সিডনী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


করোনা ভাইরাস আতঙ্ক: বিমানবন্দরে সব দেশের যাত্রীদেরই পরীক্ষা করা হবে


প্রকাশিত:
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৮:৫১

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:১৭

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: চীনের উহান থেকে আসা ৩১২ বাংলাদেশির মধ্যে আশকোনা হজ ক্যাম্পে থাকা ৩০১ জনের সবাই সুস্থ আছেন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন থাকা ১১ জনের অবস্থাও ভালো রয়েছে।

করোনাভাইরাস আতঙ্কে ঢাকায় মাস্ক ব্যবহার বেড়ে গেলেও তার প্রয়োজন এখনই দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা। প্রাণ সংহারক করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এতদিন শুধু চীন থেকে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষা করা হলেও এখন তার পরিসর বাড়ানো হচ্ছে। বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে যে কেউ বাংলাদেশে ঢুকলে বন্দরে স্ক্রিনিংয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। শনিবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

চীন থেকে ইতোমধ্যে দুই ডজনেরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এতে মৃতের সংখ্যা সাতশ ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন দেশ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্যদিকে চীনের হুবেই প্রদেশের ইচাং সিটিতে আটকে পড়া শিক্ষার্থীরা দেশে ফিরতে চায়। এ জন্য তারা বাংলাদেশ দূতাবাসের সাহায্য কামনা করেছেন। তারা সেখানে ঠিকমতো খাবার পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন। যে খাবার দেওয়া হচ্ছে তা অপ্রতুল ও সবার হচ্ছে না বলে দাবি তাদের। চীনে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ দূতাবাস সবধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ্জামান।

এক ভিডিও বার্তায় তিনি গণমাধ্যমকে জানান, বেইজিংয়ের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই তা সম্ভব নয়। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের কারণে চীনে নানা বাধা বিঘ্ন থাকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, চীন ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশে স্থানীয়ভাবে একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে বিমানবন্দরে আসা সবগুলো বিমানকেই স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানারের মধ্য দিয়ে যেতে হবে যাত্রীদের।

বাংলাদেশের সবগুলো বন্দরে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং করার সক্ষমতা স্বাস্থ্য অধিদফতরের আছে কি না- এ প্রশ্নে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, বিভিন্ন এয়ারলাইন্স, বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সহযোগিতায় এ কাজটি করা হচ্ছে। আমরা এয়ারলাইন্সগুলোর সহযোগিতা নিচ্ছি। ফ্লাইটের মধ্যে যে ডিক্লারেশন ফর্ম দেওয়া হয়, তাতে এয়ারলাইন্সগুলো সহায়তা করে। আমরা সম্মিলিতভাবেই করছি। এখানে এয়ারলাইন্সগুলোর সহযোগিতা খুবই জরুরি। যে বন্দরে থার্মাল স্ক্যানার নেই, সেখানে আমরা হ্যান্ডহেল্ড স্ক্যানার দিয়েছি। থার্মাল স্ক্যানার এবং হাত দিয়ে যেটা করা হয় দুটোর কার্যক্রম একই।

থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষায় কোনো যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি পাওয়া গেলে তাকে প্রথমে বিমানবন্দরের পর্যবেক্ষণ কক্ষে রাখা হচ্ছে। পরে প্রয়োজনে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চীন থেকে কেউ জ্বর না নিয়ে এলেও আসার ১৪ দিনের মধ্যে যদি কারও জ্বর আসে, তাদের আইইডিসিআরে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত ৮ হাজার ৪৮৪ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলেও কারও দেহে এখনও করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি।

বাগেরহাটে কাঁকড়া চাষিরা বিপাকে: চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সে দেশে কাঁকড়া রফতানি বন্ধ হয়ে বাগেরহাটের খামারিরা বিপাকে পড়েছেন। রফতানি মৌসুমের মাঝপথে ২৩ জানুয়ারি থেকে কাঁকড়া রফতানি বন্ধ রয়েছে। আরও কিছুদিন বন্ধ থাকলে কাঁকড়ার খামার হুমকির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন অনেক খামারি।

অতিরিক্ত জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অমল কান্তি রায় বলেন, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই তিন মাসে চীনে নানা উৎসব থাকে। এ সময় বিপুল পরিমাণ কাঁকড়া সে দেশে রফতানি হয়। মোট রফতানির ৭০ শতাংশেরও বেশি কাঁকড়া চীনের বাজারে আমরা দিয়ে থাকি। এই ভরা মৌসুমে চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় তারা কাঁকড়া নিচ্ছে না। তাই ২৩ জানুয়ারি থেকে সরকার কাঁকড়া রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা না উঠলে এখানকার চাষিদের দারুণভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। মোট রফতানির ৩০ শতাংশেরও বেশি কাঁকড়া বাগেরহাটে চাষ হয় বলে তিনি জানান।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top