সিডনী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

মনসা মঙ্গল (পর্ব তিন) : শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়


প্রকাশিত:
২৮ জুন ২০২১ ১৮:৩৪

আপডেট:
২৮ জুন ২০২১ ২০:৩৯

ছবিঃ  শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

 

এ বাড়িতে কাজে ঢুকে ভারি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন মনসাবালা। বাসন মাজা নয়, ঘর ঝাঁট দেওয়া বা পোঁছা নয়, কাপড় কাচা হয় মেশিনে। কাজ বলতে ঝাড়ন দিয়ে ফার্নিচার আর দরজা-জানালা মোছা, কুটনো কাটা, গিন্নিমার এটা ওটা এগিয়ে দেওয়া। এইটুকুন কাজের জন্য নাকি সাতশো টাকা! অবাক কান্ড! আর হ্যাঁ, কেউ এলে নীচে গিয়ে দরজা খুলতে হয়। কোরাকাঠির বাপেরবাড়ি বা শ্বশুরবাড়ির গাঁয়ে তাকে এর চেয়ে দশগুণ খাটতে হত। রান্নাবান্না তো ছিলই, সেই সঙ্গে বাসন মাজা, উঠোন আর ঘর নিকোনো, ধান সেদ্ধ করে শুকোনো, চিঁড়ে কোটা, মুড়ি ভাজা, টিপকলে গিয়ে জল ধরা- কী নয়? এ বাড়িতে আসার সাত দিনের মধ্যে তার শরীর ফিরল। পায়ের হাজা সারল, আরও অনেক কিছু হতে লাগল।

প্রথম প্রথম কি একটু আধটু মন খারাপ হত না? কান্না পেত না? সে হত বটে, বিশেষ করে শ্রীপতির জন্য। কখনও একটা বেফাঁস কথা কয়নি। তা ছাড়া গাঁয়ের মাটি, নদী, গাছপালা, আকাশ, টিয়ার ঝাঁক, শশা আর শাকের খেত সব কিছুই মনে পড়ত। বড় হু হু করত মন। কিন্তু দিন পনেরোর মধ্যেই সে সব যেন পালা জ্বরের মতো সেরে গেল। গিন্নিমা হয়ে গেল মা, বাড়ির কর্তা বাবা। বাড়ির ছেলে দাদা, তার বউ বউদি। মনসার নতুন নাম হল পিয়ালি। বেশ লোক এরা। দেওয়া থোওয়ার হাত আছে। প্রথম মাসে মাইনে দিয়েই গিন্নিমা বলল, টাকা কাকে পাঠাতে চাস? তোদের সুন্দরবনে মানিঅর্ডার যায় তো!

পিয়ালি একটু ভাবনায় পড়ে গিয়ে বলে, তা আছে বোধহয়। আমরা তো কখনও চিঠিপত্তর পাইনা।

পিয়ালি টাকাটা নিয়ে খুব কষে খানিক ভাবল। তার কি কোরাকাঠিতে মা-বাবার কাছে টাকা পাঠানো উচিত? কিছু টাকা কি শ্রীপতির কাছেও পাঠানো উচিত নয়? কিন্তু ভেবে দেখল, মা বাবার সুখে দুঃখে চলে যাবে। টাকা গেলে তার মদখোর দাদাই সেটা উড়িয়ে দিয়ে আসবে শুঁড়িখানায়। আর শ্রীপতি মোটেই অভাবী লোক নয়। তার ভ্যানগাড়ি আছে, নৌকো আছে, ধানজমি আছে। সুতরাং সে টাকা পাঠাল না। গিন্নিমা তাকে তিনমাস বাদে স্টেট ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে দেয়। রাস্তাঘাট আজকাল সড়োগড়ো হয়ে গেছে। পিয়ালি এখন নিজেই গিয়ে প্রতি মাসে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে আসে। গাঁয়ে থাকতে লেখাপড়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না। গত চার বছরে এ বাড়িতে সে যেমন মাইক্রোওয়েভ, ওয়াশিং মেশিন, মিউজিক সিস্টেম চালাতে শিখেছে, তেমনি কাজ চালিয়ে নেওয়ার মতো বাংলা, ইংরেজি আর অঙ্কও।

