সিডনী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


ঢাকা সিটি নির্বাচনে প্রচারণার শেষ দিন আজ


প্রকাশিত:
৩০ জানুয়ারী ২০২০ ২৩:০০

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৫০

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: আর মাত্র এক দিন পরেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। নতুন দুই নগরপিতা নির্বাচনে প্রস্তুত ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন ভোটার। প্রস্তুত রয়েছে ২ হাজার ৪৬৮টি ভোটকেন্দ্রও। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে ভোটগ্রহণের সরঞ্জামও। পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনেরও (ইভিএম)। টান টান উত্তেজনার প্রচারণাও শেষ হচ্ছে। এখন অপেক্ষা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসার। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নির্বাচনকে ঘিরে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের আশা বড় কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই পরবর্তী নগরপিতা নির্বাচন সম্পন্ন হবে। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের অভিযোগ থাকলেও ভোট উৎসবের মাধ্যমে এই দ্বন্দ্ব শেষ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে রাজধানী জুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) সাধারণ ওয়ার্ডের সংখ্যা ৫৪টি। রয়েছে ১৮টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড। এই সিটিতে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ৩১৮টি। ভোটকক্ষ ৭ হাজার ৮৪৬টি। অস্থায়ী কোনো ভোটকেন্দ্র না থাকলেও অস্থায়ী ভোটকক্ষ রয়েছে ৭৫৪টি। আর এই সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ এবং নারী ভোটার ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন।

অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) সাধারণ ওয়ার্ডের সংখ্যা ৭৫টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ২৫টি। এই সিটিতে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ১৫০টি, ভোটকক্ষ ৬ হাজার ৫৮৮টি। অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র না থাকলেও অস্থায়ী ভোটকক্ষের সংখ্যা ৮৭৬টি। এই সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ ও নারী ভোটার ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন।

এই কেন্দ্রগুলোর প্রায় সবগুলোই সিসিটিভির আওতায় রাখার ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শুধু ভোটের দিন নয়, ভোটের আগের দিন অর্থাৎ আগামীকাল থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে ভোটের দিন, মক ভোটের দিনসহ মক ভোটের দিনও ক্যামেরায় প্রত্যেক কেন্দ্রের চিত্র ধারণ করা হবে। ভোটকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যাসহ বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে বিদ্যমান সিসিটিভি ক্যামেরা মক ভোটিংয়ের দিন, নির্বাচনের আগের দিন ও নির্বাচনের দিন ব্যবহার করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। শুধু তাই নয়, সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহারের বিষয়ে সার্বিক সমন্বয় ও সহায়তার জন্য ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও ঢাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বুধবার নির্বাচনি প্রচারণার একেবারে শেষ মুহূর্তে প্রার্থীদের জমজমাট প্রচারণায় মুখর ছিল নগরী। দক্ষিণের আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এদিন নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণার পাশাপাশি দিনভর চালিয়েছেন গণসংযোগ। তিনি ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা ও উন্নত ঢাকা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, ডিএসসিসি হবে বাংলাদেশে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথম দুর্নীতিমুক্ত সংস্থা।

একই দিন নির্বাচনি প্রচারণার অংশ হিসেবে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এই সিটির বিএনপি সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেন, ধানের শীষের পক্ষে একটি গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি যে নির্বাচন হবে সেখানে মুক্তির বিজয় পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা প্রচারণার প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছি। প্রচার-প্রচারণায় গিয়ে আমরা নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তবে প্রার্থী হিসেবে আমি আর অভিযোগের দিকে না গিয়ে ভোটারদের বলব আপনারা নির্ভয়ে সাহস নিয়ে ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। অনেক জায়গা থেকে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা পেলেও কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত জয় আমাদেরই হবে।

এদিন গণসংযোগে নেমে ঢাকা উত্তরের আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নির্বাচনি গণসংযোগ চালান। এ সময় রাজধানীর মহাখালীর শেখ ফজলে রাব্বী পার্কের সামনে এক পথসভায় ভোটার ও কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজ আমি আমার পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি। এরা আমার রক্তের ভাই-বোন, আর আপনারা হচ্ছেন আমার আত্মার ভাই-বোন। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে কর্মী-সমর্থকদের বিপুল উপস্থিতি দেখে তিনি বলেন, আজ এখানে আমার বড়ভাই, বোন, ভাগ্নে, ভাগ্নি, নাতি-নাতনিসহ আমার স্ত্রী-মেয়ে সবাই এসেছে, আপনাদের কাছে ভোট চাইতে। আমরা ১১ ভাই-বোন। এই ভাই-বোনদের ভালোবাসায় আমি এগিয়ে যাই। আমাদের পরিবারেই ৩ থেকে ৪ হাজার ভোট আছে। এই পরিবার আমাকে দিয়েছে গার্মেন্টসের দায়িত্ব। এ রক্তের ভাই-বোন আর আত্মার ভাই-বোন সবাই আজ এক হয়ে এগিয়ে এসেছে।

একই দাবি করেন এই সিটির বিএনপি সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল। গণসংযোগে ভোটারদের উপস্থিতি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি উল্লেখ করে তাবিথ বলেন, ভোটারদের গণজোয়ার বলছে, ধানের শীষের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর শাহাজাদপুর বাসস্ট্যান্ডে গণসংযোগ চালানোর সময় তিনি বলেন, যেভাবে ভোটারদের সাড়া পাচ্ছি তাতে করে ধানের শীষের বিজয় ঠেকানো যাবে না। বিজয়ী হওয়ার জন্য সবধরনের প্রস্তুতি, প্ল্যানিং, স্ট্র্যাটেজি আমরা নিয়েছি। আমরা ভোটকেন্দ্রে যাব, আমাদের পোলিং এজেন্ট যাবে, প্রার্থীরা যাবে। তবে ভোটের পরিবেশ নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে।


বিষয়: ঢাকা


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top