সিডনী শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


প্রাণহানী ঠেকাতে বাংলাদেশে করোনার ওষুধ ‘রেমডেসিভির’ উৎপাদন শুরু


প্রকাশিত:
৯ মে ২০২০ ২০:২৫

আপডেট:
১৮ মে ২০২৪ ১৩:৪০

ফাইল ছবি

 

প্রভাত ফেরী: স্বাভাবিকভাবে প্রাথমিক পরীক্ষায় উৎসাহব্যঞ্জক ফল পাওয়ায় করোনা রোগীদের চিকিৎসায় মার্কিন প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সেস কোম্পানির তৈরি এই ওষুধ সারাবিশ্বে সাড়া ফেলে। এসকেএফ-ই বিশ্বে প্রথম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, যারা জেনেরিক (মূল বা গোত্র) রেমডেসিভির উৎপাদন করতে সক্ষম হলো। এসকেএফের উৎপাদন করা রেমডেসিভিরের বাণিজ্যিক নাম ‘রেমিভির’। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বিধি অনুযায়ী রেমডিসিভির নমুনা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অধীনস্থ ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে জমা দেয়া হবে এবং ছাড়পত্র ও বাজারজাতের অনুমতি পাওয়ার পর কিছু দিনের মধ্যেই ওষুধটি বিতরণ শুরু করবে এসকেএফ।

যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) করোনার ওষুধ হিসেবে রেমডেসিভির ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই উৎপাদন শুরু করল বাংলাদেশ। এরই মধ্যে ওষুধটির উৎপাদন সম্পন্ন করেছে দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। উৎপাদনের সব প্রক্রিয়া শেষ করার পর গতকাল শুক্রবার সকালে শুরু হয়েছে বাজারজাত করার প্রস্তুতি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী সপ্তাহেই ইনসেপ্টা এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসও রেমডেসিভির উৎপাদনে যাচ্ছে। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসহ আরো সাতটি বাংলাদেশি ওষুধ কম্পানি এই ওষুধ উৎপাদনের সরকারি অনুমতি পেয়েছে।

এসকেএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমরা দেশবাসীকে এই সুখবর দিতে চাই যে, বিশ্বে করোনার একমাত্র কার্যকর ওষুধ বলে স্বীকৃত জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদনের সব ধাপ আমরা সম্পন্ন করেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ঔষধ প্রশাসন গত মার্চ মাসে ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদনের পরই আমাদের ফর্মুলেশন বিজ্ঞানীরা মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে রেমডেসিভির নিয়ে কাজ শুরু করেন। দুই মাস ধরে এসকেএফের কর্মীদের নিরলস পরিশ্রমের ফলে এত কম সময়ে এটা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। ওষুধের মূল উপাদান সরবরাহকারীদের সঙ্গে চুক্তি করে পর্যাপ্ত কাঁচামালের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করেছি আমরা।’

এদিকে বাংলাদেশ ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, ‘আপাতত আমরা সাতটি কম্পানিকে রেমডেসিভির রপ্তানি করার অনুমতি দেব না। প্রথমত, তাদেরকে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করতে হবে। এরপর রপ্তানির বিষয়টি আমরা বিবেচনা করব।’

বেক্সিমকোর চিফ অপারেটিং অফিসার রব্বুর রেজা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্সকে বলেছেন, বেক্সিমকো এই মাসেই ওষুধ উৎপাদনে যাচ্ছে। আর প্রথমেই সরবরাহ করা হবে দেশে। মানুষের শিরায় প্রবেশ করিয়ে এই ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। প্রতি ডোজ ওষুধের দাম পড়বে পাঁচ-ছয় হাজার টাকা। আর গুরুতর অসুস্থ রোগীদের মোট পাঁচ থেকে ১১ ডোজ প্রয়োজন হতে পারে। রোগের তীব্রতার ওপর নির্ভর করবে রোগীর কতটুকু ওষুধ প্রয়োজন হবে।

ইনস্টিটিউট ফর ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক রিভিউ (আইসিইআর) কোনো ওষুধের কার্যকারিতার ভিত্তিতে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে। সংস্থাটি বলছে, ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় রেমডেসিভির ভালো কার্যকারিতা দেখালে ১০ দিনের কোর্সের দাম পড়বে সর্বোচ্চ চার হাজার ৫০০ ডলার বা তিন লাখ ৮২ হাজার টাকা। তবে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে দাম এতটা হবে না।

 

 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top