সিডনী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


প্রচার-প্রচারণা শেষ, আগামীকাল ঢাকার দুই সিটিতে নির্বাচন


প্রকাশিত:
৩১ জানুয়ারী ২০২০ ২২:২০

আপডেট:
১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:৫০

ছবি: সংগৃহীত

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: আগামীকাল ঢাকার দুই সিটিতে নির্বাচন। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে একই সঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। আর শেষ হবে বিকাল চারটায়। এবার প্রথম সব কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে নবীন ও প্রবীণ ভোটারদের মাঝে একটা অন্যরকম আবেগ কাজ করছে। এ উপলক্ষে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। সবমিলে ভোটের দিন উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় থাকবে বলে আশা করছেন প্রার্থীরা। এদিন প্রত্যেক মেয়রপ্রার্থী ছাড়াও কাউন্সিলররা নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকার কেন্দ্রে ভোট দেবেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনিপ বড় দুই দলের প্রার্থীদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী পদে দুই দলই তাদের প্রার্থী দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। আজ থেকে রাত ১২টার পর থেকে ভোটের দিন সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এবার ইভিএমের কারিগরি সহায়তায় প্রতি ভোটকেন্দ্রে দুজন করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য নিয়োগ থাকবেন। এবার দুই সিটি নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ইতোমধ্যে ৬৫ প্লাটুন বিজিবি মাঠে নেমেছে। তারা বৃহস্পতিকার থেকে নামলেও ভোটের আগে ও পরে মিলে ৪ দিন দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া দুই সিটিতে আরও ৫ প্লাটুন করে মোট ১০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে মোতায়েন থাকবে। তাদের পাশাপাশি মাঠে থাকছেন পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা।

থাকবে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। তারা মাঠে টহল দেবেন। এ ছাড়াও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা ডিউটি করবেন। সবমিলে এবারের নির্বাচনে দুই সিটিতে সব বাহিনীর ৫০ হাজারের মতো সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এবার নিরাপত্তার স্বার্থে প্রত্যেকটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ১৮ জন করে নিরাপত্তা কর্মী থাকবে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন ১০ ধরনের পরিবহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মোটরযান অধ্যাদেশ অনুযায়ী সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে জরুরি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। গত মঙ্গলবার বিআরটিএ পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) একেএম মাসুদুর রহমানের সই করা জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

বৃহস্পতিবার বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নিজদের জনসমর্থন জানান দিতে গণমিছিল করেছে। তারা শেষ দিনের প্রচারণায় ছুটেছেন নগরীর বিভিন্ন অলিগলি ও বাসা বাড়িতে। এবার দুই সিটির নগর পিতা কে হবে তা নিয়ে চলছে টানটান উত্তেজনা। নগর পিতা হওয়ার জন্য লড়ছেন ১৩ জন প্রার্থী। তার মধ্যে দক্ষিণে ৭ এবং উত্তরে ৬ জন। এ ছাড়াও কয়েক শতাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী তো আছে। তাদের পাশাপাশি আছে সংরক্ষিত মহিলা নারী কাউন্সিলরের পদ। এবার নগরীতে ভোটের গরম হাওয়া বইলেও তেমন সংঘর্ষের ঘটনা ছিল না।

গতবারের মতো এবারও দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা সিটি নির্বাচন। দেশের বড় দুই দলের মেয়র ও কাউন্সলর প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তবে তারা নগরকে সুন্দর ও পরিবেশযোগ্য করার জন্য নানা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ঝরিয়েছেন নির্বাচনি প্রচারণায়। সবমিলে কারও প্রতিশ্রুতিতে তেমন পার্থক্য ছিল না। এবার বড় দুই রাজনৈতিক দলের চার মেয়রপ্রার্থীর প্রতিই গণমাধ্যমের আগ্রহটা বেশি ছিল। এ কারণে তারা কি ধরনের ইশতেহার ঘোষণা করেছেন তা নিয়ে শুরু থেকে ছিল নানা
পর্যবেক্ষণ।

সবমিলে চার মেয়রপ্রার্থী শেষদিকে তাদের ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। তাদের ইশতেহারে নগরীর নানা সমস্যার পাশাপাশি মশা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাল দখলমুক্ত করা, নগরভবনকে দালাল ও দুর্নীতি মুক্ত করার কথাই প্রত্যেকের ইশতেহারে উঠে এসেছে। বড় দুই দলের চার মেয়রপ্রার্থীর মধ্যে তাবিথ আউয়ালের ‘মশা প্রতিরোধক গাছ’ লাগানো, আতিকুল ইসলাম ও ইশরাক হোসেনের ‘বিদ্যুৎচালিত বাস’ চালু, শেখ ফজলে নূর তাপসের ‘হাঁটার জন্য আলাদা রাস্তা’ তৈরির অঙ্গীকার ইশতেহারে ছিল। চলমান এসব সমস্যা ইশতেহারে ঘোষণা করা হয়েছে কিন্তু তারা নির্বাচিত হওয়ার পর কতটুকু পালন আর বাস্তবায়ন করবেন সে নিয়েও ভোটারদের প্রশ্নের অন্ত নেই।

নগরবাসী এবার মনে করছেন, দুই সিটিতে চার মেয়রপ্রার্থীই শিক্ষিত ও ভালো পরিবার থেকে আসা। তারা নির্বাচিত হলে নগরীর সমস্যাগুলো ভালো সমাধান হবে এবং তারা নগরবাসীর জন্য ভালো কিছু করবেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার নির্বাচনি প্রচারণার শেষ দিনে প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। ভোটের দিন কি হবে তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক। তিনি বলেছেন, বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্র দখল করতে, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে জেলা কমিটি থেকে ঢাকায় লোক পাঠাচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, ভোটের দিন কি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর গোপীবাগে নিজ বাড়ির সামনে থেকে প্রচারণা শুরুর আগমুহূর্তে তিনি এ অভিযোগ করেন।
অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের দক্ষিণের মেয়রপ্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের অভিযোগ, বিএনপি ১৭০টি কেন্দ্র দখল করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। এ জন্য তারা সন্ত্রাসী ভাড়াও করেছেন। তবে বিষয়টিকে একেবারেই অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ইশরাক হোসেন।


বিষয়: ঢাকা


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top