প্রথম কাজে ঢোকার চার-পাঁচ মাস বাদে একদিন শ্রীপতি দেখা করতে এল। নীচে গিয়ে দরজা খুলে মানুষটাকে দেখে ভারি আহ্লাদ হয়েছিল সেদিন। এক গাল হেসে বলেছিল, তুমি এসেছ? ভাবতে পারছি না।
শ্রীপতি ভারী লজ্জা লজ্জা মুখ করে বলল, দেখতে এলুম। এখানে সব ঠিক আছে তো! অসুবিধে নেই?
না না। ভীষণ ভালো বাড়ি। এসো, এই সিঁড়ির নীচেই বসতে হবে কিন্তু।
শ্রীপতি ঘাড় নেড়ে বলল, সেই ভালো। দুজনে বসে কিছুক্ষণ কথা হল। তারপর শ্রীপতির জন্য কিছু খাবার আনতে ওপরে গিয়ে গিন্নিমাকে বলল, মা, দেশ থেকে আমার এক জ্ঞাতি ভাই এসেছে খবর নিতে। একটু রুটি তরকারি দিই?
সেটা আবার জিজ্ঞেস করার কি আছে? রুটি তরকারির সঙ্গে একটা সন্দেশও দিস। ফ্রিজ থেকে বের করে নে।
শ্রীপতি ভারি যত্ন করে খেল। খাওয়া দেখে চোখে জল এল পিয়ালির। কেন এল তা কে বলবে!
আরও সাত-আট মাসে যখন লোকটা এল তখন আর তেমন আবেগটা টের পেল না পিয়ালি। একটু যেন তফাত হয়ে গেছে দুজনের মধ্যে। তবে কথাটথা হল অনেক।
শ্রীপতি বলেই ফেলল, দেখে মনে হয় এখানে বড় ভাল আছ তুমি। গাঁয়ে তো এত যত্নআত্তি পাও নি! থাকো তাহলে।
শেষে বোধহয় একটা দীর্ঘশ্বাসও ফেলেছিল শ্রীপতি।
পাছে তাকে নিয়ে যাওয়ার বায়না করে সেই ভয়ে কাঁটা হয়েছিল পিয়ালি। দেখা গেল শ্রীপতি সেই ধার দিয়েও গেল না। ভারি নিশ্চিন্ত লাগল তার।

এই বছরখানেক আগে থেকে একটা ঘটনা একটু একটু করে ঘটতে লেগেছে। ঘটনাটা ভারি অদ্ভুত। দুলাল নামে একজন ছোকরা কাঠমিস্তিরি এ বাড়িতে কাজে লেগেছিল। তার হাতের কাজ খুব ভালো। গিন্নিমা তাকে দিয়ে একটা মস্ত ঠাকুরের সিংহাসন করালেন।

সে ভালো ঝুনো কাঠ নিয়ে এসে গ্যারেজ ঘরের এক কোণে। কাঠ কুঁদে কুঁদে সিংহাসনটা বানাচ্ছিল। মাঝে মাঝে তাকে চা-বিস্কুট দিয়ে আসতে পিয়ালিকে পাঠাত গিন্নিমা। পিয়ালি চা পৌঁছে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ দুলালের কাজ দেখত। তন্ময় হয়ে কাজ করত দুলাল। একডাকে সাড়া পাওয়া যেত না। করাত, হাতুড়ি, বাটালি, ছেনি, র‍্যাঁদা, কত যে তার যন্ত্রপাতি। কাজ করতে করতে প্রায়ই তার চা যেত ঠান্ডা হয়ে। পিয়ালি ঝংকার দিত- বলি, চা-টা খাবে নাকি? আমি বাপু এঁটো কাপের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না।

দুলালের স্বভাব ভারি ভালো। ঝকঝকে দাঁতে হেসে বলত, ওঃ! চা এনেছ বুঝি? আমার কাজের সময় কেমন যেন মাথায় ভূত চাপে। দাও, ঠান্ডাই মেরে দিই।

