সিডনী রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১


ধর্ষণের অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক বিশপ গ্রেপ্তার অনলাইন ডেস্ক


প্রকাশিত:
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৫৯

আপডেট:
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৫৯


ধর্ষণ ও শিশুদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক বিশপ ক্রিস্টোফার সন্ডার্সকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগে বিচারের মুখে পড়া সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ ক্যাথলিক ধর্মযাজক হিসেবে দ্বিতীয় ব্যক্তি তিনি। এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন সন্ডার্স।


বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, গত বুধবার পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ব্রুম অঞ্চল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পুলিশের পক্ষ থেকে ও পোপের নির্দেশে অভিযোগের বিষয়ে আলাদা তদন্ত হয়।


সন্ডার্সের বিরুদ্ধে দুটি ধর্ষণ, ১৪টি বেআইনি ও অশালীন আক্রমণ এবং কর্তৃত্বের অবস্থানে থেকে শিশুদের সঙ্গে অশালীন আচরণের তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। ৭৪ বছর বয়সী বিশপকে জামিন দেননি আদালত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আজ আদালতে শুনানি হবে।


২০০৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত শহর ব্রুম, কুনুনুরা এবং কালুম্বুরুর আদিবাসী সম্প্রদায়ে এসব নিপীড়নের ঘটনা ঘটে। এর আগে প্রয়াত কার্ডিনাল জর্জ পেলকে এ সংক্রান্ত অপরাধের দায়ে কারাগারে পাঠানো এবং পরে খালাস দেওয়া হয়।

পুলিশকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়ান ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্স বলেছে, সন্ডার্সের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের জন্য ‘খুব গুরুতর ও গভীরভাবে পীড়াদায়ক’।

পার্থ আর্চবিশপ টিমোথি কস্টেলো বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগের পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া উচিত এবং যথার্থ এবং অবশ্যই প্রয়োজনীয়।’

১৯৭৬ সালে চার্চে নিয়োজিত হওয়ার পর থেকেই সন্ডার্সের কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় অস্ট্রেলিয়ার উত্তর–পশ্চিম কোণে প্রত্যন্ত কিম্বারলি অঞ্চলে কেটেছে। ১৯৯৬ সালে তিনি ব্রুমের বিশপ নিযুক্ত হন।

বিশপের এখতিয়ারভুক্ত এলাকাটি প্রায় ৭ লাখ ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত, যার অধীনে দেশের বেশির ভাগ প্রত্যন্ত অঞ্চলই পড়ে। এটি আকারে প্রায় তুরস্কের সমান।

সামাজিক মেলামেশা, জনকল্যাণমূলক কাজ এবং ক্যাম্পিং ও মাছ ধরার অভিযানে তরুণদের সঙ্গ দেওয়ার জন্য সুপরিচিত সন্ডার্স। স্থানীয়দের মধ্যে তিনি প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁর নামে একটি হরিণেরও নামকরণ করা হয়েছে।

বেশ কয়েকজন আদিবাসী পুরুষের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। ২০২০ সালে প্রথম অভিযোগের বিষয়ে জানা যায়। তবে পুলিশ তদন্তের পর তাকে ছেড়ে দেয়।

২০২০ সালে ব্রুমের বিশপ পদ থেকে সরে স্বেচ্ছায় দাঁড়ান সন্ডার্স। তবে তিনি এখনো ইমেরিটাস বিশপ হিসেবে আছেন।

পোপের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক তদন্ত শেষে ২০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন গত বছর গণমাধ্যমে ফাঁস হলে পুলিশ নতুন করে তদন্ত শুরু করে।

পোপের নির্দেশে যৌন নির্যাতনের তদন্তের নজির খুবই কম। যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং ক্যাথলিক চার্চের বিশপ ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ২০১৯ সালে ‘ভোস এস্টিস লাক্স মুন্ডি’ নামে এই তদন্ত চালু করা হয়। লাতিন শব্দগুচ্ছের অর্থ ‘আপনি বিশ্বের আলো’।

কেবল পোপই একজন বিশপ নিয়োগ করতে পারেন বা তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে পারেন।

২০১৭ সালে যুগান্তকারী জাতীয় তদন্তে ক্যাথলিক চার্চসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের ন্যায়বিচারে ব্যর্থতা প্রমাণিত হওয়ার পর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিশু যৌন নিপীড়ন নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top