় পাহাড় জঙ্গলের প্রকৃতি বড্ড ভাল লাগে যে। একটু একটু করে মেঘ জমছিল নিচের পাহাড়গুলোর মাথায়। ডানপাশের পাহাড়ের মাথায় কোনো গ্রামে জ্বলে উঠেছে দু একটি আলো। এদিন আবার পূর্ণিমা। উল্টোদিকে গাছের ফাঁকে দেখা মিলল পূর্ণিমার চাঁদ। লাল মাটির দেশে কেমন যেন লালচে সেই চাঁদ। এই পরিবেশে যেন চাঁদের রূপও বেশ অন্যরকম। ভিউ পয়েন্টের নিচের মেঘালয় গেস্ট হাউজে তখন বিজলি বাতি জ্বলে উঠেছে।
কিরিবুরু-মেঘাতবুরুকে বিদায় জানিয়ে নেমে চললাম আবার জঙ্গলের পথে। ফিরতি পথে সঙ্গী হল পূর্ণিমার চাঁদ। বাসন্তী পূর্ণিমার পরিপূর্ণ জ্যোৎস্নারাতে জনহীন পাহাড়-জঙ্গলে পথ চলা এক অসাধারণ অনুভূতি। দিন কয়েক আগে বিভূতিভূষণের আরণ্যক উপন্যাসে এমনই এক বাসন্তী পূর্ণিমার রাতে জঙ্গলের পথে মালভূমি-পাহাড়-নদী পেরিয়ে ঘোড়ায় চড়ে যাত্রার এক বর্ণনা পড়েছিলাম। বার বার যেন মনে পড়ছিল সে কথাই। শুধু ঘোড়ার বদলে আমাদের বাহন গাড়ি আর সেটা ছুটছেও আধুনিক পিচ রাস্তায়। অনেক অনুরোধে চালক সদানন্দ গাড়ি দাঁড় করাল জঙ্গলময় পাহাড়ি বাঁকে। কি ভয়ঙ্কর নির্জন চারিদিক। চাঁদনী রাতে এক অদ্ভুত সৌন্দর্যময় রূপ বন-পাহাড়ের। ভয়ের অনুভূতি যেন চারপাশের সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে তোলে। সামনে জ্যোৎস্নালোকিত পাহাড় ও নিচের উপত্যকার যে রূপ দেখলাম তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। তা তুলে রাখলাম চোখ ও মনের ক্যামেরায়। সে ছবি সঠিকভাবে তোলার মত ক্যামেরা বোধহয় এখনো আবিষ্কৃত হয় নি। অল্পক্ষণ পরেই চালক জানাল সন্ধ্যের পর এ জঙ্গলে গাড়ি থেকে নামা নিরাপদ নয়। অতএব এবার সোজা গাড়িতে চড়ে ফিরে চললাম বরজামদার হোটেলে। সন্ধ্যায় চা পকোড়া ও রাতে ডিনারের পর হোটেল চত্বরে চন্দ্রালোকিত পাহাড়ও বেশ লাগছিল। অক্টোবরের রাতের বেলা বরবিলের বাতাসে শির শিরে ভাব।
পরদিন সকালে ব্রেকফাস্টের পর গন্তব্য ছিল ‘ঝিকরা জলপ্রপাত’। একই পথে কারো নদী পেরিয়ে রাস্তা। তারপর কিরিবুরুর পথ ছেড়ে অন্য পথ ধরল গাড়ি। ফরেস্টের একটি চেক পোস্ট পেরিয়ে খানিক উঠে সামনের পাহাড়ের দিকে এগোতে লাগল লাল মাটির পথ ধরে। পাহাড়ের মাথায় লোহার খনি। আর পাহাড়ের গায়ে খানিকটা উপরে দূর থেকে চোখে পড়ল একটি ভীষণ সুন্দর ঝর্ণা। সেখান থেকে একটি জলের ধারা নিচে নেমে এসে বইছে লাল মাটির ঢালু জমিতে। প্রায় আধ কিমি চড়াই ভেঙে উঠে ঐ জলপ্রপাতে পৌঁছলাম। গাড়ি রেখে একটি ছেলে আমাদের সাথে চলল গাইড হয়ে। তির তির করে বেয়ে আসা পাহাড়ি ঝোড়া বরাবর জঙ্গলময় পাথুরে পথে চড়াই ভেঙে পাহাড়ের উপর ধীরে ধীরে উঠতে থাকলাম। পথ কখনও ঝোড়ার ডান দিক দিয়ে তো কখনও বাঁদিক দিয়ে। পাথরের উপর পা ফেলে ঝোড়া পেরনো হল কয়েকবার। মূল প্রপাতের আগে কয়েক জায়গায় পাথরের গায়ে সৃষ্ট ছোট ছোট জলপ্রপাত। মূল প্রপাতটিতে