কিন্তু মুগ্ধ হয়ে দেখার মতো ছিল তার হাতের কাজ। মাস খানেকের মাথায় যখন সিংহাসনটা শেষ হল তখন যে দেখে সেই দশমুখে তারিফ করে। সিংহাসন তো নয়, যেন একখানা মন্দির। তার সর্ব অঙ্গে কারুকার্য, পনেরো হাজার টাকার বরাত ছিল।

গিন্নিমা খুশি হয়ে আরও হাজার টাকা দিয়ে বলল, তোমার হাতের কাজ যখন এতই ভালো, তাহলে আমাকে বাবা আরও কিছু আসবাব করে দাও। ইংলিশ খাট আমার বড্ড ন্যাড়া ন্যাড়া লাগে। আমাকে আগের দিনের মতো খুব কারুকাজ করা একখানা পালঙ্ক করে দাও। সঙ্গে ম্যাচিং টেবিল, বুককেস।

দুলাল সবই করে দিল। সেগুলোও হল দেখার মতোই। তার দুঃখ নিজের দোকান নেই, ঘুরে ঘুরে কাজ করতে হয়। মানিকতলার এক ফার্নিচারের দোকানে দুলাল চুক্তিমতো কাজ করে দেয়। সেই দোকানেই রাতে থাকে।

গিন্নিমা একদিন তাকে বললেন, আমার আউট হাউসটা ফাঁকা পড়ে আছে। সেখানে থাকতে পারিস। বদলে আমার বাইরের ফাইফরমাশ খেটে দিস, বাজার করে দিস।

ছয়মাস হল দুলাল আউট হাউসে আছে। সকালে বাগানে জল দেয়, দরকার হলে দোকানপাটে গিয়ে দরকারি জিনিস এনে দেয়।

বেলা এগারোটা বারোটায় বেরোয়, রাত দশটা সাড়ে দশটায় ফেরে। এ বাড়ির দু-দুটো গাড়ি সেই  ধোয়ামোছা করে। তা ছাড়া সে ইলেকট্রিকের কাজ জানে, জামাকাপড় ইস্তিরি করতে পারে, প্লাম্বিং করতে পারে। তা ছাড়া বাড়ির একটা পাহারার কাজও হয়।

গিন্নিমা একদিন পিয়ালিকে বলল, হ্যা, রে, দুলালকে তোর পছন্দ হয়?

পিয়ালি ভিতরে ভিতরে শিউরে উঠল আতঙ্কে। বলল, ও কী কথা মা?

কেন রে, খারাপ কী বললুম বল তো! সেও তো শুনি বাদা অঞ্চলের ছেলে। তোর সঙ্গে তো দিব্যি মানায়।

পিয়ালির মুখ শুকিয়ে গেল। বলল, তাই কি হয়?

কেন রে, তোর কি বিয়ের বয়স হয়নি? আমার তো ইচ্ছে তোরা দুটিতে আমার কাছেই থাক। তুই যেমন আমার কাজ করছিস তেমনি করবি। দুলালকে যত্নআত্তি করবি। বেচারার তো শুনেছি মা-বাপ নেই। হাতের কাজই ভরসা। দেখবি, একদিন ও বেশ উন্নতি করবে। পছন্দ নয় কেন রে?

পিয়ালির মনে হচ্ছিল, এ কথা শোনাও পাপ হচ্ছে। সিঁদুর লুকিয়ে কাজে ঢুকেছে বটে, কিন্তু তা বলে বিয়েটা তো আর মিথ্যে হয়ে যায়নি! সে কিছুই বলতে পারল না। তবে ভয়ে বড্ড গুটিয়ে গেল। বুকের মধ্যে গুড়গুড় করতে লাগল তার।

গিন্নিমা বলল, তোর চেহারাখানা ভালো, মনে হয় দুলালেরও তোকে মনে ধরেছে। সে তো ফচকে ছেলে নয়! চেহারায়, বয়সে সব দিক দিয়েই তো তোদের মানায়। দুলালটাকে যদি বেঁধে ফেলতে পারিস তাহলে তোরও ভবিষ্যতের ভাবনা থাকবে না। তোদের তো আরও অল্প বয়সেই বিয়ে হয়, তবে ওরকম করছিস কেন?

