সিডনী শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


বাংলাদেশে বাস-ট্রেন-লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা


প্রকাশিত:
২৪ মার্চ ২০২০ ২০:৪৮

আপডেট:
৪ মে ২০২৪ ০২:১৯

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী: প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে সারাদেশে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন ব্যবস্থা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রেল, সড়ক ও নৌচলাচল। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে আজ থেকে সব লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল বন্ধ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আগামী ২৬ মার্চ থেকে সকল ট্রেনের টিকিট বিক্রির বন্ধের ঘোষণা আসতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ আলম।

রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান বলেন, করোনা পরিস্থিতির জন্য এর আগে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট ১০ দিনের পরিবর্তে ৫ দিন করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ঢাকা কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন। এখন মেইল ও লোকাল ট্রেনও বন্ধ করা হলো। রেলওয়ের ব্যাপারে সরকার যদি আরও সিদ্ধান্ত নেয় সেগুলোও জানিয়ে দেয়া হবে।

একইসঙ্গে আজ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে যাত্রীবাহী নৌচলাচলও বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। আজ বিকেল থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আজ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে লঞ্চ মালিকরাও একমত হয়েছেন। যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকবে। করোনাভাইরাস সংক্রামণরোধে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

অপরদিকে আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধ (লকডাউন) থাকবে। মঙ্গলবার সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও বার্তায় একথা জানান। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার দেশবাসী, জনগণ, যাত্রীসাধারণ, মালিক-শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছে যে, আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে গণপরিবহন লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ওষুধ, জরুরি সেবা, জ্বালানি, পচনশীল পণ্য পরিবহণ-এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

পণ্যবাহী যানবাহনে কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না বলেও ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করা হয়।

এছাড়াও করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। গত সোমবার (২৩ মার্চ) সচিবালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের সরকারি ছুটি এবং ২৭ ও ২৮ মার্চ সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় মূলত ২৬ মার্চ থেকেই সারাদেশের সরকারি অফিসগুলো বন্ধ থাকবে। এছাড়া ৩ ও ৪ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে সরকারি অফিসগুলো খোলা থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে প্রশাসনকে সহায়তায় নিয়োজিত হবে সেনাবাহিনী। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে তারা জেলা ও বিভাগীয় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাব্যবস্থা, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবে।’

এদিকে আজ মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধের কার্যক্রমে দেশের সব জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসে মৃত্যুর মিছিল শুধুই দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতি মিনিটে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৯৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। আর প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৮১ হাজার ৬৪৩ এবং মারা গেছে ১৬ হাজার ৫৫৮ জন। অপরদিকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১ লাখ ২ হাজার ৬৯ জন।

বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিন দিন এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সর্বশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন তিনজন।

করোনার বিস্তাররোধে এরই মধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। চারটি দেশ ও অঞ্চল ছাড়া সব দেশ থেকেই যাত্রী আসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশের সব বিপণিবিতান। এছাড়া মুলতবি করা হয়েছে জামিন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি ছাড়া নিম্ন আদালতের বিচারিক কাজ। এমনকি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top