পৌঁছে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। জঙ্গলের পরিবেশে খাড়াই পাহাড়ের অনেক উঁচু দেওয়াল বেয়ে অনেকটা জুড়ে ঝির ঝির করে ঝড়ছে জলের ধারা। নিচে বড় বড় প্রস্তরখন্ড। সেখানে দাঁড়িয়ে জলের ছিটেতে ভিজিয়ে দিচ্ছে ঝিকরা। জলপ্রপাত হিসাবে হয়ত খুব দুর্দান্ত নয়। কিন্তু এক অদ্ভুত সৌন্দর্য্য ও স্নিগ্ধতা আছে ঝিকরা জলপ্রপাতের। নির্জন জঙ্গলের মাঝে পাহাড়ের কোলে এই ঝিকরা জলপ্রপাত সারান্ডার সুন্দরতম প্রপাত। সারান্ডা ভ্রমণে অন্যতম দর্শনীয় স্থান। ঝিকরার আরেক বৈশিষ্ট্য যে সূর্যের অবস্থান অনুযায়ী দিনের বিশেষ কিছু সময় ধরে রামধনু দেখা যায় জলপ্রপাতের জলে। যদিও সকালের দিকে তা দেখা ভাগ্যে জুটল না। খুব ইচ্ছে করছিল দিনের বেলায় ঝর্ণার জলে স্নান করতে নেমে পড়ি। কিন্তু সে ইচ্ছে মুলতুবি রাখতে হল। ঝিকরা দর্শনের এক দারুণ পরিতৃপ্তি নিয়ে এ-দিনের পরের গন্তব্য ‘জটেশ্বর মন্দির ও লেক’। বরবিলে ফিরে এবার বিপরীত দিকে যাত্রা। এপথে দেখা মিলল রুংটা গ্রুপের টাউনশিপ, অফিস, প্লান্ট ও মাইনসের সাইনবোর্ড। কয়েক কিমি পিচ রাস্তায় চলার পর, কাঁচা লাল মাটির পথ ধরল গাড়ি। আবার জঙ্গলে প্রবেশ। শাল-কুসুম-পলাশ গাছের চাঁদোয়ার মধ্যে দিয়ে উঁচু নিচু পথ। দু জায়গায় পাহাড়ি ঝোড়া পেরলো গাড়ি। খানিক উঠে পাহাড়ের পাদদেশে জটেশ্বর শিব মন্দির। শান্ত পরিবেশ। পাশের পাহাড়ের দেওয়াল বেয়ে নেমে আসছে শীর্ণ ঝর্ণা ধারা। সেই ধারা নিচে এসে বয়ে চলেছে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে। এদিন এঅঞ্চলে উৎসব। জঙ্গলের মধ্যে চলল আমাদের রঙ মাখা।
এখান থেকে আধ কিমি জঙ্গুলে হাঁটা পথে রয়েছে জটেশ্বর লেক। জলের ধারা বরাবর জঙ্গলের পথে চলে পোঁছলাম পাহাড় ঘেরা এক ফালি উপত্যকার মত একটি জায়গায়। তার এক প্রান্তে একটি মাঝারি মাপের হ্রদ। তিনদিক জঙ্গলময় অনুচ্চ পাহাড়ে ঘেরা। মনোরম সে দৃশ্য। মন্দির চত্বর থেকে আসা জলের ধারাটি মিশেছে এই হ্রদে। শুনলাম জলাশয়ের পাড়ে নাকি জল খেতে মাঝে মধ্যে চলে আসে হাতি। বিশেষ করে ফসল পাকার সময় নভেম্বরে। তবে এদিন যথারীতি তাদের দেখা পাওয়া গেল না। বরবিলের আশেপাশে ও সারান্ডার জঙ্গলে দেখার মত রয়েছে আরো অনেক কিছু। যা দেখতে গেলে প্রয়োজন আরো দিন কয়েক। তবে এই সফরে সারান্ডার বন-পাহাড়ের প্রকৃতি দেখার যে অনবদ্য অভিজ্ঞতা, তা অনেককাল থেকে যাবে মনের মনিকোঠায়।
তৃতীয় দিনটি শুরু হয়েছিল একটু অন্য রকম ভাবে, সারা দিন সারান্ডার জঙ্গলমহলে বিভিন্ন জনজীবন ও জনজাতিদের আটপৌরে যাপনচিত্র দেখে ক্লান্ত অবসন্ন শরীর নিয়ে ফিরলাম তিনটে নাগাদ কিন্তু সেই দিনের গোধূলিই যে এত অভূতপূর্ব রঙে-রসে ধরা দেবে, কে জানত! চারটে নাগাদ টিফিন সারলাম আমরা কিরিবুরু গেস্ট হাউসের ক্যান্টিনে। তখন আর বাংলোয় ফিরিনি। ওখানেই দাঁড়িয়ে গেলাম সূর্যাস্ত দেখব বলে। সেই