পিয়ালি পালাতে পারলে বাঁচে। রাতে সে প্যাসেজের বিছানায় শুয়ে বালিশে মুখ গুঁজে খুব কাঁদল। এসব কেন হচ্ছে? তার কি উচিত হবে শ্রীপতির কাছে ফিরে যাওয়া? কিন্তু তাই বা হবে কী করে? এ বাড়ির সুখ আরাম ছেড়ে সে কি গাঁয়ে গিয়ে থাকতে পারবে এখন? মাথাটা বড্ড গরম হল তার। অনেক রাত পর্যন্ত এপাশ ওপাশ করল, ঘুম হল না ভালো করে।

পরদিন সকালেই দুলালের সঙ্গে নীচে দেখা। পিয়ালি দরজায় গুঁজে রাখা খবরের কাগজ আনতে গিয়েছিল।

মুখোমুখি হতেই দুলাল তার বেজায় সুন্দর হাসিটা হেসে বলল, তোমার মুখটা অমন শুকনো কেন?

এমনি।

একটা কথা কইব তোমাকে?

শক্ত হয়ে সিঁটিয়ে গিয়ে সে বলল, বলো।

এ বাড়ির মা তোমাকে কিছু বলেছে? পিয়ালি মুখ নামিয়ে চুপ করে রইল।

দুলাল খুব সরল মুখে বলল, আমার চালচুলো নেই বটে, বাপের কাছ থেকে যেটুকু হাতের কাজ শিখেছি তাই ভরসা। বাদায় একখানা টিনের ঘর আছে আর দু-বিঘে জমি, কিন্তু তার তিনজন ভাগিদার। সব বললুম তোমাকে, কিছু লুকোছাপা নেই।

পিয়ালি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, বিয়ের কথাটা কে তুলল? তুমি?

দুলাল ফের হাসল। বলল, না গো, আমি তুলিনি। ইচ্ছে ছিল আগে একখানা দোকান টোকান দিয়ে বসি, তারপর সংসার করার কথা ভাবব। এখন টাকা জমাচ্ছি। তবে এ বাড়ির মা যখন বলল, হ্যাঁ রে দুলাল, পিয়ালিকে বিয়ে করবি, তখন শুনে আমার মন্দ লাগল না। তুমি একটা বেশ মেয়ে।

পিয়ালি একবার চোখ তুলে তাকাল দুলালের দিকে। দাঁড়িয়ে শুধু হাসছে, ওর হাসিটা বরাবর ভালো লাগে পিয়ালির। সোজা সরল মানুষ, বিভোর হয়ে কাজ করে শুধু। সংসারের ঘোরপ্যাঁচ তেমন জানে না। শ্রীপতির সঙ্গে খানিকটা যেন মিলও আছে। তফাত হল শ্রীপতির তেমন আলাদা গুণ নেই।

পিয়ালি ঠোঁটটা কামড়ে বলল, আমার এখন ওসব নিয়ে ভাববার সময় নেই।

দুলাল একটু যেন থতিয়ে গিয়ে বলল, রাগ হল নাকি?

না, রাগ নয়। আমার তো মনে হয়, এই বেশ আছি।

তা তো ঠিকই। কিন্তু এরকম ভাবে তো সারাজীবন কাটবে না।

মেয়েরা কি একা একা জীবন কাটাতে পারে?

আমার কথা ভেবে ঘুম হচ্ছে না বুঝি?

সত্যি কথা বলব?

আবার কী কথা?

তুমি হলে বড়ো ভালো হয়। তুমি বড়ো সাব্যস্তের মেয়ে।

তার মানে কী?

আমার মা বলত, সাব্যস্ত মানে সব দিকে নজর, বুদ্ধি-বিবেচনা এই সব আর কী? বাড়ির মাও বলেন, পিয়ালি শুধু গতরে খাটে না, বুদ্ধিও খাটায়।

ঝি হিসেবে ভালো, বউ হিসেবে ভালো কিনা তা কে বলবে?

