সিডনী সোমবার, ১৩ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১


রেমিয়েন্স অস্ট্রেলিয়া স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২২ (ব্যাডমিন্টনপর্ব) : সালেহ আহমেদ জামী


প্রকাশিত:
১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০১:১৫

আপডেট:
১৩ মে ২০২৪ ১৮:২৯



একটা ঘোর লাগা পর্বের সমাপ্তি ছিল রেমিয়ানস অস্ট্রেলিয়ার ব্যাডমিন্টন পর্ব। এখনো ঠিক ঠাউরে উঠতে পারছি না কি কি হলো গত ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায়। উত্তেজনাপূর্ণ ও আনন্দদায়ক খেলার পাশাপাশি দর্শক সমাগম ছিল অবিশ্বাস্যরকম আশা জাগানিয়া। এক ঝাঁক তরুণ রেমিয়ানের আনন্দের উপলক্ষ্য হয়ে উঠেছে স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল। অপেক্ষাকৃত পুরোনো সিডনিবাসীরাও ছুটে এসেছিল ব্যাডমিন্টনের এই দারুন প্রতিযোগিতাকে সফল করতে। রেমিয়ানস অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতা।

ব্যাঙ্কস্টাউনের প্রো-ব্যাডমিন্টন1 কমপ্লেক্সে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই খেলোয়াড়রা আসতে শুরু করে। ২০ জন রেমিয়ান, ১০ জন রমণী (দুজন রেমিয়ান তনয়া), ৬ জন রেমিয়ান ছেলে সন্তান মোট ৩ ঘন্টায় ৩৫টি খেলা সম্পন্ন করে।

পুরুষদের ডাবলসের দল অনেক আগেই নির্ধারিত হওয়ায় সেরা চারটি দলকে সেমিফাইনালে আগে থেকেই খালি চোখে দেখা যাচ্ছিল। সেক্ষেত্রে কোন ব্যতিক্রমী কিছু হয়নি। তবে অন্য ৬টি দলের উদার মানসিকতা ছিল দেখার মতন। মুনীর-রাসেল ভাই, কৌশিক-গুলজার ভাই, অলিন-পাভেল ভাই, নাবিল-নাফিজ, শিহান-জামি ও সাকিব-তৌহিদরা জানতো প্রতিযোগিতা চললেও ওদের পরবর্তী পর্বে বা সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তারপরও তারা সকলেই অংশগ্রহণ করেছেন। আনন্দ দিয়েছেন। আনন্দ সাথে করে বাড়িও নিয়ে গিয়েছেন।

ভাগ্য বিধাতা টূর্ণামেন্টের সম্ভাব্য সেরা খেলোয়াড়দের একই দলে রাখায় ওরা সেমিতে গিয়ে দর্শকনন্দিত খেলা উপহার দিয়ে গিয়েছে। সাব্বির-সুবীন ও মুন-নিকভ আর একটু এক সাথে খেলতে পারলে ব্যবধান তৈরী করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর ফাইনালের কথা কি বলবো বলুন? চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না সিডনির চ্যাম্পিয়ন রিফাত কতটা ভালো খেলে! যোগ্য সঙ্গী শোয়েব তাকে যেই সাপোর্ট দিয়েছে তাও অপ্রত্যাশিত। অসাধারণ রিফ্লেক্স প্রদর্শন করেছে শোয়েব। আমি মুগ্ধ। দারুন খেলছিল ওরা। ফাইনালের দ্বিতীয় সেটে দারুণভাবে ফিরেও এসেছিল। কিন্তু সিডনি ব্যাডমিন্টনের আরেক মহারথী তুষার জানে কি করে বিজয় আলিঙ্গন করতে হয়। ধৈর্য্যের পরীক্ষায় সে উৎরে গেছে। আরেক নাম করা স্পোর্টি রেমিয়ান (সব খেলায় দুর্দান্ত) সাদাত ভাই দেখিয়ে দিলেন অভিজ্ঞতার মূল্যমান। আমরা উপভোগ করলাম চির স্মরণীয় এক ফাইনাল। জিতল কি তুষার-সাদাত ভাই জুটি? হ্যাঁ, চ্যাম্পিয়ন ওরাই আর রানার্স আপ শোয়েব-রিফাত জুটি। কিন্তু বিজয়মাল্য রেমিয়ানস অস্ট্রেলিয়ার গলায়! কেন বলছি শেষ অনুচ্ছেদে তা জানবেন।

প্রমীলা শাখায়ও ছিল টানটান উত্তেজনা। ৫টি দলের প্রত্যেকেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছেন। এনি-মালিহা, কেয়া ভাবী-সালিহা ও রূপসা-নীলা জুটির সকলেই তিনটি খেলায় জয়লাভ করে আয়োজকদের ফেলেন কঠিন বিপদে। পরে ফাইনালের জন্য পয়েন্টের ব্যবধানকে যাচাই করতে হয়। টাইব্রেকারের মাধ্যমে কেয়া ভাবী- সালিহা কেবল ফাইনালেই উঠেনি বরং রূপসা-নীলা জুটি হারিয়ে শিরোপা লাভ করে।

অনূর্ধ্ব ১৮ রেমিয়ান তনয়রাও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলুক প্রতিযোগিতা করে। মোট ৬জন কিশোরের এই একক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় শেখ রেদওয়ানুল আরকাম আর রানার্স-আপ ইয়াসা আউয়াল।

রেমিয়ান দ্বৈত চ্যাম্পিয়ন: সাদাত চৌধুরী - মাহমুদুল হাসান তুষার
রেমিয়ান দ্বৈত রানার্স আপ : সালেহ আহমেদ শোয়েব - রিফাত গাজী

প্রমীলা দ্বৈত চ্যাম্পিয়ন: নাজমুন নাহার কেয়া - সালিহা হাসান
প্রমীলা দ্বৈত রানার্স আপ: নাহিদ কামাল রূপসা - মুনমুন নীলা

কিশোর চ্যাম্পিয়ন: শেখ রেদওয়ানুল আরকাম
কিশোর রানার্স আপ: ইয়াসা আউয়াল

এই যে মহারণ সম্পন্ন হলো তা সম্ভব হতো না যদি সাকিব, নাঈম, শাহরিয়ার, বক্কররা অমন দানবীয় সহযোগিতা না করতেন। কেয়া ভাবী, রুমানা চা- শুকনো খাবার সরবরাহ না করতেন। ওরা আমাদের রাঙিয়ে দিয়েছে সন্ধ্যাটি। মুনীর, কৌশিক, গুলজার ভাই, জামি, সুবীন, সাব্বির, মুন, তৌহিদ, নাবিল, নিকভ, অলিন, নাফিজসহ সকলেই দাঁড়িয়েছে খেলা পরিচালনায়। শেখ শুভ একাই কিশোর রেমিয়ানদের খেলাগুলি পরিচালনা করেন। আর ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফিতে এই আনন্দঘন মুহূর্ত বেঁধে দিয়েছেন রাসেল ভাই। 'ভাইয়ে-মায়ের এতো স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ?' এই প্রশ্নের উত্তর প্রায় মিলতে শুরু করেছে। প্রবাসে জীবন খুব মন্দ নয় যদি রেমিয়ানস অস্ট্রেলিয়া পাশে থাকেন। শেষ পর্যন্ত বিজয়মাল্য পড়লেন রেমিয়ানস অস্ট্রেলিয়ার পুরো ব্যাডমিন্টন ইউনিট।

আমাদের স্পোর্টস কমিটির পক্ষ থেকে সকলকে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top