দেখার রোমাঞ্চ নিয়ে ক্রমশ আরও কড়া হওয়া শীতের ঝাপটানির মধ্য দিয়ে অবশেষে হা-ক্লান্ত আমরা সন্ধে পার করে ফিরলাম বনবাংলোয়। সেখানে রোহিত নামের ছেলেটির অপূর্ব চা দিয়ে বন-বাস শুরু হল। শেষ হল আশ্চর্য বেগুনপোড়া, রুটি আর ডিমের কারিতে। তাড়াতাড়ি শুতে হল। পরদিন ভোরে উঠেই যেতে হবে ‘সানরাইজ পয়েন্ট’। উঠলাম প্রায় রাত থাকতেই। এখান থেকে ছ’কিলোমিটারের মতো পথ। খানিকটা গিয়ে একটা টি-ব্রেক নিয়ে তার পর পয়েন্টে গেলাম। একটা চৌকো চত্বর। সেই চত্বরের দু’পাশে দু’টি দীর্ঘ গাছ। ভোরের পাহাড়ি হাওয়া এসে সেখানে উদ্ভ্রান্ত করে তুলছে শুকনো পাতার সংসার। একটু মেঘ-কুয়াশার বাড়াবাড়ি ছিল বলে সূর্যকে সে ভাবে পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু জঙ্গুলে পরিবেশের মাঝখানে একটুকরো ভোরের সেই স্নিগ্ধ কোলাজ স্মরণীয়। বাংলোয় ফিরে দ্রুত ব্রেকফাস্ট। তার পর বেরিয়ে পড়া সারা দিনের জন্য। পুন্ডুল ফল্স, স্বপ্নেশ্বর শিবমন্দির। পুন্ডুলের পথের এক দিকে জঙ্গল, অন্য দিকে খাদ। পুন্ডুলের বেশ খানিকটা আগে গাড়িকে ত্যাগ করতে হল। বেশ খানিকটা ট্রেকিং। জলপ্রপাতের নীচে একটা কুণ্ডের মতো দেখতে অংশ। তার চারপাশে ইতস্তত বড় বড় প্রাচীন পাথর। কোথাও সবুজ, কোথাও হলুদ রাগী তিতিবিরক্ত শ্যাওলায় ঢাকা সে সব। সেখানে জলের স্রোত-শব্দের মধ্যে অনেকক্ষণ থাকলাম। বড় নির্জন। দুপুরের খাওয়া পর্ব শেষ করে একেবারে সারান্ডার আরও নিবিড় গভীর আদিমতার দিকে আমাদের বন-যাত্রা শুরু হল সকাল ন’টায়। থলকোবাদ। যাওয়ার পথে এক অসাধারণ আদিবাসী হাট আমাদের নজরে এল।দেশি মুরগি থেকে পিঁপড়ের ডিম, নানা রঙের এবং শিম থেকে কাঁচালঙ্কা-কুমড়ো, হাঁড়িয়া থেকে গজা, নদীর মাছ থেকে মশলাপাতি— বিচিত্র পশরা নিয়ে বসেছেন স্থানীয় মানুষেরা। সেই হাটের গন্ধ, শব্দ, বর্ণ সবই বড় অকৃত্রিম, মনকাড়া। যেখানে হাঁড়িয়া বিক্রি হচ্ছে, হাট সারতে সারতেই মানুষ সেখানে পৌঁছে যাচ্ছেন। গোল গোল তেলেভাজা, সিদ্ধ কড়াই আর কাঁচালঙ্কা-সমেত সেই হাঁড়িয়া বিক্রির ছবিটাই দারুণ! ঘণ্টাখানেক পর হাট পিছনে রেখে গাড়ি চলল থলকোবাদের দিকে। কিরিবুরু একটু শহর-শহর। এ বার গাড়ি পড়ল একেবারে আদিম অরণ্যের অকৃত্রিমতায়। থলকোবাদের পথটি সেল-এর লৌহখনি অঞ্চল দিয়ে। লোহার গুঁড়োর জন্য সমস্ত পথটাই অন্য রকম লাল লাল। এক দিকে ঘন জঙ্গল। সেই জঙ্গলের প্রান্তের গাছগুলি রক্তিম হয়ে পড়েছে। পথ এঁকেবেঁকে চলেছে সুদূরে। বন্য বাতাসের বিলোল লীলায় কেঁপে উঠছে মহাবৃক্ষের অন্ধকার।