এটাও তো বেশ বুদ্ধির কথা বললে! আমি কেমন বর হয়ে দাঁড়াব তা কি আমিই জানি? শুধু মনে হয়, আমার পিছনে একটা আপনজন কেউ থাকলে বড়ো ভালো হত। শুধু মেয়েমানুষ নয় কিন্তু, আপনজন, নিজের জন। বুঝলে!

পিয়ালি বুঝল। কিন্তু রাতে ফের চুপি চুপি কাঁদল, ভাবল। ঠিক বটে তাদের সমাজে স্বামী-স্ত্রীর ছাড়ান কাটান আকছার হয়।

কেউ তো আর তা নিয়ে আইন আদালত করে না। তবে বদনাম হবে একটু। কিন্তু কথা সেটা নয়। কথা হল, তার ভিতরে একটা দোটানা দেখা দিয়েছে।

তিন-চারদিন পরেই একদিন বেলা দশটায় শ্রীপতি এসে হাজির।

তাকে দেখে পিয়ালির যে কী হল, চোখের দিকে মোটেই তাকাতে পারে না। শ্রীপতি কোনো দাবি-দাওয়া নিয়ে আসে না, সে জানে। কোনোদিন একটা পয়সা চায়নি তার কাছে, টেনে নিয়ে যেতে চায়নি গাঁয়ে। বরং ভারি লজ্জা আর বোকা-বোকা মুখ করে ভয়ে ভয়ে দু চারটে কথা বলেই চলে যায়। গা ছোঁয়ারও চেষ্টা করে না। পিয়ালি ভালো করে কথাই কইল না সেদিন। তাড়াতাড়ি দুটো রুটি খাইয়ে, ‘কাজ আছে’ বলে বিদায় করে দিল।

দোটানা ভাবটা কয়দিন ছিঁড়ে খাচ্ছিল তাকে। হ্যাঁ বটে, শরীর, মন সবকিছুই একজন কাউকে লতিয়ে নিয়ে বেড়ে উঠতে চায়।

দুলালকে বিয়ে করলে তার দু দিক রক্ষা হয়। এ বাড়িতে থাকা এবং সংসার ধর্ম। তার মন ধীরে ধীরে, খুব ধীরে ধীরে দুলালের দিকে ঝুঁকে পড়ছে, সে বুঝতে পারছিল। শ্রীপতি অশান্তি করবে না, সে জানে। জোর জবরদস্তি করা বা এসে চেঁচামেচি করে হাল্লাচিল্লা ফেলে দেওয়ার লোকও সে নয়। তবে শ্রীপতির কথা জানাজানি হবে, এটাও ঠিক। ব্যাপারটা দুলালকে একদিন বুঝিয়ে বলতে হবে।

তবে তার ভয়-ভয় করছে। মন কু গাইছে। কেমন পাপের গন্ধ পাচ্ছে সে।

নীচের তলায় একজোড়া স্বামী-স্ত্রী ভাড়া ছিল এতকাল। তারা সারাদিন বাসায় থাকেই না। সকালে বেরোয়, অনেক রাতে আলাদা আলাদা ফেরে।

মেয়েটা নাকি খবরের কাগজে চাকরি করে, ছেলেটা কোনো কোম্পানিতে। একদিন রাতে তাদের তুমুল ঝগড়া লাগল। চেঁচামেচি গভীর রাতে দোতলাতেও পৌঁছে গিয়েছিল। শুনে চুপি চুপি নেমে এসেছিল সে আর প্রমিতা। কী গালাগাল যে করছিল দুজনে দুজনকে। ইংরিজিতে, বাংলায়। তখনই জানা গেল, তারা মোটে স্বামী-স্ত্রীই নয়। বিয়ে-টিয়ে হয়নি। একসঙ্গে থাকে। সেই রাতেই মেয়েটা চলে গেল।

চলবে

 

মনসা মঙ্গল (পর্ব এক)
মনসা মঙ্গল (পর্ব দুই)

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top