সিডনী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

ঝর্ণাধারার সঙ্গীত (অষ্টম পর্ব) : সেলিনা হোসেন


প্রকাশিত:
৪ মার্চ ২০২১ ২০:২১

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ০৮:৩২

 

- আতিকুর রহমান চোখ তুলে তাকিয়ে বলে, কি রে মা? কিছু বলবি?
- মা বলেছে, তুমি কি করছ দেখতে। চা খাবে?
- এখন চা অনিস না।
- কি পড়ছ বাবা?
- এই ম্যাগাজিনে পড়ছি সিলেটের একটি জায়গার বর্ণনা। দেখ কি সুন্দর ছবি ছেপেছে?
- ওহ বাবা, কি অপূর্ব। আমরা কবে যাব বাবা?
- যাব রে একসময়। আমি দিনক্ষণ ঠিক করব। তুই তো বন্ধুদের সঙ্গে বান্দারবান যাচ্ছিস। ঘুরে আয় তুই, তারপর দেখব।
- জায়গাটির নাম কি বাবা?
- তুরং ছড়া। কি লিখেছে আমি পড়ছি শোন, ‘অপার সৌন্দর্যের তুরং ছড়ার ধবধবে সাদা পানি, সবুজ বৃক্ষ, লালচে বাদামিরঙা পাথর সব মিলিয়ে এক অন্য জগৎ। পানির স্বচ্ছতা এতটাই যে, হাঁটু সমান পানির নিচের পাথরগুলোও স্পষ্ট দেখা যায়।’
- থাক বাবা, আর পড়তে হবেনা। আমরা যাব। আমাদের মতো করে দেখে আসব। তবে ছবি দেখে মনে হচ্ছে পাহাড়ের নিচে ঝর্ণার পানিতে ভেসে থাকা পাথর আমরা অনেক জায়গায় দেখেছি।
- হ্যাঁ, তা দেখেছি। ঝর্ণাধারা থেকে গড়িয়ে যাওয়া পানি আর পাথর প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য। যত দেখবি, তত মন ভরে যাবে। আবার দেখলে মনে হবে এতো আমার দেখা সৌন্দর্য। যেখানে দেখেছিলাম সেখান থেকে আমার সঙ্গে সঙ্গে এখানে এসেছে।
আশিকা হাসতে হাসতে বলে, তুমি আমার মনের কথা খুব সুন্দর করে বললে বাবা।
আতিকুর রহমান হেসে ওঠে। মনে হয় মেয়ের কথার মধ্যে ঝর্ণাধারার জোয়ার আছে। ও প্রকৃতি দেখে নিজেকে সৌন্দর্যের চেতনায় ভরে তুলেছে।
দুজনের হাসির শব্দ কানে ভরে হামিদা বানু চা-পুডিং নিয়ে ঘরে ঢোকে। টেবিলে রেখে আতিকুরকে বলে, খেয়ে নাও।
- আশিকা খাবে না?
- আমি রান্নাঘরে বসে খেয়েছি বাবা।
আতিকুর হামিদা বানুর দিকে তাকিয়ে বলে, তুমি খাবে না?
- খাব, বিকেলে কিছু না খেলে টায়ার্ড লাগে।
- তাহলে এখানে নিয়ে আস।
- আচ্ছা আনছি।
- মাগো, বাবার চিন্তায় আমাদের ঘুরে বেড়ানোর নতুন জায়গা ভেসে উঠেছে।
- তাই নাকি? কোথায় রে?
- সিলেট।
- যাব রে সিলেট।
- কবে মা?
- ভেবে চিন্তে ঠিক করব। মাসখানেক যাক। কি বলগো তুমি?
- আমিও তাই মনে করি। মাসখানেক-মাসদুয়েক যাক। তারপর গোছগাছ করব।
- আমি আমার পড়ার ঘরে গেলাম বাবা-মা। তোমরা চা-পুডিং খাও।

আশিকা চলে গেলে দুজনে পরস্পরের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টিতে মুগ্ধতা ছড়ায়। 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top