সেই ক্রমশ সন্ধের আবছা আঁধার-রণিত বুনো পরিবেশে কী এক অপার্থিব অনুভব! কোনও বন্যপ্রাণী সামনে এসে পড়েনি। তবুও কী নিদারুণ রোমাঞ্চ! দুরন্ত অটল সব গাছের আলো-ছায়ার দৈত্য গোটা পথটা অধিকার করে! অথচ জঙ্গল তো এত কিছু জানে না। চির নিরুৎসুক উদ্ভিদের নিরুপায় লাবণ্যের অগোচরেই আমরা হয়তো রোমাঞ্চিত হচ্ছি। ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছি না, কোথায় শেষ এই শাল-মহুয়া-নিম-অর্জুন এবং আরও কত কত নাম-না-জানা মহাবৃক্ষের মহাসমুদ্রের! জঙ্গলের পিছনে তখন লাল সূর্য। আজানুলম্বিত অরণ্যের ঝুঁটি ছোঁয়া সেই সূর্য আমাদের সঙ্গে দূরত্ব রচনা করছে মুহূর্তে মুহূর্তেই।
অবশেষে থলকোবাদ! বাংলোর চাবি নিয়ে এলেন এক অমল মানুষ— মঙ্গল সিংহ। শ্যামলা রং কিন্তু উজ্জ্বল স্বাস্থ্যের শান্ত স্নিগ্ধ মধুর এক মানুষ। সেই রাতে বনবাংলোর চত্বরে নিজে হাতে রেঁধে খাওয়ালেন বনমুরগির কারি। আদিম সারান্ডার মতোই আদিম সেই রান্না। পরের দিন সকালে তিন দিনের স্মৃতি বুকে নিয়ে ফেরার পথে পাড়ি দিলাম।
কীভাবে যাবেন
হাওড়া স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্স থেকে ভোর ছ’টা কুড়ির বরবিল জনশতাব্দী চেপে বড়াজামদা স্টেশন। দুপুর ১টা। বড়াজামদা থেকে ১ ঘণ্টার গাড়িপথে কিরিবুরু। সেখান থেকে থলকোবাদ কমবেশি ঘণ্টাপাঁচেকের থাকার জায়গাঃ সারান্ডা ভ্রমণে বরবিলে থাকা সবচেয়ে সুবিধাজনক। Hotel Adhar Regency (যোগাযোগ – 9937623556/ 7008068165), Hotel Vicky, Hotel Prateek – এমন বেশ কিছু ভাল মানের বাজেট প্রাইভেট হোটেল রয়েছে বরবিলে। এছাড়া স্টেশন থেকে ৪ কিমি দূরে জঙ্গলের পরিবেশে রয়েছে Saranda Safari Resort, যা অবস্থান গত ভাবে থাকার জন্য সবচেয়ে ভাল।
বুকিং করতে পারলে সারান্ডার সবচেয়ে ভাল থাকার জায়গাটি হল মেঘাতবুরুতে SAIL এর Meghalaya Guest House. ইদানিং দু একটি ছোট ছোট লজেও থাকার ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে কিরিবুরু-মেঘাতবুরুতে। এছাড়া থাকা যায় কোয়েল নদীর তীরে মনোহরপুরে। থাকার জন্য আছে Santoor Guest House ও বুকিং পেলে SAIL এর গেস্ট হাউজ। যদিও মনোহরপুরে থাকলে যাতায়াতের দূরত্ব একটু বেশি হয়ে যায়।
সফর সূচীঃ বরবিলকে কেন্দ্র করে দু রাত তিনদিনের থাকা খাওয়া ও গাড়ি ভাড়া সমেত প্যাকেজ খরচ কমবেশি জনপ্রতি ৪০০০ টাকা (৫ জনের গ্রুপ হলে)। প্রথম দিন বিকেলে দেখে নেওয়া যায় – বৈতরনী নদী ও মৃগ সিংহ মন্দির, অথবা কারো নদী ও বরবিলের আশেপাশে।
দ্বিতীয় দিনের সফরে – সারান্ডা ফরেস্ট সাফারি, থলকোবাদ, আয়রন মাইনস, কিরিবুরু-মেঘাতবুরু, সানসেট ভিউ পয়েন্ট। তৃতীয় দিনের সফরে – ঝিকরা জলপ্রপাত, জটেশ্বর মন্দির ও লেক।
এছাড়া একটি অতিরিক্ত দিন হাতে থাকলে ঘুরে নেওয়া যায় পাচেরি জলপ্রপাত, ফুলবাড়ি জঙ্গল, পুন্ডুল জলপ্রপাত, স্বপ্নেশ্বর মন্দির, হান্ডিভাঙা জলপ্রপাত ও আরেক দিকে মূর্গা মহাদেব মন্দির। সময়াভাবে দু রাত তিন দিনের সফরে এগুলি দেখা হয় না। সারান্ডা ভ্রমণের আদর্শ সময় – অক্টোবর থেকে মার্চ।
ডঃ সুবীর মণ্ডল
পশ্চিম বঙ্গ, ভারত
বিষয়: সুবীর মণ্ডল
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: